সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
১. জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২২.২৫ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দ চেয়েছে, যা গ্যাস ও তেল উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পে ব্যয় হবে।
২. বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে নতুন কূপ খনন, ভূকম্পন জরিপ, পাইপলাইন নির্মাণ এবং রিগ কেনাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
৩. অর্থ সংকট থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিকল্প তহবিলের উৎস খোঁজার পরিকল্পনা করছে সরকার।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ আগামী অর্থবছরের জন্য ২২.২৫ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছে। এই অর্থ মূলত গ্যাস ও তেল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন কূপ খনন, ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা এবং খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহৃত হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সম্প্রতি অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। বর্তমানে অর্থবিভাগ এই প্রস্তাবের বাস্তবসম্মত প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করছে।
বাজেট ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জ
অর্থ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “সরকার বর্তমানে উন্নয়ন তহবিলের মারাত্মক সংকটে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা অত্যন্ত কঠিন হবে।”
বরাদ্দের বিশদ বিবরণ
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য জ্বালানি বিভাগের চাহিদা নিম্নরূপ:
- ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ERL) ইউনিট-২ স্থাপনের জন্য ৩.০ বিলিয়ন টাকা।
- ভোলা-বরিশাল-খুলনা গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণে ২.০ বিলিয়ন টাকা।
- ভোলা জেলার পাঁচটি স্থানে কূপ খননে ১.০ বিলিয়ন টাকা।
- চরফ্যাশন, মনপুরা ও হাতিয়ায় ৩ডি ভূকম্পন জরিপের জন্য ২.০ বিলিয়ন টাকা।
- বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (BAPEX) সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১.০ বিলিয়ন টাকা।
- নতুন একটি রিগ কেনার জন্য ৬.০ বিলিয়ন টাকা।
- ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১.০ বিলিয়ন টাকা।
- বিস্ফোরক অধিদপ্তরের জন্য নতুন পরীক্ষাগার স্থাপন ও দক্ষতা উন্নয়নে ৫০০ মিলিয়ন টাকা।
- বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ৫০০ মিলিয়ন টাকা।
অনুমোদিত ও অপেক্ষমান প্রকল্প
ইতোমধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (ECNEC) চারটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে:
- ৬০ মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ফুট প্রতিদিন (MMSCFD) ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস প্রসেসিং প্ল্যান্ট নির্মাণে ১০০ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ।
- ব্লক ৭ ও ৯ এর ২ডি ভূকম্পন জরিপে ২০০ মিলিয়ন টাকা।
- রশিদপুর-১১ কূপ খননে ৫০০ মিলিয়ন টাকা।
- দুপিতিলা-১ ও কৈলাসটিলা-৯ কূপ খননে ১.২০ বিলিয়ন টাকা।
অর্থবিভাগ জানিয়েছে, আরও দুটি প্রকল্প ECNEC-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে:
- হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা গ্যাস ক্ষেত্রে ৩ডি ভূকম্পন জরিপের জন্য ৭৫০ মিলিয়ন টাকা।
- টিটাস ও বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্রে দুটি কূপ খননের জন্য ২.৫০ বিলিয়ন টাকা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। তবে অর্থসংস্থান নিয়ে চ্যালেঞ্জ থাকায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিকল্প তহবিলের উৎস খোঁজা হচ্ছে।