০৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

এশিয়া ও আফ্রিকার নারী কৃষকদের ক্ষমতায়নে ব্র্যাককে রকফেলার ফাউন্ডেশনের সহায়তা

৩ মিলিয়ন ডলারের অনুদান

বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার ৩০ লাখ প্রান্তিক নারী কৃষক ও তাদের পরিবারকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা এবং ক্ষমতায়নে সহায়তা করতে ব্র্যাক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা) অনুদান পেয়েছে রকফেলার ফাউন্ডেশন থেকে।

২০৩০ সালের পরিকল্পনা

এই অনুদান ব্র্যাকের ২০৩০ সালের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবহার হবে। লক্ষ্য হলো নারী কৃষক ও তাদের পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে বের করে আরও স্থিতিশীল ও সহনশীল জীবনে নিয়ে আসা। ব্র্যাক তাদের নিজস্ব কমিউনিটি-ভিত্তিক নকশা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সহায়তাকে কাজে লাগাবে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্যোগ

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই প্রেক্ষাপটে রকফেলার ফাউন্ডেশন এই অনুদান দিয়েছে যাতে ব্র্যাক নতুন উদ্যোগ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার ৩০ লাখ প্রান্তিক নারী কৃষককে আরও টেকসই জীবিকার সুযোগ দিতে পারে।

রকফেলারের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক যা বললেন

রকফেলার ফাউন্ডেশনের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক বলেন, “প্রান্তিক কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি টের পান। আমাদের এই সহায়তার লক্ষ্য তাদের এমন সক্ষম করে তোলা, যাতে তারা শুধু জলবায়ু ধাক্কা সহ্য করতে পারে না, বরং আরও ভালো উপার্জন ও উন্নত জীবনের পথে এগোতে পারে।”

বাংলাদেশে পাইলট প্রকল্প

বাংলাদেশের উপকূলীয় ও খরাপ্রবণ এলাকায় পাইলট প্রকল্প চালু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা সমন্বিত সেবা প্যাকেজ পাবেন, যার মধ্যে থাকবে টেকসই কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, জলবায়ু তথ্য, দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ এবং বাজারে যুক্ত হবার সহায়তা। এই অভিজ্ঞতা পরে আফ্রিকার অন্যান্য দেশে প্রসারিত করা হবে।

ব্র্যাকের মন্তব্য

ব্র্যাকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি মানুষের সম্ভাবনা বিকশিত করার ক্ষমতা আছে। এই অনুদান প্রমাণ করে যে বড় মাপের সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়, যা অনেক মানুষের জীবন বদলাতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “রকফেলার ফাউন্ডেশনের এই সহায়তা স্থানীয় জনগোষ্ঠীভিত্তিক, সাংস্কৃতিকভাবে উপযোগী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন মডেলকে উৎসাহিত করে, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ, সংস্কৃতির সংযোগ ও টেকসই পরিবর্তনের গুরুত্ব রয়েছে।”

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

গ্রামীণ জীবিকা ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিকীকরণ, বৈষম্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষয় দ্বারা হুমকির মুখে। এ প্রেক্ষাপটে ব্র্যাক এই উদ্যোগকে অংশীদারিত্ব ও সমন্বিত সমাধানের একটি মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

রকফেলার ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য এই অনুদানের মাধ্যমে বড় মাপের, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা। ব্র্যাক এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য স্থির করেছে, যা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

ব্র্যাক সম্পর্কে

১৯৭২ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এটি ১৪৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের সঙ্গে কাজ করে তাদের সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক উদ্যোগ, মানবিক সহায়তা, ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার মাধ্যমে ব্র্যাক বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

ব্র্যাক দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশু উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এটি সমাজ-ভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও সমন্বিত সমাধান বাস্তবায়নে বৈশ্বিক নেতৃত্বে রয়েছে।

রকফেলার ফাউন্ডেশন সম্পর্কে

রকফেলার ফাউন্ডেশন একটি প্রভাবশালী দাতব্য সংস্থা, যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানুষের সম্ভাবনা বাড়াতে কাজ করে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শক্তি ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে এটি মানবকল্যাণ ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

