০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
কলকাতার কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার তিন ‘চুরির গম’ আমদানি: বাংলাদেশের ওপর ইইউ নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন চীনের বৃহত্তম গভীর সমুদ্র গ্যাসক্ষেত্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের উৎপাদন শুরু কেমন ছিলো শুক্রবারের কাঁচাবাজারের আবহাওয়া মাইক্রোক্রেডিটের ভাঙা প্রতিশ্রুতি: কেন কিছু ঋণগ্রহীতা বলছেন “আর না” ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ও পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা আরাকান আর্মির সাথে ‘লড়াইয়ের প্রস্তুতির’ কথা বলছে রোহিঙ্গারা, সরেজমিন প্রতিবেদন ঢাকার খিলক্ষেতে পূজা মণ্ডপ ভাঙা ও উচ্ছেদ নিয়ে কী জানা যাচ্ছে? বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের নদী–নদীতে যেসব হাঙরের রাজত্ব রূপসা নদী: এক খাল কাটা স্বপ্ন থেকে দক্ষিণের প্রবেশদ্বার

হাল্লিউ, ব্রোকার এবং শিক্ষার্থীদের কোরিয়ান স্বপ্ন

  • Sarakhon Report
  • ০৬:৪১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • 16

সারাক্ষণ ডেস্ক

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে চলায় সেখানে সাংস্কৃতিক দৃশ্যপটে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। মহামারির সময় এই প্রবণতা স্থবির থাকলেও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কোরিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৮১,৮৪২-এযা ১০ বছর আগের (৮৫,৯২৩) দ্বিগুণেরও বেশি এবং ২০০৪ সালে (১৬,৮৩২) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পরিসংখ্যান সংগ্রহ শুরুর সময়কার তুলনায় ১০ গুণ বেশি।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের পটভূমি আগের চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৯ শতাংশ এশিয়ান৬ শতাংশ ইউরোপীয়২.৩ শতাংশ উত্তর আমেরিকান১.৫ শতাংশ আফ্রিকান এবং দক্ষিণ আমেরিকা ও ওশেনিয়া উভয় অঞ্চলের শিক্ষার্থী মিলিয়ে ১ শতাংশেরও কম। দেশ সংখ্যার হিসাবে২০২৩ সালে চীন থেকে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ (৬৮,০৬৫)এরপর ভিয়েতনাম (৪৩,৩৬১) ও উজবেকিস্তান (১০,৪০৯)। যদিও চীনের আধিপত্য এখনো বহালসাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেটি কিছুটা কমেছে২০১৮ সালে যা ছিল ৪৮.২ শতাংশ২০২৩ সালে তা ৩৭.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ভিয়েতনামি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েছেএকই সময়ে তাদের অংশগ্রহণ ১৯.০ শতাংশ থেকে ২৩.৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গ্লোবাল ট্যালেন্ট পলিসি অ্যান্ড সাপোর্ট ডিভিশনের প্রধান লি উন-সিক বলছেন, “ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কোরিয়ান কনটেন্টেরযাকে আমরা হাল্লিউ’ বলিবর্ধিত স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তা।” ভিয়েতনামে কোরিয়ান বৃহৎ কোম্পানিগুলোর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকেপপ এবং জাতীয় ফুটবল দলের কোচ পার্ক হ্যাং-সোর মতো সাংস্কৃতিক উপাদানগুলোর কারণে সেখানকার তরুণদের মধ্যে কোরিয়া সম্পর্কে আগ্রহ বেড়েছে।

এতে এক ধরনের অদ্ভুত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে: যে সব বিভাগ কোরিয়ায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিলবিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহে সেগুলো আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সিউলের একটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “কোরিয়ায় যখনই মানবিক বা ভাষা বিষয়ক বিভাগগুলো টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছেঠিক সেই সময়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ই পড়তে বেশি আগ্রহী। কোরিয়ান কনটেন্ট আর কেপপ আইডলদের প্রতি আগ্রহ থেকে তারা কোরিয়ান ভাষায় পড়াশোনায় মনোযোগ দিচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন কনটেন্ট সংশ্লিষ্ট নতুন মাস্টার্স বা মেজর চালু করছে।

