সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- দীর্ঘমেয়াদী ফলনের কমার কারণে সুদের হার বাড়বে না
- গত ডিসেম্বর থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ফলনের হার ক্রমাগত কমছে
- আগামী এপ্রিল থেকে সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রেও একই হ্রাস কার্যকর করার পরিকল্পনা আছে
- বর্তমান অর্থবছর ২০২৪-২৫ এর প্রথমার্ধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯.৮০% লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২.৫২ পয়েন্ট কম
ব্যাংকগুলো সরকারের সিকিউরিটিজ থেকে অর্জিত লাভ কমে যাওয়ায় জমা ও ঋণ হারে হ্রাসের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এ সংক্রান্ত সাথে তারা প্রাইভেট সেক্টরে ঋণ প্রদানে আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
২. সরকারী সিকিউরিটিজ থেকে লাভের পতন
- কর্পোরেট খাতে হ্রাস:
ব্যাংকার ও মানি-মার্কেট বিশ্লেষকদের মতে, কর্পোরেট খাতের জন্য ইতোমধ্যে জমা ও অগ্রিম ঋণের হারে ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছে।
- সাধারণ জনগণের জন্য পরিকল্পনা:
আগামী এপ্রিল থেকে সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রেও একই হ্রাস কার্যকর করার পরিকল্পনা আছে। - বাজারের অনিশ্চয়তা:
সাম্প্রতিক অস্থিরতার মাঝে ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ডের উচ্চ ফলন থেকে লাভের সুযোগ নিতে চেষ্টা করছিল।
৩. সুদের নীতিতে পরিবর্তনের প্রয়োজন
- ফলনের কমতি:
গত ডিসেম্বর থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের ফলনের হার ক্রমাগত কমছে। - উদাহরণস্বরূপ:
৯১, ১৮২ ও ৩৬৪ দিনের টি-বিলের হার পূর্বে ছিল ১১.৮০%, ১১.৯০% ও ১১.৯৯%, যা এখন যথাক্রমে ১০.৩৫%, ১০.২৫% ও ১০.৩৫%-এ নেমে গেছে। - দীর্ঘমেয়াদী বন্ড:
২, ৫, ১০, ১৫ ও ২০ বছরের টি-বন্ডগুলোর ফলনও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা ব্যাংকিং খাতে জমা ও ঋণ হারে পরিবর্তনের সংকেত দেয়।
৪. ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া
- মুদ্রানীতির মন্তব্য:
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী ফলনের কমার কারণে সুদের হার বাড়বে না। - প্রাইভেট সেক্টরে মনোযোগ:
সরকারি সিকিউরিটিজে লাভ কমার ফলে ব্যাংকগুলোকে প্রাইভেট সেক্টরে ঋণ বৃদ্ধির দিকে আরও নজর দিতে হচ্ছে। - আশাবাদী মন্তব্য:
মূল্যস্ফীতি কমলে এবং বাজারের সাড়া পেলে শীঘ্রই নীতিগত হারে সমন্বয় করা সম্ভব হবে।
৫. বিভিন্ন ব্যাংকের পদক্ষেপ
- বেসরকারি ব্যাংক:
এক বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (নাম প্রকাশ না করে) বলছেন, কর্পোরেট খাতের জন্য জমা ও ঋণের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছে এবং এপ্রিল থেকে সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রেও এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
৬. সরকারী সিকিউরিটিজ নিলামের প্রেক্ষাপট
- ঋণের সংগ্রহ:
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি সিকিউরিটিজ নিলামের মাধ্যমে ৭৫ বিলিয়ন টাকার ঋণ সংগৃহীত হয়েছে। - বিডের পরিমাণ:
নিলামের সময় ব্যাংকগুলো প্রাক-লক্ষ্যের তুলনায় প্রায় ১৯০ বিলিয়ন টাকার বিড জমা দিয়েছে। - ট্রেজারি বন্ড:
পাঁচ বছরের সরকারী ট্রেজারি বন্ড নিলামের প্রাক-লক্ষ্য ছিল ৪০ বিলিয়ন, কিন্তু ২২০ বিলিয়ন টাকার বিড জমা হয়েছে। - চাহিদার ইঙ্গিত:
এই বিড জমা থেকে বোঝা যায়, প্রাইভেট সেক্টরে ঋণের চাহিদা কম থাকায় ব্যাংকগুলো সরকারি সিকিউরিটিজে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
৭. প্রাইভেট সেক্টরের ঋণ বৃদ্ধির হার
- বৃদ্ধির হ্রাস:
ডিসেম্বর ২০২৪-এ প্রাইভেট সেক্টরে ঋণের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৭.২৮% এ নেমে এসেছে, যা গত মাসের ৭.৬৬% থেকে কম। - লক্ষ্যমাত্রা থেকে ফারাক:
এটি বর্তমান অর্থবছর ২০২৪-২৫ এর প্রথমার্ধের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯.৮০% লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২.৫২ পয়েন্ট কম।
৮. উপসংহার
সরকারি সিকিউরিটিজ থেকে লাভের কমতি এবং পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, ব্যাংকগুলো জমা ও ঋণ হারে হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়ে প্রাইভেট সেক্টরে ঋণ বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিচ্ছে। যদি মূল্যস্ফীতি কমে এবং বাজারের ইতিবাচক সাড়া মিলে, তবে ব্যাংকিং খাতে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা যায়।