১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

আমেরিকা ফাস্ট নীতি ও ইউএসএইড এর অধিকাংশ কর্মী বিদায়: বাঁচবে ৪.৪ বিলিয়ন ডলার

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 19

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ওয়াশিংটনে USAID-এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মীদের তাদের ব্যক্তিগত সামগ্রী নিতে একটি সংক্ষিপ্ত সময় দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় একদিন পরে, যখন ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা করে যে এজেন্সির বিদেশী সহায়তার চুক্তির ৯০% এরও বেশি কেটে ফেলা হবে।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও তার প্রভাব

  • বিদেশী সহায়তা স্থগিতকরণ:
    জানুয়ারিতে ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশী সহায়তা বিরত রাখার আদেশ দেন। তার লক্ষ্য ছিল “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সাথে মার্কিন করদাতাদের অর্থে পরিচালিত প্রকল্পগুলিকে সামঞ্জস্য করা।
  • USAID-এ বিশৃঙ্খলা:
    এই সিদ্ধান্তে USAID-এর কার্যক্রমে বিশাল গোলযোগ দেখা দেয়। বিশ্বব্যাপী খাদ্য, চিকিৎসা ও মানবতাবাদী সহায়তার নামে চলা তাদের  কার্যক্রম থেমে যায়।
  • ইলন মাস্কের নিয়োগ:
    ট্রাম্প বিলিয়নিয়ার উপদেষ্টা ইলন মাস্ককে USAID-এর অবকাঠামো ভেঙে ফেলার দায়িত্ব দেন, যা ফেডারেল বাজেটের অপচয় রোধে নেওয়া একটি পদক্ষেপ।

হেডকোয়ার্টারে কর্মীদের বিদায়

  • সংক্ষিপ্ত সময়ের সুযোগ:
    কর্মীদের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে তাদের ব্যক্তিগত সামগ্রী সংগ্রহের সুযোগ দেয়া হয়।
  • বিদায়ের মুহূর্ত:
    প্রায় ৮০ জন সহকর্মী ও সমর্থক জনসাধারণ তালি ও উল্লাস করে বিদায় জানান।
  • ব্যক্তিগত অনুভূতি:
    ৮ বছর বয়সী এক মেয়ে, যার পিতা ৩০ বছর পর অফিস ছাড়ছেন, হাতে হস্তনির্মিত সাইন নিয়ে বললেন, “আমি গর্বিত, বাবা,” আর আরেক হাতে মার্কিন পতাকা ধরে ছিলেন।
  • সমালোচনা:
    এই সংক্ষিপ্ত সময় দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অনেকেই অসন্মানজনক ও উদাসীন বলেছিলেন।

চুক্তি বাতিল ও কার্যক্রমে প্রভাব

  • চুক্তির পর্যালোচনা:
    USAID ৬,২০০টি বহু-বছরের চুক্তি পরীক্ষা করে প্রায় ৫,৮০০টি (যে চুক্তিগুলো কম মূল্যবান) বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
  • অনুদানের কাটা:
    মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিদেশী সহায়তার প্রায় ৩০% অনুদান, যার মূল্য ৪.৪ বিলিয়ন ডলার, কাটা হয়েছে।
  • বিচারকের হস্তক্ষেপ:
    এক ফেডারেল বিচারকের হস্তক্ষেপে ও অনুদানপ্রাপ্তদের সংবদ্ধ তহবিল মুক্তির আদেশে পর্যালোচনার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হলেও, প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস কিছু আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।
  • পেমেন্টে সমস্যা:
    USAID-এর উপ-প্রশাসক পিট মারোকো জানান, আদেশ অনুযায়ী সময়মতো পেমেন্ট করা কঠিন হবে, তবে ২৪ জানুয়ারির পূর্ববর্তী বৈধ ব্যয় পরিশোধ করা হবে।

মানবিক সহায়তায় ক্ষতি

  • HIV/AIDS প্রোগ্রাম:
    কিছু বৃহত্তম মার্কিন অর্থায়তাধীন HIV/AIDS প্রোগ্রাম দক্ষিণ আফ্রিকায় পুনরায় তহবিল চালু করতে পারেনি।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি:
    ম্যালেরিয়া, মাতৃসন্তান ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করা একটি বৈশ্বিক অলাভজনক সংস্থার অধিকাংশ চুক্তি বাতিল হয়েছে।
  • UNAIDS চুক্তি:
    USAID-এর UNAIDS-এর সাথে থাকা চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