কোরিয়ান স্বপ্ন
অনেকের কাছেই এখানে পড়তে আসা ছিল ভালো জীবনের” পথ। কিরগিজস্তান থেকে আসা ২৫ বছর বয়সী লিয়ানা শিন বলেন, “শিশুকালে কোরিয়ায় এসে এখানকার সংস্কৃতি আর জীবনধারায় আমি মুগ্ধ হই। দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত উন্নত একটি দেশযেখানে ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে খাবার অর্ডার করা যায় এবং প্রায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা হাতের নাগালে মেলে। আমার জন্মভূমিতে এমনটা কল্পনাও করা যায় না। কোরিয়া খুবই নিরাপদএকইসঙ্গে সংস্কৃতির বৈচিত্র্যও যথেষ্ট। জীবনযাত্রার মান ভিন্ন। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতদিন পারি এখানেই থাকতে চাইকারণ এখানে জীবনমান অনেক ভালো।

পায়ংতেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুন জুং-সুকের মতেঅর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী কোরিয়ায় আসে। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে কোরিয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ রোজগার করতে হয়। উদাহরণ হিসেবেকোনো শিক্ষার্থী দোকান বা রেস্টুরেন্টে খণ্ডকালীন কাজ করে প্রায় ১৫ লাখ ওয়ন রোজগার করেযা তাদের বাবা-মা নিজ দেশে তিন-চার মাসে আয় করেন।

জুন নিজেও একজন ভিয়েতনামি অভিবাসী। তিনি একাধিক সংস্কৃতিবিষয়ক ডক্টরেট সম্পন্ন করে ২০১২ সালে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সহায়তা কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে কর্মরত।
তার ভাষ্যেএই শিক্ষার্থীরা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়কঠিন সে বাস্তবতা তাদের অনিয়মিত (অবৈধ) অভিবাসীতে রূপান্তরিত করে ফেলার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
কোনো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে হলেব্যাংকে ২০ লাখ ওয়ন রাখতে হয়যাতে তার আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণিত হয়। সেই টাকা যদি তুলে ফেলা হয় বা নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে না পারেতবে তাকে দেশছাড়া হতে হয়।
হানশিন বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ২২ জন উজবেক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করেছিলকেননা তারা ব্যাংক হিসাবে ন্যূনতম পরিমাণ রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং ফলে তাদের ছাত্র ভিসা আর বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছিল না।
এই আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণের জটিল প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের প্রথম ধাপেই অপেক্ষা করে সুযোগ সন্ধানী এক শ্রেণির মানুষতারা হচ্ছে ব্রোকার। যারা শিক্ষার্থীদের কোরিয়ায় আসার প্রবল আকাঙ্ক্ষার সুযোগ নেয়।

কেন ব্রোকার?
জুনের ভাষ্যমতেকোরিয়ায় আসতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরাবিশেষ করে ভিয়েতনামি শিক্ষার্থীরাজটিল প্রক্রিয়ার কারণে ব্রোকারের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, “আগে ভিয়েতনামিদের জন্য কোরিয়ায় কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। তাই তাদের ব্রোকার ও এজেন্সির সহায়তা নিতেই হতো।
বিভিন্ন ধাপে ব্রোকারদের ভূমিকা থাকে। কেউ উপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে দেয়কেউ ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়যেখানে কোরিয়ান ভাষার প্রস্তুতি নিতে হয়। আবার কেউ ব্যাংক জমার সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে দেয়এসবের জন্য তারা বিপুল পরিমাণ ফি আদায় করে এবং কখনো উচ্চ সুদে ঋণ দিয়েও থাকে।
জুন বলেন, “প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে ফি দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা কোরিয়ায় আসার আগেই হাজার হাজার ডলার খরচ করে ফেলে। ফলে এখানে এসে তাদের কাজ না করে উপায় থাকে না। ঋণের বোঝা থাকায় তারা পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও কাজ চালিয়ে যায়এমনকি ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও থেকে যায়। এভাবেই তারা অনিয়মিত অভিবাসীতে পরিণত হয়।
বর্তমানে তথ্যপ্রাপ্তি সহজ হলেওভিসা পাওয়া যে কতটা কঠিন তা এখনো বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টের পায়। বিদেশে পড়াশোনার পরামর্শ দেয়এমন এজেন্সিগুলোর কথাও ধরলে দেখা যায়৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী এসব ব্রোকার বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে।

