সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “শুরু হলো প্রথম ধাপের ইজতেমা”
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের প্রথম ধাপের ইজতেমা। এ উপলক্ষে ইজতেমা মাঠে জড়ো হয়েছেন হাজারো মুসল্লি। ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এই ধাপের ইজতেমা। ইজতেমাকে ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ, র্যাব ও জেলা প্রশাসন।
শুরায়ে নেজামের গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান প্রথম আলোকে জানান, এবার তাঁরা দুই ধাপে ইজতেমা করবেন। এর মধ্যে আজ ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম ধাপের ইজতেমা। এই ধাপে অংশ নেবেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর আগামী ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। এই ধাপে অংশ নেবেন ২২ জেলা ও ঢাকার অন্য অংশের মুসল্লিরা।
ইজতেমার প্রথম ধাপে অংশ নেবেন গাজীপুর, নড়াইল, রাজশাহী, নাটোর, গাইবান্ধা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় এবং ঢাকার ডেমরা, কাকরাইল, মিরপুর, ধামরাই, দোহার ও নবাবগঞ্জ এলাকার মুসল্লিরা।
শুরায়ে নেজামের শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বি মাহফুজুল হান্নান বলেন, আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হয়ে গেছে। এবার দুই ধাপে ইজতেমা করায় মুসল্লিদের সুবিধা হয়েছে। রাস্তাঘাটে চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক আছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “প্রাথমিক শিক্ষকের বেতনে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্নে বাংলাদেশ”
প্রাথমিকেই শিশুর শিক্ষার ভিত তৈরি হয়। কিন্তু যারা সেই ভিত রচনা করেন, সেই শিক্ষকরা এখনো তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী! মাত্র অষ্টম শ্রেণি পাশ একজন ড্রাইভারের গ্রেড ১২তম আর স্নাতক-মাস্টার্স পাশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকের গ্রেড ১৩তম। এ গ্রেড অনুযায়ী তাদের মূল বেতন ১১ হাজার টাকা এবং বাড়ি ভাড়া, চিকিত্সা ভাতাসহ সর্বসাকল্যে পান সাড়ে ১৯ হাজার টাকার মতো।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতনের পরিমাণের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্ন। এদেশের প্রাথমিকের শিক্ষকদের গড় বেতন ১৭০ ডলার ২ সেন্ট, যা দেশের মাথাপিছু গড় মাসিক আয়ের তুলনায় প্রায় ৬২ ডলার কম। উচ্চমূল্যে খাবার কিনে খেয়ে প্রাথমিকের একজন শিক্ষকের পক্ষে সংসার চালানো পাহাড়সম কঠিন।
বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সিংগাপুরসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং বেশি বেতনের চাকরিগুলোর মধ্যে একটি। আর বাংলাদেশে এদিক থেকে তা একেবারেই পেছনের সারিতে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা বলেন, প্রাথমিকের প্রায় প্রতিটি শিক্ষক ঋণে জর্জরিত। কারণ এই বেতনে একজন শিক্ষক পরিবারের ভরণপোষণ ঠিকমতো করতে পারেন না।
অনেকেরই নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বিশ্বব্যাংক ও ইউনেস্কোর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো তাই প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের যোগ্যতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সব সময় গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর তথ্য অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইউরোপের দেশ লুক্সেমবাগ। দেশটির প্রাথমিক শিক্ষকদের ন্যূনতম মাসিক বেতন ৫ হাজার ৯৮৪ ডলার ৩০ সেন্ট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের ন্যূনতম মাসিক বেতন ৫ হাজার ৭৯৯ ডলার ৯১ সেন্ট। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা সুইজারল্যান্ডের শিক্ষকরা ন্যূনতম ৫ হাজার ৭৯ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন।
বণিক বার্তার একটি শিরোনাম”রাজনৈতিক দল গঠন করছে শিক্ষার্থীরা”
ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করছে। এ লক্ষ্যে তারা দেশজুড়ে লোকজনকে সংগঠিত করছে। তাদের খারাপ কোনো কিছুর সঙ্গে সংস্পর্শ নেই বা নিজেদের রাজনৈতিক আখের গোছানোর ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে এ কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দাভোস সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। সে সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রধান বৈদেশিক বিষয়ক ভাষ্যকর গিডিওন র্যাচম্যানের উপস্থাপনায় একটি পডকাস্টে কথা বলেন ড. ইউনূস। ‘র্যাচম্যান রিভিউ’ নামের ওই পডকাস্টে কথোপকথন লিখিত আকারে গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, নির্বাচনের সম্ভাব্য যে দুটি সময়ের কথা তিনি বলেছেন, তা ভালো সময়। তিনি জাতীয় ঐক্য ধরে রাখছেন। এটা থেকে বিচ্যুত হতে চান না বলেও জানান।
