০২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

এল এন জি আমাদানী বাড়ালে কি বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৮:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 14

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • কয়লার দাম কম থাকলেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে
  • অতীতে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় বিদ্যুৎ ঘাটতি বেড়েছিল
  • পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে এর অর্ধেকই সচল রাখা যাচ্ছে না
  • রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জুনের মধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ

আন্তর্জাতিক বাজারে গত আট মাসে কয়লার দাম প্রায় ১৭% কমলেও, একই সময়ে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম প্রায় ১৮% বেড়েছে।

লোডশেডিং কমাতে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা

রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫,৭০০ মেগাওয়াট হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক ১,২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার অতিরিক্ত ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করবে। এজন্য বাড়তি চারটি এলএনজি কার্গো কেনার পরিকল্পনা করেছে জ্বালানি বিভাগ।

গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকল্পনা

গ্রীষ্মেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও দৈনিক ৭০০-১,৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

এলএনজির ওপর নির্ভরতা নিয়ে সমালোচনা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লার দাম কম থাকলেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আর্থিক চাপ বাড়াবে। অতীতে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় বিদ্যুৎ ঘাটতি বেড়েছিল, যা আবারও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

সরকারের যুক্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, শুধুমাত্র এলএনজি নয়, কয়লাও আমদানি করা হবে। তবে দ্রুত বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এছাড়া, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার কারণে এলএনজি ব্যবহার সহজতর বলে সরকার মনে করছে।

কয়লা ও এলএনজির বর্তমান বাজারদর

গত বছরের অক্টোবরে প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ১৪৮ ডলার, যা বর্তমানে ১০৭ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে, গত জুলাইতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ১২.৫২ ডলার, যা বর্তমানে ১৪.৭২ ডলারে পৌঁছেছে। আগামীতে এলএনজির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা ও চ্যালেঞ্জ

বর্তমানে দেশে ৬,৭৮৭ মেগাওয়াট সক্ষমতার পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে এর অর্ধেকই সচল রাখা যাচ্ছে না। বিপিডিবি গ্রীষ্মে অন্তত ৫,০০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর পরিকল্পনা করলেও তা অর্থায়নের ওপর নির্ভর করছে।

জ্বালানি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন

রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জুনের মধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। এর মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলার বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বাকিটা জ্বালানি আমদানি (গ্যাস ও ফার্নেস অয়েল) খাতে ব্যয় হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বুয়েটের একজন সাবেক অধ্যাপক মনে করেন, এলএনজির দাম বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীল। সাশ্রয়ী জ্বালানির ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। বর্তমানে কয়লার দাম কম থাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখাই যৌক্তিক হবে।

এল এন জি আমাদানী বাড়ালে কি বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হবে

০৩:৫৮:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • কয়লার দাম কম থাকলেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে
  • অতীতে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় বিদ্যুৎ ঘাটতি বেড়েছিল
  • পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে এর অর্ধেকই সচল রাখা যাচ্ছে না
  • রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জুনের মধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ

আন্তর্জাতিক বাজারে গত আট মাসে কয়লার দাম প্রায় ১৭% কমলেও, একই সময়ে স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম প্রায় ১৮% বেড়েছে।

লোডশেডিং কমাতে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা

রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫,৭০০ মেগাওয়াট হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক ১,২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার অতিরিক্ত ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করবে। এজন্য বাড়তি চারটি এলএনজি কার্গো কেনার পরিকল্পনা করেছে জ্বালানি বিভাগ।

গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিকল্পনা

গ্রীষ্মেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও দৈনিক ৭০০-১,৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

এলএনজির ওপর নির্ভরতা নিয়ে সমালোচনা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লার দাম কম থাকলেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আর্থিক চাপ বাড়াবে। অতীতে এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য হওয়ায় বিদ্যুৎ ঘাটতি বেড়েছিল, যা আবারও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

সরকারের যুক্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, শুধুমাত্র এলএনজি নয়, কয়লাও আমদানি করা হবে। তবে দ্রুত বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এছাড়া, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার কারণে এলএনজি ব্যবহার সহজতর বলে সরকার মনে করছে।

কয়লা ও এলএনজির বর্তমান বাজারদর

গত বছরের অক্টোবরে প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ১৪৮ ডলার, যা বর্তমানে ১০৭ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে, গত জুলাইতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ১২.৫২ ডলার, যা বর্তমানে ১৪.৭২ ডলারে পৌঁছেছে। আগামীতে এলএনজির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা ও চ্যালেঞ্জ

বর্তমানে দেশে ৬,৭৮৭ মেগাওয়াট সক্ষমতার পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও জ্বালানি সংকটের কারণে এর অর্ধেকই সচল রাখা যাচ্ছে না। বিপিডিবি গ্রীষ্মে অন্তত ৫,০০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর পরিকল্পনা করলেও তা অর্থায়নের ওপর নির্ভর করছে।

জ্বালানি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন

রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জুনের মধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। এর মধ্যে ৩ বিলিয়ন ডলার বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বাকিটা জ্বালানি আমদানি (গ্যাস ও ফার্নেস অয়েল) খাতে ব্যয় হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বুয়েটের একজন সাবেক অধ্যাপক মনে করেন, এলএনজির দাম বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীল। সাশ্রয়ী জ্বালানির ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। বর্তমানে কয়লার দাম কম থাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখাই যৌক্তিক হবে।