০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২২৬)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 17

শ্রী নিখিলনাথ রায়

ফরিয়াদীর সাক্ষীদিগের মধ্যে মোহনপ্রসাদ অভিযোগের প্রথমে নন্দকুমার জাল করিয়াছেন বলিয়া স্পষ্ট জবানবন্দী দেয়। সুতরাং তাহার সম্বন্ধে অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই। কৃষ্ণজীবন আসামী পক্ষ হইতেও’মানিত হওয়ায়, আমরা আসামী- পক্ষীয় সাক্ষীদিগের সাক্ষ্যোল্লেখের সময় তাহার কথা বলিতে চেষ্টা করিব। ফরিয়ার্দী পক্ষের সাক্ষ্য গৃহীত হইলে, আসামীপক্ষের সাক্ষীদিগকে আহ্বান করিবার পূর্ব্বে মহারাজের কৌন্সিলি ফ্যারার সাহেব প্রথমতঃ প্রামাণ্য বিষয় নির্দেশ করিলেন।

তিনি এইরূপ প্রকাশ করিয়া বলেন যে, অঙ্গীকার-পত্রের সাক্ষিদ্বয় মাতাব রায় ও মহম্মদ কমল জীবিত থাকিতে থাকিতেই মোহনপ্রসাদ ইহার বিষয় অবগত হন। বুলাকীদাস, নন্দকুমারকে অঙ্গীকার-পত্রের জন্য যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাও উপস্থা- পিত করা হইবে। গঙ্গাবিষ্ণুর সাক্ষাতে মোহনপ্রসাদ ও পদ্মমোহন যে হিসাবে নাম স্বাক্ষর করিয়াছিল, সেই হিসাবপত্রেও যে অঙ্গীকার-পত্র ও জহরতাদির কথা আছে, তাহাও উপস্থাপিত করিতে চান; বুলাকী- দাসের যে খাতায় জহরতের হিসাব ছিল, তাহা নষ্ট হইয়া গিয়াছে; সুতরাং তাহা উপস্থাপিত করিবার উপায় নাই।

এতদ্ভিন্ন, তিনি জহরত ও অঙ্গী- কার-পত্র সম্বন্ধে নন্দকুমার ও বুলাকীদাসের মধ্যে আরও অনেক পত্রাদি উপস্থাপিত করিতে চান। বুলাকীদাসের হস্তলিখিত পত্রাদি উপস্থাপিত করা হইয়াছিল, কিন্তু তাহাতে তাঁহার নাম বা মোহরযুক্ত না থাকায় আদালত তাহা সাক্ষ্য বলিয়া গ্রহণ করেন নাই। যে সমস্ত প্রধান প্রধান দলিল উপস্থাপিত করা হয়, সে সম্বন্ধে আমরা পরে বলিব। আপাততঃ আসামী পক্ষের কয়েক জন প্রধান সাক্ষীর সাক্ষ্যের বিষয় উল্লেখ করা যাইতেছে। প্রথমতঃ আসামী পক্ষ হইতে তেজরায় নামে একজন সাক্ষীকে আহ্বান করা হয়।

তেজরায় জাতিতে ক্ষত্রিয় ও চুঁচুড়া তাহার জন্মস্থান ছিল। তেজরায় সাক্ষ্য দেয় যে, মাতাব রায় নামে তাহার এক জ্যেষ্ঠভ্রাতা ছিল, এক্ষণে সে মৃত। তাহার ভ্রাতার আদেশানু- যায়ী যে একখানি পত্র তাহার ভ্রাতার মোহরসংযুক্ত করিয়া রূপনারায়ণ চৌধুরীকে লেখা হয়, সে পত্র আদালতে উপস্থিত হইলে, তেজরায় তাহা নিজের লিখিত ও ভ্রাতার মোহরযুক্ত স্বীকার করে। সে ও তাহার ভ্রাতা, সাহেব রায়ের পুত্র ও বঙ্গুলালের পৌত্র; তাহার ভ্রাতা বর্দ্ধমান চাকলার ধনেখালির নিকট বড়াই আদমপুর নামক গ্রামে মাতামহালয়ে জন্মগ্রহণ করে।