জনমিতিক সংকট
কোরিয়ান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ায়অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় সরকার বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বললেন, “দেশে জন্মহার কমে যাওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরিয়ান শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। তাই স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারগুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেরাই ভিয়েতনামউজবেকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে আসছেন।
কোরিয়া সরকার গত বছর পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেযার লক্ষ্য ৩ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণ করা। এর মাধ্যমে স্থানীয় ছাত্রসংখ্যার ঘাটতি মোকাবিলা এবং জনসংখ্যাগত হ্রাসের মুখে থাকা আঞ্চলিক এলাকাগুলোকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে কোরিয়ান ভাষার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়াইন্টার্নশিপ ও চাকরির সুযোগ বাড়ানোপ্রতিভাবান বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের জন্য দ্রুত ভিসা ব্যবস্থা চালু করার কথা রয়েছে। পাশাপাশিবিশ্বের বিভিন্ন কোরিয়ান এডুকেশন সেন্টারের মধ্যে নতুন সেল গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছেযা স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবেকোরিয়ান ভাষা শিক্ষা ও কোরিয়ায় পড়াশোনার পরামর্শ প্রদান করবে।

স্নাতকের পর
সরকারের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কমিউনিটির একটি অংশ হিসেবে কোরিয়ায় স্থায়ী করা হলেওবাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে তার সঙ্গে মিলছে না।
২৬ বছর বয়সী ইউরোপের এক তরুণীযিনি কোরিয়ায় স্নাতকোত্তর শেষে একটি কোরিয়ান কোম্পানিতে কাজ করছেনজানালেন যে কোরিয়া এখনো বিদেশিদের গ্রহণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
তার অভিজ্ঞতা, “স্নাতকের পর এখানে থাকা খুবই কঠিন। কাজের ভিসা পেতেও অনেক বিধিনিষেধ আর বাধার মুখে পড়তে হয়। বড় বড় কোম্পানি থেকে ভালো বেতনের প্রস্তাব পেলেও ভিসা না পেয়ে দুবার বাদ পড়েছি।
তিনি বলেনভিসার জন্য আবেদন করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসের বিভিন্ন কর্মচারী বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়েছেনবহুবার দফতরে যেতে হয়েছে।
ভিসা-সংক্রান্ত তথ্যের এই ছড়াছড়ি খুবই সমস্যাজনক। ফলে প্রকৃতপক্ষে ভিসার জন্য যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনাময় বাসিন্দাদের আকর্ষণ করতে চায়তবে অভিবাসন-সংক্রান্ত নিয়মকানুনকে আরও সমন্বিত ও স্পষ্টভাবে সবার নাগালে আনতে হবে,” তিনি যোগ করেন।


ভিসার সময়সীমা বা শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে চাকরি খোঁজার সামর্থ্য না থাকলে শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরতে হয়। ২৭,৩২১ জন বিদেশি স্নাতকের মধ্যে মাত্র ২,২৫৩ জন (৮.২ শতাংশ) কোরিয়ান কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন,৮১০ জন (২৮.৬ শতাংশ) কোরিয়া ছেড়েছেন।
অর্ধেকের বেশি স্নাতকের পরিণতি কী হয়েছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেনঅনেকে অনিয়মিতভাবে কোরিয়ায় থেকে যান। ২০২৩ সালের হিসাবেছাত্র ভিসা নিয়ে এসে অনুমতি ছাড়াই থাকা মানুষের সংখ্যা ৩৫,৫০৪।

টেকসই ব্যবস্থা
শিক্ষাকর্মসংস্থান ও স্থায়ীত্ব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িততাই প্রতিটি ক্ষেত্রের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য বলে সরকার উল্লেখ করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “কোম্পানি ও স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আনা এবং তাদের স্থানীয় জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পের প্রয়োজন আর ঘাটতি ভিন্ন ভিন্ন। ফলে এটি হতে হবে এক ধরনের বটম-আপ’ পদ্ধতিযেখানে স্থানীয় সংস্থাগুলো জানাবে তাদের কী ধরনের সমর্থন দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের উচিত স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের জনবলের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে সেই অনুযায়ী শিল্প-শিক্ষার ব্যবস্থা করাযাতে বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য দক্ষতা অর্জন করা যায়।
জুন বলেন, “কোরিয়ায় জনবল ঘাটতি স্পষ্ট। সহজ-সরলপুনরাবৃত্তিমূলক বা মৌসুমি কাজ হোককিংবা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কাজযে কোনো ক্ষেত্রেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পথ থাকা উচিত।” শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে কর্মজীবনে ও পরে স্থায়ী হয়ে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থাপনার ওপর তিনি জোর দেনযাতে তারা শিক্ষা ও কাজ দুটোতেই সাবলীলভাবে মানিয়ে নিতে পারে।

