০১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১১৩)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 20

শশাঙ্ক মণ্ডল

সাহিত্য

পঞ্চম অধ্যায়

পরবর্তীকালে টাকী একাডেমির জমিতে টাকী স্কুল স্থাপিত হয়; এই বিদ্যালয়টি সরকারি বিদ্যালয়ে পরিণত হয় ১৮৮১ এর ১লা এপ্রিল। ১৮৪০ খ্রীষ্টাব্দে কালীনাথ মুন্সির মৃত্যু বিদ্যালয়টির অবলুপ্তির প্রধান কারণ বলে মনে হয়।(ক) বেথুনের বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের তের বছর এর মধ্যে টাকী অঞ্চলের বিদ্যোৎসাহী মানুষরা বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ১৮৬২ খ্রীষ্টাব্দে উদ্যোগ নিলেন- বিশেষ করে টাকীর জমিদার রায় ভূপেন্দ্রনাথ চৌধুরী এবং এই এলাকার প্রথম স্নাতক হরলাল রায়চৌধুরী।

১৮৬৯-৭০ এ লক্ষ করা যাচ্ছে মোট ৪৪ জন বালিকার মধ্যে দৈনিক উপস্থিতির হার ২০ জনের কাছাকাছি এবং বিদ্যালয়টি ছাত্রদের বিদ্যালয়ের তুলনায় নিম্নমানের- ছাত্রীদের উপস্থিতি অনিয়মিত-রক্ষণশীল সমাজ স্ত্রীশিক্ষাকে তখনও মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি তা ধরে নেওয়া যেতে পারে। পরবর্তীকালে আরও অনেকের প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আজকের ষষ্টীবর লাল মাধব বালিকা বিদ্যালয়। ১৮৩৭ খ্রীষ্টাব্দে লন্ডন মিশনারি সোসাইটির ক্যাম্পবেল সাহেবের উদ্যোগে বাদুড়িয়াতে এল. এম. এস্ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ঘটে।

ইতিপূর্বে মিশনারিরা ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে এবং নানারকম সমাজসেবামূলক কাজের তাগিদে এই এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। কোম্পানির রাজত্বে উনিশ শতকের তৃতীয় দশক পর্যন্ত মিশনারিদের এদেশে প্রবেশের ব্যাপারে সরকারের অনুৎসাহ লক্ষ করা যায়। শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরী ভারতে আসার পর আশ্রয়ের সন্ধানে হাসনাবাদের নদীর অপর তীরে দেবহাটায় বেশ কিছুদিন বসবাস করেন।(*) কেরীর পুত্র ফেলিক্স কেরী পরবর্তীকালের বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী বাদুড়িয়া, রুদ্রপুর, চাতরা এলাকায় মিশনারি কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

এল. এম. এস. স্কুলের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনিও উৎসাহ প্রকাশ করেন। রুদ্রপুরের নীলকনসার্ণের ডেভিড রিচার্ডসন, তারাগুনিয়ার নাগ চৌধুরীরা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ক্যাম্পবেল সাহেবকে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। (৭) এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে Mr. Piron বেশ কিছুকাল কাজ করেন কিন্তু বিদ্যলয়টির শিক্ষকরা মিশনারি কাজকর্ম ধর্ম প্রচারের ব্যাপারে বিশেষ ব্যস্ত হয়ে পড়ায় স্থানীয় মানুষেরা এদের সন্দেহের চোখে দেখত যার ফলে ছাত্রসংখ্যা কখনও তেমন উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠেনি। নীলবিদ্রোহের পর বিদ্যালয়টি বেশ কয়েকবছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে ১৮৮৫-৮৬ খ্রীষ্টাব্দের দিকে লন্ডন মিশনারি সোসাইটি নতুন করে স্কুলটি চালানোর উদ্যোগ নেন।

 

 

 

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১১৩)

১২:০০:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

শশাঙ্ক মণ্ডল

সাহিত্য

পঞ্চম অধ্যায়

পরবর্তীকালে টাকী একাডেমির জমিতে টাকী স্কুল স্থাপিত হয়; এই বিদ্যালয়টি সরকারি বিদ্যালয়ে পরিণত হয় ১৮৮১ এর ১লা এপ্রিল। ১৮৪০ খ্রীষ্টাব্দে কালীনাথ মুন্সির মৃত্যু বিদ্যালয়টির অবলুপ্তির প্রধান কারণ বলে মনে হয়।(ক) বেথুনের বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের তের বছর এর মধ্যে টাকী অঞ্চলের বিদ্যোৎসাহী মানুষরা বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ১৮৬২ খ্রীষ্টাব্দে উদ্যোগ নিলেন- বিশেষ করে টাকীর জমিদার রায় ভূপেন্দ্রনাথ চৌধুরী এবং এই এলাকার প্রথম স্নাতক হরলাল রায়চৌধুরী।

১৮৬৯-৭০ এ লক্ষ করা যাচ্ছে মোট ৪৪ জন বালিকার মধ্যে দৈনিক উপস্থিতির হার ২০ জনের কাছাকাছি এবং বিদ্যালয়টি ছাত্রদের বিদ্যালয়ের তুলনায় নিম্নমানের- ছাত্রীদের উপস্থিতি অনিয়মিত-রক্ষণশীল সমাজ স্ত্রীশিক্ষাকে তখনও মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি তা ধরে নেওয়া যেতে পারে। পরবর্তীকালে আরও অনেকের প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আজকের ষষ্টীবর লাল মাধব বালিকা বিদ্যালয়। ১৮৩৭ খ্রীষ্টাব্দে লন্ডন মিশনারি সোসাইটির ক্যাম্পবেল সাহেবের উদ্যোগে বাদুড়িয়াতে এল. এম. এস্ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ঘটে।

ইতিপূর্বে মিশনারিরা ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে এবং নানারকম সমাজসেবামূলক কাজের তাগিদে এই এলাকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। কোম্পানির রাজত্বে উনিশ শতকের তৃতীয় দশক পর্যন্ত মিশনারিদের এদেশে প্রবেশের ব্যাপারে সরকারের অনুৎসাহ লক্ষ করা যায়। শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরী ভারতে আসার পর আশ্রয়ের সন্ধানে হাসনাবাদের নদীর অপর তীরে দেবহাটায় বেশ কিছুদিন বসবাস করেন।(*) কেরীর পুত্র ফেলিক্স কেরী পরবর্তীকালের বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী বাদুড়িয়া, রুদ্রপুর, চাতরা এলাকায় মিশনারি কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

এল. এম. এস. স্কুলের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনিও উৎসাহ প্রকাশ করেন। রুদ্রপুরের নীলকনসার্ণের ডেভিড রিচার্ডসন, তারাগুনিয়ার নাগ চৌধুরীরা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ক্যাম্পবেল সাহেবকে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। (৭) এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে Mr. Piron বেশ কিছুকাল কাজ করেন কিন্তু বিদ্যলয়টির শিক্ষকরা মিশনারি কাজকর্ম ধর্ম প্রচারের ব্যাপারে বিশেষ ব্যস্ত হয়ে পড়ায় স্থানীয় মানুষেরা এদের সন্দেহের চোখে দেখত যার ফলে ছাত্রসংখ্যা কখনও তেমন উল্লেখযোগ্য হয়ে ওঠেনি। নীলবিদ্রোহের পর বিদ্যালয়টি বেশ কয়েকবছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে ১৮৮৫-৮৬ খ্রীষ্টাব্দের দিকে লন্ডন মিশনারি সোসাইটি নতুন করে স্কুলটি চালানোর উদ্যোগ নেন।