  • কর্মচারীদের প্রভাব:
    হাজারো কর্মী ছুটিতে পাঠানো হয়েছে এবং অনেকের ক্ষেত্রে পুনঃনিযুক্তির সুযোগ নেই।
  • সমালোচনামূলক মন্তব্য:
    আমেরিকান ফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িস (AFGE) এই পদক্ষেপকে “কঠোর, অসম্মানজনক ও পরিশ্রমী মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের যথাযথ সম্মান না দেওয়া” বলে সমালোচনা করে।
  • সেনেট বিদেশনীতি কমিটির উদ্বেগ:
    কমিটির ডেমোক্র্যাটরা এ পর্যালোচনাকে “গভীর সংস্কারের প্রচেষ্টা” না বলেই মন্তব্য করেন এবং রাষ্ট্রদূত মর্কো রুবিওকে কমিটির সম্মুখে হাজির হতে আহ্বান জানান। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, এই পদক্ষেপ চীন ও রাশিয়ার মত প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি করতে পারে।
  • বিশেষজ্ঞ মহল

 বিভিন্ন মিডিয়াতে দেয়া বক্তব্যে অনেক বিশেষজ্ঞ এবং ইউ এস এইডে কাজ করেছেন এমন অনেকে মন্তব্য করেছেন বা কলাম লিখেছেন, বিশ্বের সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্থ আমেরিকান এই প্রতিষ্ঠান শুধুই আমেরিকার জনগনের অর্থ অপচয় করতো। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আমেরিকার জনগন লাভবান হলো।

উপসংহার
ভবিষ্যতে, কংগ্রেসের পরামর্শে রাষ্ট্রদূত বিভাগ ও USAID বিদেশী সহায়তা বণ্টনের নীতি পুনর্গঠন করবে।

আমেরিকা ফাস্ট নীতি ও ইউএসএইড এর অধিকাংশ কর্মী বিদায়: বাঁচবে ৪.৪ বিলিয়ন ডলার

০৮:০০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ওয়াশিংটনে USAID-এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মীদের তাদের ব্যক্তিগত সামগ্রী নিতে একটি সংক্ষিপ্ত সময় দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় একদিন পরে, যখন ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা করে যে এজেন্সির বিদেশী সহায়তার চুক্তির ৯০% এরও বেশি কেটে ফেলা হবে।

ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও তার প্রভাব

  • বিদেশী সহায়তা স্থগিতকরণ:
    জানুয়ারিতে ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশী সহায়তা বিরত রাখার আদেশ দেন। তার লক্ষ্য ছিল “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সাথে মার্কিন করদাতাদের অর্থে পরিচালিত প্রকল্পগুলিকে সামঞ্জস্য করা।
  • USAID-এ বিশৃঙ্খলা:
    এই সিদ্ধান্তে USAID-এর কার্যক্রমে বিশাল গোলযোগ দেখা দেয়। বিশ্বব্যাপী খাদ্য, চিকিৎসা ও মানবতাবাদী সহায়তার নামে চলা তাদের  কার্যক্রম থেমে যায়।
  • ইলন মাস্কের নিয়োগ:
    ট্রাম্প বিলিয়নিয়ার উপদেষ্টা ইলন মাস্ককে USAID-এর অবকাঠামো ভেঙে ফেলার দায়িত্ব দেন, যা ফেডারেল বাজেটের অপচয় রোধে নেওয়া একটি পদক্ষেপ।