কলকাতার কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার তিন

হাল্লিউ, ব্রোকার এবং শিক্ষার্থীদের কোরিয়ান স্বপ্ন

০৬:৪১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ ডেস্ক

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে চলায় সেখানে সাংস্কৃতিক দৃশ্যপটে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। মহামারির সময় এই প্রবণতা স্থবির থাকলেও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কোরিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৮১,৮৪২-এযা ১০ বছর আগের (৮৫,৯২৩) দ্বিগুণেরও বেশি এবং ২০০৪ সালে (১৬,৮৩২) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পরিসংখ্যান সংগ্রহ শুরুর সময়কার তুলনায় ১০ গুণ বেশি।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের পটভূমি আগের চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৯ শতাংশ এশিয়ান৬ শতাংশ ইউরোপীয়২.৩ শতাংশ উত্তর আমেরিকান১.৫ শতাংশ আফ্রিকান এবং দক্ষিণ আমেরিকা ও ওশেনিয়া উভয় অঞ্চলের শিক্ষার্থী মিলিয়ে ১ শতাংশেরও কম। দেশ সংখ্যার হিসাবে২০২৩ সালে চীন থেকে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ (৬৮,০৬৫)এরপর ভিয়েতনাম (৪৩,৩৬১) ও উজবেকিস্তান (১০,৪০৯)। যদিও চীনের আধিপত্য এখনো বহালসাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেটি কিছুটা কমেছে২০১৮ সালে যা ছিল ৪৮.২ শতাংশ২০২৩ সালে তা ৩৭.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ভিয়েতনামি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেড়েছেএকই সময়ে তাদের অংশগ্রহণ ১৯.০ শতাংশ থেকে ২৩.৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গ্লোবাল ট্যালেন্ট পলিসি অ্যান্ড সাপোর্ট ডিভিশনের প্রধান লি উন-সিক বলছেন, “ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কোরিয়ান কনটেন্টেরযাকে আমরা হাল্লিউ’ বলিবর্ধিত স্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তা।” ভিয়েতনামে কোরিয়ান বৃহৎ কোম্পানিগুলোর ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিকেপপ এবং জাতীয় ফুটবল দলের কোচ পার্ক হ্যাং-সোর মতো সাংস্কৃতিক উপাদানগুলোর কারণে সেখানকার তরুণদের মধ্যে কোরিয়া সম্পর্কে আগ্রহ বেড়েছে।

এতে এক ধরনের অদ্ভুত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে: যে সব বিভাগ কোরিয়ায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিলবিদেশি শিক্ষার্থীদের আগ্রহে সেগুলো আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সিউলের একটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “কোরিয়ায় যখনই মানবিক বা ভাষা বিষয়ক বিভাগগুলো টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছেঠিক সেই সময়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ই পড়তে বেশি আগ্রহী। কোরিয়ান কনটেন্ট আর কেপপ আইডলদের প্রতি আগ্রহ থেকে তারা কোরিয়ান ভাষায় পড়াশোনায় মনোযোগ দিচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন কনটেন্ট সংশ্লিষ্ট নতুন মাস্টার্স বা মেজর চালু করছে।

কোরিয়ান স্বপ্ন
অনেকের কাছেই এখানে পড়তে আসা ছিল ভালো জীবনের” পথ। কিরগিজস্তান থেকে আসা ২৫ বছর বয়সী লিয়ানা শিন বলেন, “শিশুকালে কোরিয়ায় এসে এখানকার সংস্কৃতি আর জীবনধারায় আমি মুগ্ধ হই। দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত উন্নত একটি দেশযেখানে ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে খাবার অর্ডার করা যায় এবং প্রায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা হাতের নাগালে মেলে। আমার জন্মভূমিতে এমনটা কল্পনাও করা যায় না। কোরিয়া খুবই নিরাপদএকইসঙ্গে সংস্কৃতির বৈচিত্র্যও যথেষ্ট। জীবনযাত্রার মান ভিন্ন। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতদিন পারি এখানেই থাকতে চাইকারণ এখানে জীবনমান অনেক ভালো।

