নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনা বিভিন্ন উস্কানি দিয়ে এখন দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলাদেশের মানুষ না। ভারতে আশ্রয় নিয়ে এখনো তিনি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে পারেন না। আমাদের যারা সমন্বয়ক আছে তারা গাজীপুরে গিয়েছিল তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। লজ্জা থাকা উচিত আপনারা সরকারে থাকা অবস্থায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
সরকার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা শোনে এবং সমাধান করতে চায়, তাহলে এক মাসের বেশি সময় লাগার কথা না বলে মন্তব্য করেছেন শামসুজ্জামান দুদু। নির্বাচন বাধাকারীদের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, যারা নির্বাচন এর বাধা দিচ্ছে তারা তো অনেক বড় নেতা। অনেক বড় আন্দোলনকারী নির্বাচন দিলে তো আপনারা জয়ী হওয়ার কথা। নির্বাচন দিলে সমস্যা কোথায়? আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা কথা বলি আগামী নির্বাচনে বিএনপি তো জিতবেই। তারপরের নির্বাচনও বিএনপি জিতবে। কেন জিতবে? কারণ বিএনপি জনগণের মধ্যে থাকতে চায়।
সাবেক এই সদস্য সংসদ বলেন, বিএনপি যে ৩১ দফা দিয়েছে তা গণতন্ত্রকামি রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে দিয়েছে। এই ৩১ দফা পড়েন তাহলে সংস্কার কি এক ঘন্টার মধ্যে যেনে যাবেন। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য সৎ থাকলে বিএনপি’র ৩১ দফা পড়তেন। তা না করে শুধু সংস্কার সংস্কার করেন। একজন শুধু উন্নয়ন উন্নয়ন করেছে। আর আপনারা শুধু সংস্কার সংস্কার করছেন। এগুলো বাদ দিতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে শেখ মুজিবুর রহমান ব্যর্থ হয়েছিলেন একটি ভালো নির্বাচন দিতে। যে কারণে ৭৩ সাল থেকে সংকট শুরু হয়েছিল। সে সংকট কাটিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এরপরে সংকট কাটিয়েছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এবার সংকট কাটাবেন তারেক রহমান।

কৃষকদলের সাবেক এ আহবায়ক বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি লড়াই করছে। যারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে,তাদের বিচারের দাবিতে। এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে প্রয়োজন পড়লে তারা রাজপথে নামবে। এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবে। ঐক্যবদ্ধ ছাড়া আমাদের মুক্তির কোন পথ নেই।তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে একজন প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি হয়ে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আবার প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে গিয়েছিলেন। এ রাজনৈতিক দলের নেত্রী ছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি স্বৈরাচার এরশাদ এর যত আবর্জনা ছিল তা পরিষ্কার করেছিলেন। শেখ মুজিব আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা চালু করেছিল। তিনি (বেগম খালেদা) রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় এনেছিলেন।
বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান নাহিদুল খান সাহেল এর সভাপতিত্বে ফাউন্ডেশনের মহাসচিব হুমায়ুন কবির বেপারী’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদৌলা চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি মতিউর রহমান ডিজেল, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী, গণতান্ত্রিক জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদের সভাপতি রমিজ উদ্দিন রুমী, সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি এম. আহমেদ খান মন্টু, যুবদল নেতা শরীফ বেপারী প্রমুখ।