১০:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৯) শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে চীনের সঙ্গে একই পথে হাঁটছে পশ্চিমা বিশ্ব পোল্যান্ডের বনে বিরল কালো নেকড়ের ক্যামেরাবন্দি দৃশ্য, সংরক্ষণ ও সহাবস্থানের বিতর্ক নতুন করে শিশিতে বন্দি সৌন্দর্যের মোহ: পরীক্ষাহীন পেপটাইড ইনজেকশনের বিপজ্জনক উত্থান তুরস্কের দাবি: আক্কুয়ু পারমাণবিক প্রকল্পে রাশিয়ার নতুন ৯ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৬) শাওমির ১৭ আল্ট্রা ‘লাইকা এডিশন’: স্মার্টফোনে ফিরছে ম্যানুয়াল জুম রিং একাত্তরেও উৎসবের রাজকীয় গ্ল্যামার, লাল শাড়িতে নতুন সংজ্ঞা রচনা রেখার ইউক্রেনের দাবি: রাশিয়ার ওরেনবুর্গে বড় গ্যাস প্রক্রিয়াজাত কারখানায় ড্রোন হামলা দীপু চন্দ্র দাস হত্যাসহ নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দু মহাজোটের মানববন্ধন

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২৭)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • 77

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

মাখোরকা তামাকের সেই চিরাচরিত টুকরো-জড়ানো কালো দাড়ি বারকয়েক নাড়লেন দাঁড়কাক।

‘সেইখানেই মুশকিল হয়েছে, ইয়ার। ক্লাবে তো এটা রাখা যাচ্ছে না কিনা। আমাদের ক্লাবের দফা রফা। ক্লাব আর নেই।’

‘সে কি?’ আমি প্রায় লাফিয়ে উঠলুম। ‘কেউ আগুন লাগিয়ে দিল, নাকি? স্টেশনে আসার পথে আজ সকালেও তো ক্লাব ঠিক আছে দেখলুম।’

‘না, কেউ আগুন দেয় নি, খালি বন্ধ করে দিয়েছে, ইয়ার। ভাগ্যিস, কিছু কিছু লোক সময় থাকতে আমাদের সাবধান করেছিল। ক্লাবে এখন খানাতল্লাসি চলছে।’

আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলুম, ‘কিন্তু, সেমিওন ইভানোভিচ, ক্লাবটা বন্ধ করে দেয় কী করে? এখন তো আর পুরনো রাজত্ব নেই। আমরা এখন স্বাধীন। ‘এস- আর’দের ক্লাব চলছে, মেনশেভিকদের, কাদেতদেরও ক্লাব চালু, আর নৈরাজ্যবাদীরা তো সব সময়ে মাতাল হয়েই আছে, এমন কি ওদের জানলাগুলো পর্যন্ত বোর্ড লাগিয়ে বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। তবু কেউ তো ওদের গায়ে হাত দেয় না। আর আমরা তো চুপচাপ থাকি, তবু যত দোষ কি আমাদের? হঠাৎ ওরা এইভাবে আমাদের ক্লাব বন্ধ করে দিল যে!’

‘স্বাধীন! স্বাধীনতা! হাঃ!’ দাঁড়কাক হাসলেন। ‘কারো জন্যে স্বাধীনতা, আর কারো জন্যে ঘোড়ার ডিম। কিন্তু আমি এখন এই বোঝাটা নিয়ে করি কী, বল তো? কাল পর্যন্ত এটা কোথাও লুকিয়ে রাখা দরকার। আমি এটা এখন শহরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি না, তাহলে পুলিশ এটা হাতিয়ে নেবে।’

‘তাহলে ওটা কোথাও লুকিয়ে রাখা যাক, সেমিওন ইভানোভিচ! কাছেই একটা জায়গা আমার জানা আছে। এই নালা ধরে আরেকটু এগিয়ে গেলে একটা পুকুর পড়বে, তার এক পাশে একটা খোলা গর্তের মতো জায়গা আছে। একসময় ইট

