০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১২৩)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • 19

শশাঙ্ক মণ্ডল

পূজা উপলক্ষে কলা বুট ছোলা মুগ পাঁচ রকমের শস্য, মিষ্টান্ন, খই মুড়কি নারকেল আতপ চাল প্রদীপ গঙ্গা জল তুলসী আম্রপল্লব সরষের তেল পান সুপারি নতুন কাপড়, কালো মোরগ মুরগি লাগে। বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লাতে সংখ্যার হেরফের ঘটে, পাঁচ সিকে অথবা সওয়া পাঁচ আনা দক্ষিণা, হাড়িয়া মদ, এই সবপূজা উপকরণ; ওল্লা পূর্বদিকে মুখ করে বসে ধর্ম, মা কালী, চণ্ডী, লক্ষ্মী, সরস্বতী গঙ্গা মনসা প্রভৃতি মাতৃদেবী সহ গ্রাম দেবতার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। গ্রামদেবতার পূজায় সুন্দরবনের বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লাতে এ ধরণের মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়-

‘ওঁ শঙ্কর মহাদেব ঈশ্বর গৌরী পার্বতী রক্ষাকালী ভোগ বসালে কামুক্ষ্যা হরির ঝি চণ্ডী ব্রহ্মার ঝি শীতলা লক্ষ্মী সরস্বতী গঙ্গাদেবী ভোগ বসালে।’

গঙ্গাজল ও তুলসীজল মুরগীর গায়ে ছিটিয়ে দেয়-তারপর মুবগির কপালে সিদুর লাগিয়ে দেওয়া হয়, এবং মুরগিকে আতপ চাল খেতে দেওয়া হয়। এসময় ওঝারা নানারকম ঝাড়ফুক করে থাকে এবং এ ধরণের মন্ত্র উচ্চারণ করে-

বর বর কোন বর- নিশিদিন মঙ্গলবার ঘর ডুকবি মন ধন কানপি কলমা ফাতে। আয়রে বাইরে ওঝা মতি দাঁই বিসাই লাল্লা গাওয়া চুরিল চিফিল বাঘ বাঘিন সাপ গজরদার হয়া কুদরা বাও বাতাস দুর কর দিব ঈশ্বর গৌরী পার্বতী মহাদেববাবাকে দোহাই।

কালো মুরগি কালীর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করা হয়, তারপর ঐ মুরগি নিয়ে গ্রামের উত্তর সীমায় সন্ধ্যাবেলায় ওঝা যায় সঙ্গে গ্রামবাসীরা এবং বাজনদাররা। সেখানে ওঝা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে-

সোনেক লাঙল রূপক ফাল বাঘ বলদে জুড়লাম হাল তাইতে উঠলো কালমাটি তাইতে বুনলাম সরষের মুটি শোল বরনা মোটা বেল বরনা গোটা তাল পরমান সরসের গাছ মান পরমান পাতা সেই সরষে কুটলাম সেই সরষে মারলাম সেই সরষে কে পারে গুরু পারে। গুরুর আজ্ঞে আমি পারি এই সরষে পড়ায় কি ছাড়ে দাই ছাড়ে যবানী ছাড়ে মড়া ছাড়ে মাসান ছাড়ে। ইত্যাদি শেষ কালে এই মন্ত্র উচ্চারণের মধ্যদিয়ে গ্রামবন্ধন অনুষ্ঠান শেষ হয়।

ঘর বান্ধি দোর বান্ধি বান্ধি পীরের পাট। আনকোটি ডাকিনী বান্ধি দিয়া লোহার ঘাট।

 

 

 

ব্রিটিশ রাজত্বে সুন্দরবন (পর্ব-১২৩)

১২:০০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

শশাঙ্ক মণ্ডল

পূজা উপলক্ষে কলা বুট ছোলা মুগ পাঁচ রকমের শস্য, মিষ্টান্ন, খই মুড়কি নারকেল আতপ চাল প্রদীপ গঙ্গা জল তুলসী আম্রপল্লব সরষের তেল পান সুপারি নতুন কাপড়, কালো মোরগ মুরগি লাগে। বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লাতে সংখ্যার হেরফের ঘটে, পাঁচ সিকে অথবা সওয়া পাঁচ আনা দক্ষিণা, হাড়িয়া মদ, এই সবপূজা উপকরণ; ওল্লা পূর্বদিকে মুখ করে বসে ধর্ম, মা কালী, চণ্ডী, লক্ষ্মী, সরস্বতী গঙ্গা মনসা প্রভৃতি মাতৃদেবী সহ গ্রাম দেবতার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। গ্রামদেবতার পূজায় সুন্দরবনের বিভিন্ন আদিবাসী মহল্লাতে এ ধরণের মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়-

‘ওঁ শঙ্কর মহাদেব ঈশ্বর গৌরী পার্বতী রক্ষাকালী ভোগ বসালে কামুক্ষ্যা হরির ঝি চণ্ডী ব্রহ্মার ঝি শীতলা লক্ষ্মী সরস্বতী গঙ্গাদেবী ভোগ বসালে।’

গঙ্গাজল ও তুলসীজল মুরগীর গায়ে ছিটিয়ে দেয়-তারপর মুবগির কপালে সিদুর লাগিয়ে দেওয়া হয়, এবং মুরগিকে আতপ চাল খেতে দেওয়া হয়। এসময় ওঝারা নানারকম ঝাড়ফুক করে থাকে এবং এ ধরণের মন্ত্র উচ্চারণ করে-

বর বর কোন বর- নিশিদিন মঙ্গলবার ঘর ডুকবি মন ধন কানপি কলমা ফাতে। আয়রে বাইরে ওঝা মতি দাঁই বিসাই লাল্লা গাওয়া চুরিল চিফিল বাঘ বাঘিন সাপ গজরদার হয়া কুদরা বাও বাতাস দুর কর দিব ঈশ্বর গৌরী পার্বতী মহাদেববাবাকে দোহাই।

কালো মুরগি কালীর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করা হয়, তারপর ঐ মুরগি নিয়ে গ্রামের উত্তর সীমায় সন্ধ্যাবেলায় ওঝা যায় সঙ্গে গ্রামবাসীরা এবং বাজনদাররা। সেখানে ওঝা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে-

সোনেক লাঙল রূপক ফাল বাঘ বলদে জুড়লাম হাল তাইতে উঠলো কালমাটি তাইতে বুনলাম সরষের মুটি শোল বরনা মোটা বেল বরনা গোটা তাল পরমান সরসের গাছ মান পরমান পাতা সেই সরষে কুটলাম সেই সরষে মারলাম সেই সরষে কে পারে গুরু পারে। গুরুর আজ্ঞে আমি পারি এই সরষে পড়ায় কি ছাড়ে দাই ছাড়ে যবানী ছাড়ে মড়া ছাড়ে মাসান ছাড়ে। ইত্যাদি শেষ কালে এই মন্ত্র উচ্চারণের মধ্যদিয়ে গ্রামবন্ধন অনুষ্ঠান শেষ হয়।

ঘর বান্ধি দোর বান্ধি বান্ধি পীরের পাট। আনকোটি ডাকিনী বান্ধি দিয়া লোহার ঘাট।