পায়ংতেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুন জুং-সুকের মতেঅর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী কোরিয়ায় আসে। তিনি বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে কোরিয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ রোজগার করতে হয়। উদাহরণ হিসেবেকোনো শিক্ষার্থী দোকান বা রেস্টুরেন্টে খণ্ডকালীন কাজ করে প্রায় ১৫ লাখ ওয়ন রোজগার করেযা তাদের বাবা-মা নিজ দেশে তিন-চার মাসে আয় করেন।

জুন নিজেও একজন ভিয়েতনামি অভিবাসী। তিনি একাধিক সংস্কৃতিবিষয়ক ডক্টরেট সম্পন্ন করে ২০১২ সালে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সহায়তা কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে কর্মরত।
তার ভাষ্যেএই শিক্ষার্থীরা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়কঠিন সে বাস্তবতা তাদের অনিয়মিত (অবৈধ) অভিবাসীতে রূপান্তরিত করে ফেলার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
কোনো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে হলেব্যাংকে ২০ লাখ ওয়ন রাখতে হয়যাতে তার আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণিত হয়। সেই টাকা যদি তুলে ফেলা হয় বা নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে না পারেতবে তাকে দেশছাড়া হতে হয়।
হানশিন বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ২২ জন উজবেক শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করেছিলকেননা তারা ব্যাংক হিসাবে ন্যূনতম পরিমাণ রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং ফলে তাদের ছাত্র ভিসা আর বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছিল না।
এই আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণের জটিল প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের প্রথম ধাপেই অপেক্ষা করে সুযোগ সন্ধানী এক শ্রেণির মানুষতারা হচ্ছে ব্রোকার। যারা শিক্ষার্থীদের কোরিয়ায় আসার প্রবল আকাঙ্ক্ষার সুযোগ নেয়।

কেন ব্রোকার?
জুনের ভাষ্যমতেকোরিয়ায় আসতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরাবিশেষ করে ভিয়েতনামি শিক্ষার্থীরাজটিল প্রক্রিয়ার কারণে ব্রোকারের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, “আগে ভিয়েতনামিদের জন্য কোরিয়ায় কাজ ও পড়াশোনার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। তাই তাদের ব্রোকার ও এজেন্সির সহায়তা নিতেই হতো।
বিভিন্ন ধাপে ব্রোকারদের ভূমিকা থাকে। কেউ উপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে দেয়কেউ ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়যেখানে কোরিয়ান ভাষার প্রস্তুতি নিতে হয়। আবার কেউ ব্যাংক জমার সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে দেয়এসবের জন্য তারা বিপুল পরিমাণ ফি আদায় করে এবং কখনো উচ্চ সুদে ঋণ দিয়েও থাকে।
জুন বলেন, “প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে ফি দিতে দিতে শিক্ষার্থীরা কোরিয়ায় আসার আগেই হাজার হাজার ডলার খরচ করে ফেলে। ফলে এখানে এসে তাদের কাজ না করে উপায় থাকে না। ঋণের বোঝা থাকায় তারা পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও কাজ চালিয়ে যায়এমনকি ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও থেকে যায়। এভাবেই তারা অনিয়মিত অভিবাসীতে পরিণত হয়।
বর্তমানে তথ্যপ্রাপ্তি সহজ হলেওভিসা পাওয়া যে কতটা কঠিন তা এখনো বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টের পায়। বিদেশে পড়াশোনার পরামর্শ দেয়এমন এজেন্সিগুলোর কথাও ধরলে দেখা যায়৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী এসব ব্রোকার বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে।

