চীনা অ্যানিমেটেড সিনেমা ন্য চা-২ মুক্তির পরই বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। ২৯ জানুয়ারি মুক্তির পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এটি আয় করেছে ১৩.৮ বিলিয়ন ইউয়ান, যা বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ আয়ের অ্যানিমেটেড সিনেমা। তবে এই অভাবনীয় সাফল্য কল্পনাও করতে পারেননি লিয়ু ইয়ানথিং, ছবির প্রধান চরিত্র ন্য চার কণ্ঠ দিয়েছেন যিনি।
৩৭ বছর বয়সী এই কণ্ঠশিল্পী প্রথমে এটিকে সাধারণ একটি ডাবিংয়ের কাজ হিসেবেই দেখেছিলেন। কিন্তু চরিত্রের সংলাপ ও গল্পের গভীরে যাওয়ার পর বুঝতে পারেন, নতুন কিছু ঘটাতে চলেছে এই ন্য চা, রচনা করতে চলেছে ইতিহাস।
চিত্রনাট্য দেখেই লিয়ু ইয়ানথিং বুঝতে পারেন, আধুনিক ন্য চার চরিত্রটি তাকে দারুণ অনুপ্রেরণা দেবে। চরিত্রটির দৃঢ় সংকল্প, আন্তরিকতা ও প্রতিকূলতা জয় করার তেজদীপ্ত সাহস তাকে নাড়া দেয় ভীষণ। ফলে কণ্ঠ দিতে গিয়ে নিজের ওপর জোর খাটাতে হয়নি লিয়ুকে। সংলাপ বলে গেছেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। যে কারণে ন্য চা’ও হয়েছে আরও বাস্তবসম্মত।
লিয়ুর মতে, এমন চরিত্র পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। কারণ পেশাদার ভয়েস শিল্পীরা সবসময় মুখিয়ে থাকেন নিজের দক্ষতায় শাণ দিয়ে রাখার মতো চরিত্রের সন্ধানে।
লিউ ইয়ানথিং বলেন, ভালো কণ্ঠশিল্পী হতে হলে চরিত্রের প্রতি সহমর্মিতা, কল্পনাশক্তি ও গভীর বোঝাপড়া থাকতে হয়। জীবনের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবার দক্ষতাও গুরুত্বপূর্ণ।
লিউ বললেন ‘দর্শক আমাদের মুখ, অভিব্যক্তি বা অঙ্গভঙ্গি দেখতে পায় না। আমার একমাত্র মাধ্যম কণ্ঠস্বর—যার মাধ্যমে নিখুঁতভাবে আবেগ প্রকাশ করতে হয়।’
এজন্য চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। ন্য চার কণ্ঠ দেওয়ার আগে বছরের পর বছর নিভৃতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তিনি।
‘কণ্ঠ প্রকাশের যেকোনো বিষয় নিয়ে আগ্রহী ছিলাম। কণ্ঠ কীভাবে অনুভূতি প্রকাশ করে, সেটি অনুশীলন করেছি দিনের পর দিন।’ বললেন লিউ।
লু ইয়ানতিং মনে করেন, পশ্চিমা সুপারহিরোদের মতো এক নায়কের কৃতিত্বের চেয়েও ন্য চা-২’র মধ্যে দেখানো পারিবারিক বন্ধন ও চীনা চেতনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তার মতে, ‘এটি কোনো ব্যক্তিগত বিজয়ের গল্প নয়, বরং একে অপরের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ন্যায়পরায়ণতার গল্প। এ কারণেই সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী দর্শকদের হৃদয়ে দাগ কেটেছে।’
ন্য চার পর লিউ ইয়ানথিংয়ের ব্যক্তিত্বেও এসেছে পরিবর্তন। বললেন, ‘আগে আমি নীরব মুহূর্তগুলো উপভোগ করতাম। খুব বেশি কথা বলতাম না, আবেগও নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু ন্য চার আগ্রাসী ও প্রাণবন্ত চরিত্র তাকেও বদলে দিয়েছে।’
‘ডাবিং প্রক্রিয়ায় আমার আবেগ অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে’ যোগ করেন তিনি।
ভবিষ্যৎ কণ্ঠশিল্পীদের জন্য লিউ ইয়ানথিংয়ের পরামর্শ—‘শতভাগ মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন, প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান, এ কাজে কঠোর পরিশ্রমই আপনার পথ তৈরি করে দেবে।’
ফয়সল/নাহার
সিএমজি বাংলা
Leave a Reply