হেডকোয়ার্টারে কর্মীদের বিদায়

  • সংক্ষিপ্ত সময়ের সুযোগ:
    কর্মীদের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে তাদের ব্যক্তিগত সামগ্রী সংগ্রহের সুযোগ দেয়া হয়।
  • বিদায়ের মুহূর্ত:
    প্রায় ৮০ জন সহকর্মী ও সমর্থক জনসাধারণ তালি ও উল্লাস করে বিদায় জানান।
  • ব্যক্তিগত অনুভূতি:
    ৮ বছর বয়সী এক মেয়ে, যার পিতা ৩০ বছর পর অফিস ছাড়ছেন, হাতে হস্তনির্মিত সাইন নিয়ে বললেন, “আমি গর্বিত, বাবা,” আর আরেক হাতে মার্কিন পতাকা ধরে ছিলেন।
  • সমালোচনা:
    এই সংক্ষিপ্ত সময় দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অনেকেই অসন্মানজনক ও উদাসীন বলেছিলেন।

চুক্তি বাতিল ও কার্যক্রমে প্রভাব

  • চুক্তির পর্যালোচনা:
    USAID ৬,২০০টি বহু-বছরের চুক্তি পরীক্ষা করে প্রায় ৫,৮০০টি (যে চুক্তিগুলো কম মূল্যবান) বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
  • অনুদানের কাটা:
    মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিদেশী সহায়তার প্রায় ৩০% অনুদান, যার মূল্য ৪.৪ বিলিয়ন ডলার, কাটা হয়েছে।
  • বিচারকের হস্তক্ষেপ:
    এক ফেডারেল বিচারকের হস্তক্ষেপে ও অনুদানপ্রাপ্তদের সংবদ্ধ তহবিল মুক্তির আদেশে পর্যালোচনার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হলেও, প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস কিছু আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।
  • পেমেন্টে সমস্যা:
    USAID-এর উপ-প্রশাসক পিট মারোকো জানান, আদেশ অনুযায়ী সময়মতো পেমেন্ট করা কঠিন হবে, তবে ২৪ জানুয়ারির পূর্ববর্তী বৈধ ব্যয় পরিশোধ করা হবে।

মানবিক সহায়তায় ক্ষতি

  • HIV/AIDS প্রোগ্রাম:
    কিছু বৃহত্তম মার্কিন অর্থায়তাধীন HIV/AIDS প্রোগ্রাম দক্ষিণ আফ্রিকায় পুনরায় তহবিল চালু করতে পারেনি।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি:
    ম্যালেরিয়া, মাতৃসন্তান ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করা একটি বৈশ্বিক অলাভজনক সংস্থার অধিকাংশ চুক্তি বাতিল হয়েছে।
  • UNAIDS চুক্তি:
    USAID-এর UNAIDS-এর সাথে থাকা চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

  • কর্মচারীদের প্রভাব:
    হাজারো কর্মী ছুটিতে পাঠানো হয়েছে এবং অনেকের ক্ষেত্রে পুনঃনিযুক্তির সুযোগ নেই।
  • সমালোচনামূলক মন্তব্য:
    আমেরিকান ফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িস (AFGE) এই পদক্ষেপকে “কঠোর, অসম্মানজনক ও পরিশ্রমী মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের যথাযথ সম্মান না দেওয়া” বলে সমালোচনা করে।
  • সেনেট বিদেশনীতি কমিটির উদ্বেগ:
    কমিটির ডেমোক্র্যাটরা এ পর্যালোচনাকে “গভীর সংস্কারের প্রচেষ্টা” না বলেই মন্তব্য করেন এবং রাষ্ট্রদূত মর্কো রুবিওকে কমিটির সম্মুখে হাজির হতে আহ্বান জানান। তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, এই পদক্ষেপ চীন ও রাশিয়ার মত প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি করতে পারে।
  • বিশেষজ্ঞ মহল

 বিভিন্ন মিডিয়াতে দেয়া বক্তব্যে অনেক বিশেষজ্ঞ এবং ইউ এস এইডে কাজ করেছেন এমন অনেকে মন্তব্য করেছেন বা কলাম লিখেছেন, বিশ্বের সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্থ আমেরিকান এই প্রতিষ্ঠান শুধুই আমেরিকার জনগনের অর্থ অপচয় করতো। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে আমেরিকার জনগন লাভবান হলো।

উপসংহার
ভবিষ্যতে, কংগ্রেসের পরামর্শে রাষ্ট্রদূত বিভাগ ও USAID বিদেশী সহায়তা বণ্টনের নীতি পুনর্গঠন করবে।