আলোচনার একপর্যায়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘রক্ত দিয়ে ছাত্ররা যা অর্জন করেছে, তা তাদেরই রক্ষা করতে হবে। অন্যথায় সেগুলো সেই ব্যক্তিরা নিয়ে যাবে, যারা বিগত প্রশাসনের মতো সবকিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সুযোগ খুঁজছে। এটাই বাংলাদেশে আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশ। সুতরাং তারা এটা রক্ষা করার চেষ্টা করছে। তাই আমি বলব, ছাত্রদের স্বচ্ছ অভিপ্রায় থাকবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি সম্ভাবনা হলো ছাত্ররা নিজেরাই একটি দল গঠন করছে। শুরুতে যখন উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয় তখন আমি তিনজন ছাত্রকে নিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, যদি তারা দেশের জন্য “জীবন” দিতে পারে, তাহলে তারা উপদেষ্টা পরিষদে বসতে পারে। তারা ভালো কাজ করছে। এখন ছাত্ররা বলছে—কেন আপনি আপনার-আমাদের নিজস্ব দল গঠন করেন না, আমরা একটা সুযোগ নেব। আমি তাদের বললাম, পুরো জাতি তাদের চেনে। তারা যা করতে চায়, সে বিষয়ে তাদের একটা সুযোগ দিই। সুতরাং, তারা এটা করবে।’
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “চীনের দিকে না ঝুঁকতে মার্কিন চাপে পড়তে পারে বাংলাদেশ”
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন। ইউক্রেন নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যস্ত থাকা পরাশক্তি রাশিয়া দৃশ্যপটে নতুন করে হাজির হওয়ার জানান দিচ্ছে। সম্ভাব্য স্নায়ুযুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ একটি সম্পর্ক রেখে বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনে ক্ষমতার পালাবদলের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যাতে চীনের দিকে না ঝুঁকে সে জন্য ট্রাম্প প্রশাসন চাপ দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভূ-রাজনীতিবিষয়ক এক প্যানেল আলোচনায় ওয়াশিংটনভিত্তিক নীতি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এ মন্তব্য করেন। ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার–এর জিওপলিটিক্যাল ইনসাইটস ‘বাংলাদেশ অ্যাট জিওপলিটিক্যাল ক্রসরোডস’ (ভূরাজনীতির সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ) শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। সঞ্চালনা করেন জিওপলিটিক্যাল ইনসাইটসের সম্পাদক রামিসা রব। মাইকেল কুগেলম্যান তার নাতিদীর্ঘ বক্তৃতায় এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিস্থিতির প্রতিও ইঙ্গিত করেন।
আলোচনায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফর প্রসঙ্গে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার চীনের দিকে ঝুঁকছে। আমরা জানি না চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসন কীভাবে মোকাবিলা করবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন কৌশলগত বিষয়গুলো কম গুরুত্ব দিয়ে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে বেশি মনোযোগী হবে বলে মনে হয়। চীনের সঙ্গে সম্পর্কে বাধা তৈরিতে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ আসার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত ছয় মাসে অনেক কিছু ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশের নন এলাইন পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে খানিকটা চাপের মুখে রয়েছে। কারণ, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বড় চার দেশ একে অন্যের সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কেমন আচরণ করবে, তা অজানা। তবে বাংলাদেশ যাতে চীনের দিকে হেলে না পড়ে, সে জন্য ট্রাম্প প্রশাসন চাপ দিতে থাকলে বাংলাদেশকেও কোনো না কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে। আলোচনায় কুগেলম্যান ছাড়াও অন্য অতিথিরা ভূ-রাজনৈতিক দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন। সেখানে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কসহ
নানা বিষয় উঠে আসে। অনুষ্ঠানো সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ভূরাজনীতি টেকসই নয়, অনিশ্চিত। এই অনিশ্চিত ভূরাজনীতিতে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রভাব ফেলবে। অনিশ্চিত ভূরাজনীতি অনেক সময় কিছু দেশের জন্য সুফলও বয়ে আনে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রাম্পের আগের আমলে যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্যযুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য সুযোগ বয়ে এনেছিল। তবে তা আমরা ব্যবহার করতে পারিনি। কারণ, আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। সেই বাস্তবতায় এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমরা এখনো প্রস্তুত নই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সদ্য সমাপ্ত চীন সফরকে সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আরও চীনা বিনিয়োগ দরকার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) জ্যেষ্ঠ ফেলো শাফকাত মুনীর গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পর্যালোচনার জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। বলেন, আমাদের নিজেদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে, আমাদের কী ধরনের পররাষ্ট্রনীতি থাকা দরকার এবং আমাদের বিদ্যমান কাঠামোটি কী, এ ধরনের সমস্যা নিয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত কি না, তা বিবেচনায় নিতে হবে।