ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
এই অনুষ্ঠানের যে নির্দিষ্ট দিন তার কয়েকদিন আগে সবাই উপোস-এর ব্রত পালন করে এবং এই সময় তারা যৌন মিলনেও অংশগ্রহণ করে না। ২১ জুনের সকালবেলা কাসকোনিয়ান অভিজাতরা আসেন এবং এই অনুষ্ঠানের প্রধান হিসেবে কাজ করেন উইলাক উমা (Willaqu Uma) যাকে খুব উঁচু পর্যায়ের পুরোহিতও বলা হয়। অনুষ্ঠানের এই পর্বটি করা হয় হাউকায়পাতায়।
এটি হল প্লাজার আচার অনুষ্ঠান-এর অংশ। অভিজাতদের বাকি অংশকে নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের কুসিপাতায় (Kusipata) এই অনুষ্ঠান শুরু হবার আগে মালকি (Mallki) বা মহান পূর্বপুরুষদের মমিগুলিকে নিয়ে আসা হয়। ইনকারা বিশ্বাস করে এই মমিরা ভালমত এই অনুষ্ঠান দেখলে সবারই মঙ্গল হয়। এছাড়া সূর্য উদয়ের মুহূর্তে অন্য একটি প্রথাও আছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে ইনকা পুরুষ ও রমণীরা সূর্যদেবতাকে সম্ভাষণ জানায়।
এই সম্ভাষণ জানানোর ভঙ্গিটি হল মুচাএ (“Muchay”)। আঙুলের ডগা দিয়ে চুম্বন এর ইঙ্গিত ছুঁড়ে দেওয়া হয় সূর্যের দিকে। এর পরে সবাই মিলে নীচু স্বরে দেবতাকে উপলক্ষ্য করে গান গায়। এই সঙ্গীত পরিবেশনকে খুব আন্তরিক পবিত্র কাজ বলে মনে করা হয়। শেষের দিকে এই গান অনেকটাই আবেগমথিত হয়ে যায় এবং দূর থেকে অনেকটা কান্নার মত শোনায়। এর পরের প্রথাটিও খুব মজার।
সূর্যের দেবতা বা ইনকা রাজা তার দু’হাতে দুটি সোনার গ্লাস নেন। এই গ্লাস দুটিতে থাকে আখ (Agha) বা ভুট্টার মদজাতীয় পানীয়। ডান হাতে ধরা গ্লাসের মদ একটা সোনার মোড়কের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয় সূর্যমন্দিরের উদ্দেশ্যে। ইনকা রাজা অন্য গ্লাস- এর থেকে এক চুমুক মদ খান এবং বাকি অংশ উপস্থিত অভিজাত মানুষ পান করে। এবং তারপর অন্যান্য সাধারণ মানুষদের কণিকামাত্র ভেবে বিতরণ করা হয়।
এই অনুষ্ঠান বা রীতি প্রথার সঙ্গে অন্য একটি আচার-এর চল আছে। সাধারণত এই সূর্যদেবতার পূজাকে আরও বর্ণময় করে তোলার জন্য উঁচু স্তরের পুরোহিত চমরিগাই (llama) বলি দেবার দায়িত্ব পালন করে। এই গাই-এর রং কালো বা সাদা হতে হবে। একটি ধারালো পবিত্র ছুরি তুমি (Tumi) দিয়ে গাই-বা প্রাণীর বুক চিরে ফেলতে হয়।
(চলবে)