 

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২২৬)

১১:০০:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

ফরিয়াদীর সাক্ষীদিগের মধ্যে মোহনপ্রসাদ অভিযোগের প্রথমে নন্দকুমার জাল করিয়াছেন বলিয়া স্পষ্ট জবানবন্দী দেয়। সুতরাং তাহার সম্বন্ধে অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই। কৃষ্ণজীবন আসামী পক্ষ হইতেও’মানিত হওয়ায়, আমরা আসামী- পক্ষীয় সাক্ষীদিগের সাক্ষ্যোল্লেখের সময় তাহার কথা বলিতে চেষ্টা করিব। ফরিয়ার্দী পক্ষের সাক্ষ্য গৃহীত হইলে, আসামীপক্ষের সাক্ষীদিগকে আহ্বান করিবার পূর্ব্বে মহারাজের কৌন্সিলি ফ্যারার সাহেব প্রথমতঃ প্রামাণ্য বিষয় নির্দেশ করিলেন।

তিনি এইরূপ প্রকাশ করিয়া বলেন যে, অঙ্গীকার-পত্রের সাক্ষিদ্বয় মাতাব রায় ও মহম্মদ কমল জীবিত থাকিতে থাকিতেই মোহনপ্রসাদ ইহার বিষয় অবগত হন। বুলাকীদাস, নন্দকুমারকে অঙ্গীকার-পত্রের জন্য যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাও উপস্থা- পিত করা হইবে। গঙ্গাবিষ্ণুর সাক্ষাতে মোহনপ্রসাদ ও পদ্মমোহন যে হিসাবে নাম স্বাক্ষর করিয়াছিল, সেই হিসাবপত্রেও যে অঙ্গীকার-পত্র ও জহরতাদির কথা আছে, তাহাও উপস্থাপিত করিতে চান; বুলাকী- দাসের যে খাতায় জহরতের হিসাব ছিল, তাহা নষ্ট হইয়া গিয়াছে; সুতরাং তাহা উপস্থাপিত করিবার উপায় নাই।

এতদ্ভিন্ন, তিনি জহরত ও অঙ্গী- কার-পত্র সম্বন্ধে নন্দকুমার ও বুলাকীদাসের মধ্যে আরও অনেক পত্রাদি উপস্থাপিত করিতে চান। বুলাকীদাসের হস্তলিখিত পত্রাদি উপস্থাপিত করা হইয়াছিল, কিন্তু তাহাতে তাঁহার নাম বা মোহরযুক্ত না থাকায় আদালত তাহা সাক্ষ্য বলিয়া গ্রহণ করেন নাই। যে সমস্ত প্রধান প্রধান দলিল উপস্থাপিত করা হয়, সে সম্বন্ধে আমরা পরে বলিব। আপাততঃ আসামী পক্ষের কয়েক জন প্রধান সাক্ষীর সাক্ষ্যের বিষয় উল্লেখ করা যাইতেছে। প্রথমতঃ আসামী পক্ষ হইতে তেজরায় নামে একজন সাক্ষীকে আহ্বান করা হয়।

তেজরায় জাতিতে ক্ষত্রিয় ও চুঁচুড়া তাহার জন্মস্থান ছিল। তেজরায় সাক্ষ্য দেয় যে, মাতাব রায় নামে তাহার এক জ্যেষ্ঠভ্রাতা ছিল, এক্ষণে সে মৃত। তাহার ভ্রাতার আদেশানু- যায়ী যে একখানি পত্র তাহার ভ্রাতার মোহরসংযুক্ত করিয়া রূপনারায়ণ চৌধুরীকে লেখা হয়, সে পত্র আদালতে উপস্থিত হইলে, তেজরায় তাহা নিজের লিখিত ও ভ্রাতার মোহরযুক্ত স্বীকার করে। সে ও তাহার ভ্রাতা, সাহেব রায়ের পুত্র ও বঙ্গুলালের পৌত্র; তাহার ভ্রাতা বর্দ্ধমান চাকলার ধনেখালির নিকট বড়াই আদমপুর নামক গ্রামে মাতামহালয়ে জন্মগ্রহণ করে।