জনমিতিক সংকট
কোরিয়ান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ায়অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় সরকার বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বললেন, “দেশে জন্মহার কমে যাওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরিয়ান শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। তাই স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারগুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেরাই ভিয়েতনামউজবেকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে আসছেন।
কোরিয়া সরকার গত বছর পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেযার লক্ষ্য ৩ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী আকর্ষণ করা। এর মাধ্যমে স্থানীয় ছাত্রসংখ্যার ঘাটতি মোকাবিলা এবং জনসংখ্যাগত হ্রাসের মুখে থাকা আঞ্চলিক এলাকাগুলোকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই পরিকল্পনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে কোরিয়ান ভাষার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়াইন্টার্নশিপ ও চাকরির সুযোগ বাড়ানোপ্রতিভাবান বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের জন্য দ্রুত ভিসা ব্যবস্থা চালু করার কথা রয়েছে। পাশাপাশিবিশ্বের বিভিন্ন কোরিয়ান এডুকেশন সেন্টারের মধ্যে নতুন সেল গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছেযা স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবেকোরিয়ান ভাষা শিক্ষা ও কোরিয়ায় পড়াশোনার পরামর্শ প্রদান করবে।

স্নাতকের পর
সরকারের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কমিউনিটির একটি অংশ হিসেবে কোরিয়ায় স্থায়ী করা হলেওবাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রে তার সঙ্গে মিলছে না।
২৬ বছর বয়সী ইউরোপের এক তরুণীযিনি কোরিয়ায় স্নাতকোত্তর শেষে একটি কোরিয়ান কোম্পানিতে কাজ করছেনজানালেন যে কোরিয়া এখনো বিদেশিদের গ্রহণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
তার অভিজ্ঞতা, “স্নাতকের পর এখানে থাকা খুবই কঠিন। কাজের ভিসা পেতেও অনেক বিধিনিষেধ আর বাধার মুখে পড়তে হয়। বড় বড় কোম্পানি থেকে ভালো বেতনের প্রস্তাব পেলেও ভিসা না পেয়ে দুবার বাদ পড়েছি।
তিনি বলেনভিসার জন্য আবেদন করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসের বিভিন্ন কর্মচারী বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়েছেনবহুবার দফতরে যেতে হয়েছে।
ভিসা-সংক্রান্ত তথ্যের এই ছড়াছড়ি খুবই সমস্যাজনক। ফলে প্রকৃতপক্ষে ভিসার জন্য যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনাময় বাসিন্দাদের আকর্ষণ করতে চায়তবে অভিবাসন-সংক্রান্ত নিয়মকানুনকে আরও সমন্বিত ও স্পষ্টভাবে সবার নাগালে আনতে হবে,” তিনি যোগ করেন।


ভিসার সময়সীমা বা শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ কিংবা দীর্ঘ সময় ধরে চাকরি খোঁজার সামর্থ্য না থাকলে শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরতে হয়। ২৭,৩২১ জন বিদেশি স্নাতকের মধ্যে মাত্র ২,২৫৩ জন (৮.২ শতাংশ) কোরিয়ান কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন,৮১০ জন (২৮.৬ শতাংশ) কোরিয়া ছেড়েছেন।
অর্ধেকের বেশি স্নাতকের পরিণতি কী হয়েছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেনঅনেকে অনিয়মিতভাবে কোরিয়ায় থেকে যান। ২০২৩ সালের হিসাবেছাত্র ভিসা নিয়ে এসে অনুমতি ছাড়াই থাকা মানুষের সংখ্যা ৩৫,৫০৪।

টেকসই ব্যবস্থা
শিক্ষাকর্মসংস্থান ও স্থায়ীত্ব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িততাই প্রতিটি ক্ষেত্রের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য বলে সরকার উল্লেখ করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “কোম্পানি ও স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আনা এবং তাদের স্থানীয় জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্পের প্রয়োজন আর ঘাটতি ভিন্ন ভিন্ন। ফলে এটি হতে হবে এক ধরনের বটম-আপ’ পদ্ধতিযেখানে স্থানীয় সংস্থাগুলো জানাবে তাদের কী ধরনের সমর্থন দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের উচিত স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের জনবলের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে সেই অনুযায়ী শিল্প-শিক্ষার ব্যবস্থা করাযাতে বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য দক্ষতা অর্জন করা যায়।
জুন বলেন, “কোরিয়ায় জনবল ঘাটতি স্পষ্ট। সহজ-সরলপুনরাবৃত্তিমূলক বা মৌসুমি কাজ হোককিংবা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কাজযে কোনো ক্ষেত্রেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পথ থাকা উচিত।” শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে কর্মজীবনে ও পরে স্থায়ী হয়ে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থাপনার ওপর তিনি জোর দেনযাতে তারা শিক্ষা ও কাজ দুটোতেই সাবলীলভাবে মানিয়ে নিতে পারে।