তৈরির জন্যে ওখান থেকে মাটি কাটা হত। ওই গড়খাইয়ের দেয়ালে অনেক ছোট বড় গর্ত আছে। তার মধ্যে ঘোড়াসুদ্ধ আন্ত একটা গাড়ি পর্যন্ত লুকিয়ে রাখা যায়, বোঁচকা-বঁাঁচকি তো কোন ছার। তবে শুনেছি ওখানে নাকি সাপ আছে। আমার তো খালি পা, কিন্তু আপনার পায়ে বুটজুতো আছে। কাজেই ঠিক আছে। আর তাছাড়া আপনাকে কামড়ালেই বা কী আপনি তো আর মরবেন না, একটু নেশা হবে এই যা।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৯)

রোমাঞ্চকর সময় (পর্ব -২৭)

০৮:০০:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

মাখোরকা তামাকের সেই চিরাচরিত টুকরো-জড়ানো কালো দাড়ি বারকয়েক নাড়লেন দাঁড়কাক।

‘সেইখানেই মুশকিল হয়েছে, ইয়ার। ক্লাবে তো এটা রাখা যাচ্ছে না কিনা। আমাদের ক্লাবের দফা রফা। ক্লাব আর নেই।’

‘সে কি?’ আমি প্রায় লাফিয়ে উঠলুম। ‘কেউ আগুন লাগিয়ে দিল, নাকি? স্টেশনে আসার পথে আজ সকালেও তো ক্লাব ঠিক আছে দেখলুম।’

‘না, কেউ আগুন দেয় নি, খালি বন্ধ করে দিয়েছে, ইয়ার। ভাগ্যিস, কিছু কিছু লোক সময় থাকতে আমাদের সাবধান করেছিল। ক্লাবে এখন খানাতল্লাসি চলছে।’

আমি হতবুদ্ধি হয়ে গেলুম, ‘কিন্তু, সেমিওন ইভানোভিচ, ক্লাবটা বন্ধ করে দেয় কী করে? এখন তো আর পুরনো রাজত্ব নেই। আমরা এখন স্বাধীন। ‘এস- আর’দের ক্লাব চলছে, মেনশেভিকদের, কাদেতদেরও ক্লাব চালু, আর নৈরাজ্যবাদীরা তো সব সময়ে মাতাল হয়েই আছে, এমন কি ওদের জানলাগুলো পর্যন্ত বোর্ড লাগিয়ে বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। তবু কেউ তো ওদের গায়ে হাত দেয় না। আর আমরা তো চুপচাপ থাকি, তবু যত দোষ কি আমাদের? হঠাৎ ওরা এইভাবে আমাদের ক্লাব বন্ধ করে দিল যে!’

‘স্বাধীন! স্বাধীনতা! হাঃ!’ দাঁড়কাক হাসলেন। ‘কারো জন্যে স্বাধীনতা, আর কারো জন্যে ঘোড়ার ডিম। কিন্তু আমি এখন এই বোঝাটা নিয়ে করি কী, বল তো? কাল পর্যন্ত এটা কোথাও লুকিয়ে রাখা দরকার। আমি এটা এখন শহরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারি না, তাহলে পুলিশ এটা হাতিয়ে নেবে।’

‘তাহলে ওটা কোথাও লুকিয়ে রাখা যাক, সেমিওন ইভানোভিচ! কাছেই একটা জায়গা আমার জানা আছে। এই নালা ধরে আরেকটু এগিয়ে গেলে একটা পুকুর পড়বে, তার এক পাশে একটা খোলা গর্তের মতো জায়গা আছে। একসময় ইট

তৈরির জন্যে ওখান থেকে মাটি কাটা হত। ওই গড়খাইয়ের দেয়ালে অনেক ছোট বড় গর্ত আছে। তার মধ্যে ঘোড়াসুদ্ধ আন্ত একটা গাড়ি পর্যন্ত লুকিয়ে রাখা যায়, বোঁচকা-বঁাঁচকি তো কোন ছার। তবে শুনেছি ওখানে নাকি সাপ আছে। আমার তো খালি পা, কিন্তু আপনার পায়ে বুটজুতো আছে। কাজেই ঠিক আছে। আর তাছাড়া আপনাকে কামড়ালেই বা কী আপনি তো আর মরবেন না, একটু নেশা হবে এই যা।’