সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. বাংলাদেশ সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা সীমিত করে পাঁচটি অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে।
২. ন্যাশনাল স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ পাঁচটি নির্ধারিত অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়ন ও সেবা নিশ্চিতের কাজ চলমান রয়েছে।
৩. BEZA বিনিয়োগকারীদের কর অব্যাহতি, ওয়ার্ক পারমিট এবং নাগরিকত্বের সুপারিশসহ বিভিন্ন প্রণোদনা সুবিধা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক এলাকা প্রতিষ্ঠার ব্যাপক পরিকল্পনা সীমিত করে শুধুমাত্র পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার বলছে, এর মূল উদ্দেশ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়ানো এবং দেশের অর্থনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলা।
পরিকল্পনার পটভূমি
২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহন করার পর আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোষণায় ২০১০ সালে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (ইজেড) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা চালু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল ১০ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রায় US$৪০ বিলিয়ন মূল্যের রপ্তানির জন্য উৎপাদন ভিত্তি গড়ে তোলা। তবে বাস্তবে পরিকল্পনার মাত্র অল্প অংশই কার্যকর করা হয়েছে।
নতুন অগ্রাধিকারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (BEZA) এর এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে পাঁচটি নির্বাচিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নির্বাচিত পাঁচটি অঞ্চল হল:
• চট্টগ্রামের ন্যাশনাল স্পেশাল ইকোনমিক জোন
• সিলেটের শ্রীহট্টা ইকোনমিক জোন
• নারায়ণগঞ্জের জাপানিজ ইকোনমিক জোন
• কক্সবাজারের মহেশখালী ইকোনমিক জোন
• জামালপুরের জামালপুর ইকোনমিক জোন
এই পাঁচটি অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রম ইতিমধ্যেই চলছে। আশিক চৌধুরী জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সড়ক যোগাযোগের সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
উদাহরণস্বরূপ, মীরসরাই অর্থনৈতিক এলাকা বা ন্যাশনাল স্পেশাল ইকোনমিক জোন ইতিমধ্যে উন্নয়নের বিভিন্ন ধাপে পৌঁছে গেছে। চট্টগ্রামের মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড, ফেনীর সোনাগাজিতে বিস্তৃত ৩৩,৮০০ একরে নির্মিত এই জোনে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে কয়েকটি কারখানায় ট্রায়াল উৎপাদন শুরু হয় এবং ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচটি কারখানা বাণিজ্যিক উৎপাদনে প্রবেশ করে।
প্রণোদনা ও বিনিয়োগের সুবিধাসমূহ
BEZA-act ২০১০-এর পর থেকে সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে ১০০টি অর্থনৈতিক এলাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও, বর্তমানে বিনিয়োগের সুবিধা হিসেবে কর ও কাস্টমস/এক্সাইজ শুল্ক অব্যাহতি, অ-আর্থিক প্রণোদনা, ওয়ার্ক পারমিট, স্থায়ী বাসস্থান বা নাগরিকত্বের সুপারিশ এবং কোন FDI সীমা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
এরই প্রেক্ষিতে এক্সপোর্ট-প্রসেসিং জোন (EPZ) প্রতিষ্ঠা বন্ধ করে বর্তমানে বাংলাদেশে ৮টি EPZ কার্যকর রয়েছে।