এশিয়া ও আফ্রিকার নারী কৃষকদের ক্ষমতায়নে ব্র্যাককে রকফেলার ফাউন্ডেশনের সহায়তা

০৪:৪৯:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

৩ মিলিয়ন ডলারের অনুদান

বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার ৩০ লাখ প্রান্তিক নারী কৃষক ও তাদের পরিবারকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা এবং ক্ষমতায়নে সহায়তা করতে ব্র্যাক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা) অনুদান পেয়েছে রকফেলার ফাউন্ডেশন থেকে।

২০৩০ সালের পরিকল্পনা

এই অনুদান ব্র্যাকের ২০৩০ সালের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবহার হবে। লক্ষ্য হলো নারী কৃষক ও তাদের পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে বের করে আরও স্থিতিশীল ও সহনশীল জীবনে নিয়ে আসা। ব্র্যাক তাদের নিজস্ব কমিউনিটি-ভিত্তিক নকশা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সহায়তাকে কাজে লাগাবে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্যোগ

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই প্রেক্ষাপটে রকফেলার ফাউন্ডেশন এই অনুদান দিয়েছে যাতে ব্র্যাক নতুন উদ্যোগ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার ৩০ লাখ প্রান্তিক নারী কৃষককে আরও টেকসই জীবিকার সুযোগ দিতে পারে।

রকফেলারের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক যা বললেন

রকফেলার ফাউন্ডেশনের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক বলেন, “প্রান্তিক কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি টের পান। আমাদের এই সহায়তার লক্ষ্য তাদের এমন সক্ষম করে তোলা, যাতে তারা শুধু জলবায়ু ধাক্কা সহ্য করতে পারে না, বরং আরও ভালো উপার্জন ও উন্নত জীবনের পথে এগোতে পারে।”

বাংলাদেশে পাইলট প্রকল্প

বাংলাদেশের উপকূলীয় ও খরাপ্রবণ এলাকায় পাইলট প্রকল্প চালু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা সমন্বিত সেবা প্যাকেজ পাবেন, যার মধ্যে থাকবে টেকসই কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, জলবায়ু তথ্য, দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ এবং বাজারে যুক্ত হবার সহায়তা। এই অভিজ্ঞতা পরে আফ্রিকার অন্যান্য দেশে প্রসারিত করা হবে।

ব্র্যাকের মন্তব্য

ব্র্যাকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি মানুষের সম্ভাবনা বিকশিত করার ক্ষমতা আছে। এই অনুদান প্রমাণ করে যে বড় মাপের সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যায়, যা অনেক মানুষের জীবন বদলাতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “রকফেলার ফাউন্ডেশনের এই সহায়তা স্থানীয় জনগোষ্ঠীভিত্তিক, সাংস্কৃতিকভাবে উপযোগী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন মডেলকে উৎসাহিত করে, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ, সংস্কৃতির সংযোগ ও টেকসই পরিবর্তনের গুরুত্ব রয়েছে।”

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

গ্রামীণ জীবিকা ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিকীকরণ, বৈষম্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষয় দ্বারা হুমকির মুখে। এ প্রেক্ষাপটে ব্র্যাক এই উদ্যোগকে অংশীদারিত্ব ও সমন্বিত সমাধানের একটি মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

রকফেলার ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য এই অনুদানের মাধ্যমে বড় মাপের, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা। ব্র্যাক এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য স্থির করেছে, যা প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

ব্র্যাক সম্পর্কে

১৯৭২ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এটি ১৪৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের সঙ্গে কাজ করে তাদের সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক উদ্যোগ, মানবিক সহায়তা, ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার মাধ্যমে ব্র্যাক বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

ব্র্যাক দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশু উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এটি সমাজ-ভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও সমন্বিত সমাধান বাস্তবায়নে বৈশ্বিক নেতৃত্বে রয়েছে।

রকফেলার ফাউন্ডেশন সম্পর্কে

রকফেলার ফাউন্ডেশন একটি প্রভাবশালী দাতব্য সংস্থা, যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে মানুষের সম্ভাবনা বাড়াতে কাজ করে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শক্তি ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে এটি মানবকল্যাণ ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।