০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডোনাল্ড ট্রাম্প: আমেরিকাকে সর্বোচ্চ তেলের মালিক করার স্বপ্ন

  • Sarakhon Report
  • ০৭:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 53

সারাক্ষণ ডেস্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখার জন্য পরিচিত নন, সহজ সূত্র পছন্দ করেন। তার মনোনীত ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট একটি সূত্র দিয়েছেন: “৩-৩-৩”। তিনি চান আমেরিকার ফেডারেল বাজেটের ঘাটতিকে জিডিপির ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা, বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশে উন্নীত করা এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তেলের উৎপাদন দিনে ৩০ লাখ ব্যারেল বাড়িয়ে তোলা।

তেল ও গ্যাস উৎপাদনে নতুন পরিকল্পনা

পরিকল্পনার শেষ অংশটি সবচেয়ে অগ্রসর। ট্রাম্প প্রশাসন আরও ফেডারেল জমি এবং সমুদ্রের ব্লক তেল ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য উন্মুক্ত করবে এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্পের জন্য অনুমোদন দেবে। তিনি একটি “ন্যাশনাল এনার্জি কাউন্সিল” গঠনের পরিকল্পনা করছেন, যা অনুমোদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত সবকিছুতে প্রশাসনিক বাধা দূর করবে।

তেলের উৎপাদন বাড়ানোর এই উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি কয়েকটি লক্ষ্য অর্জন করতে চান: আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, বাজেটের ঘাটতি হ্রাস করা এবং গ্যাস ও তেলের রপ্তানি বাড়ানো। তবে, এই “ড্রিল, বেবি, ড্রিল” নীতিমালা শক্ত বাজার বাস্তবতার মুখোমুখি হবে।

শেল তেলের চ্যালেঞ্জ

যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদন প্রধানত বেসরকারি সংস্থাগুলোর হাতে। ২০২২ সাল থেকে উৎপাদন বাড়লেও, শেল তেল উত্তোলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ঝুঁকি গ্রহণের আগ্রহ কমে গেছে। শেল তেলের উত্তোলন লাভজনক হতে তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৮৯ ডলার হওয়া প্রয়োজন। তবে বর্তমানে এই মূল্য মাত্র ৭০ ডলার।

অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ অনেক বেশি। ওপেকের সদস্য দেশগুলোর রিজার্ভও পর্যাপ্ত রয়েছে। এর পাশাপাশি, বৈদ্যুতিক যানবাহনের ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার কারণে তেলের চাহিদা কমছে। এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।

প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন

গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো অপেক্ষাকৃত সহজ মনে হতে পারে। তবে বাজারের বাস্তবতা ভিন্ন। গ্যাসের বর্তমান মূল্য এবং বাজারে নতুন উৎপাদনের সরবরাহ ভবিষ্যতে এই খাতের বৃদ্ধি সীমিত করবে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

তেলের ও গ্যাসের বাজারে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনেক বাধার সম্মুখীন হবে। তার শুল্ক নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে। এক কথায়, ট্রাম্পের “তেলের রাজা” হওয়ার স্বপ্ন সম্ভবত বাস্তবায়িত হবে না।

উপসংহার

যদিও ট্রাম্পের প্রশাসন শক্তি খাতে বড় পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করছেবাজারের বাস্তবতা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চাহিদা এই প্রচেষ্টাকে সীমাবদ্ধ করে রাখবে। তেলের ক্ষেত্রে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা হয়তো কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প: আমেরিকাকে সর্বোচ্চ তেলের মালিক করার স্বপ্ন

০৭:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সারাক্ষণ ডেস্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দীর্ঘ সময় মনোযোগ ধরে রাখার জন্য পরিচিত নন, সহজ সূত্র পছন্দ করেন। তার মনোনীত ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট একটি সূত্র দিয়েছেন: “৩-৩-৩”। তিনি চান আমেরিকার ফেডারেল বাজেটের ঘাটতিকে জিডিপির ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা, বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশে উন্নীত করা এবং ২০২৮ সালের মধ্যে তেলের উৎপাদন দিনে ৩০ লাখ ব্যারেল বাড়িয়ে তোলা।

তেল ও গ্যাস উৎপাদনে নতুন পরিকল্পনা

পরিকল্পনার শেষ অংশটি সবচেয়ে অগ্রসর। ট্রাম্প প্রশাসন আরও ফেডারেল জমি এবং সমুদ্রের ব্লক তেল ও গ্যাস উত্তোলনের জন্য উন্মুক্ত করবে এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্পের জন্য অনুমোদন দেবে। তিনি একটি “ন্যাশনাল এনার্জি কাউন্সিল” গঠনের পরিকল্পনা করছেন, যা অনুমোদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত সবকিছুতে প্রশাসনিক বাধা দূর করবে।

তেলের উৎপাদন বাড়ানোর এই উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি কয়েকটি লক্ষ্য অর্জন করতে চান: আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, বাজেটের ঘাটতি হ্রাস করা এবং গ্যাস ও তেলের রপ্তানি বাড়ানো। তবে, এই “ড্রিল, বেবি, ড্রিল” নীতিমালা শক্ত বাজার বাস্তবতার মুখোমুখি হবে।

শেল তেলের চ্যালেঞ্জ

যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদন প্রধানত বেসরকারি সংস্থাগুলোর হাতে। ২০২২ সাল থেকে উৎপাদন বাড়লেও, শেল তেল উত্তোলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ঝুঁকি গ্রহণের আগ্রহ কমে গেছে। শেল তেলের উত্তোলন লাভজনক হতে তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৮৯ ডলার হওয়া প্রয়োজন। তবে বর্তমানে এই মূল্য মাত্র ৭০ ডলার।

অন্যদিকে, বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ অনেক বেশি। ওপেকের সদস্য দেশগুলোর রিজার্ভও পর্যাপ্ত রয়েছে। এর পাশাপাশি, বৈদ্যুতিক যানবাহনের ক্রমবর্ধমান গ্রহণযোগ্যতার কারণে তেলের চাহিদা কমছে। এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।

প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন

গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো অপেক্ষাকৃত সহজ মনে হতে পারে। তবে বাজারের বাস্তবতা ভিন্ন। গ্যাসের বর্তমান মূল্য এবং বাজারে নতুন উৎপাদনের সরবরাহ ভবিষ্যতে এই খাতের বৃদ্ধি সীমিত করবে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

তেলের ও গ্যাসের বাজারে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনেক বাধার সম্মুখীন হবে। তার শুল্ক নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে। এক কথায়, ট্রাম্পের “তেলের রাজা” হওয়ার স্বপ্ন সম্ভবত বাস্তবায়িত হবে না।

উপসংহার

যদিও ট্রাম্পের প্রশাসন শক্তি খাতে বড় পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করছেবাজারের বাস্তবতা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চাহিদা এই প্রচেষ্টাকে সীমাবদ্ধ করে রাখবে। তেলের ক্ষেত্রে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা হয়তো কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে।