০২:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

হোয়াইট হাউস থেকে কিকড আউট হবার পরে কিং চার্লসের সঙ্গে দেখা করলেন জেলনেস্কি

  • Sarakhon Report
  • ১০:০০:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • 20

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি জরুরি ইউরোপীয় সম্মেলনে অংশ নেন। এই সম্মেলনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব মেরামতের ওপর জোর দিতে বলা হয়।

কিং চার্লসের সাথে সাক্ষাৎ

জরুরি সম্মেলন শেষে জেলেনস্কি হেলিকপ্টারে করে নরফোকের স্যান্ড্রিংহাম প্রাসাদে যান এবং সেখানে কিং চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কালো পোশাকে উপস্থিত জেলেনস্কিকে রাজা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে জানা গেছে, তাদের আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করা না হলেও, রাজা এর আগে ইউক্রেনের সাহসিকতার প্রশংসা ও রাশিয়ার “নির্দয় আগ্রাসনের” বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা বলেছেন।

হোয়াইট হাউস বৈঠকের পটভূমি

এই সাক্ষাতের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফর তীব্র উত্তেজনার মুখে পড়ে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না এবং রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে ট্রাম্পের শর্ত মেনে চলছেন না। উভয়ের মধ্যে বাদানুবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায় এবং কোনো সমঝোতা ছাড়াই জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ইউরোপীয় নেতাদের ভূমিকা

লন্ডনে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ইউক্রেনের সাফল্য শুধু ইউরোপ নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানান। তার মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন এড়াতে ইউক্রেনের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকা।

শান্তি আলোচনা ও নতুন উদ্যোগ

সম্মেলন শেষে ব্রিটেন ও ফ্রান্স মিলিতভাবে একটি একমাস মেয়াদি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। এটি মূলত স্থলযুদ্ধ অব্যাহত রাখলেও সমুদ্র ও আকাশপথের সংঘাত বন্ধ করার চেষ্টা করবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরোঁ জানান, বিশাল ফ্রন্টলাইনে এ ধরনের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করা কঠিন হলেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে ইউরোপীয় কোনো দেশের সৈন্য নিকট ভবিষ্যতে ইউক্রেনে পাঠানোর পরিকল্পনা নেই।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে মজবুত নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। তিনি এও সতর্ক করেন যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে গেলে পশ্চিমা ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পুনরায় যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান, যা সাধারণত কোনো প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদে দেওয়া হয় না। ২০১৯ সালের ট্রাম্পের সফরকে “বড় সাফল্য” হিসেবে গণ্য করে এবার তাকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে।

এভাবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টি ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরোধ ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর সম্মিলিত অবস্থানকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

২০২৫ সালে ফিলিপাইনের ১২টি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প: রিয়েল এস্টেটের রূপান্তর

হোয়াইট হাউস থেকে কিকড আউট হবার পরে কিং চার্লসের সঙ্গে দেখা করলেন জেলনেস্কি

১০:০০:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত একটি জরুরি ইউরোপীয় সম্মেলনে অংশ নেন। এই সম্মেলনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব মেরামতের ওপর জোর দিতে বলা হয়।

কিং চার্লসের সাথে সাক্ষাৎ

জরুরি সম্মেলন শেষে জেলেনস্কি হেলিকপ্টারে করে নরফোকের স্যান্ড্রিংহাম প্রাসাদে যান এবং সেখানে কিং চার্লস তৃতীয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কালো পোশাকে উপস্থিত জেলেনস্কিকে রাজা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে জানা গেছে, তাদের আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করা না হলেও, রাজা এর আগে ইউক্রেনের সাহসিকতার প্রশংসা ও রাশিয়ার “নির্দয় আগ্রাসনের” বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কথা বলেছেন।

হোয়াইট হাউস বৈঠকের পটভূমি

এই সাক্ষাতের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফর তীব্র উত্তেজনার মুখে পড়ে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না এবং রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে ট্রাম্পের শর্ত মেনে চলছেন না। উভয়ের মধ্যে বাদানুবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায় এবং কোনো সমঝোতা ছাড়াই জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ইউরোপীয় নেতাদের ভূমিকা

লন্ডনে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ইউক্রেনের সাফল্য শুধু ইউরোপ নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানান। তার মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন এড়াতে ইউক্রেনের উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকা।

শান্তি আলোচনা ও নতুন উদ্যোগ

সম্মেলন শেষে ব্রিটেন ও ফ্রান্স মিলিতভাবে একটি একমাস মেয়াদি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। এটি মূলত স্থলযুদ্ধ অব্যাহত রাখলেও সমুদ্র ও আকাশপথের সংঘাত বন্ধ করার চেষ্টা করবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরোঁ জানান, বিশাল ফ্রন্টলাইনে এ ধরনের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করা কঠিন হলেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে ইউরোপীয় কোনো দেশের সৈন্য নিকট ভবিষ্যতে ইউক্রেনে পাঠানোর পরিকল্পনা নেই।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেনে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে মজবুত নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে হবে। তিনি এও সতর্ক করেন যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে গেলে পশ্চিমা ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পুনরায় যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে আসার আমন্ত্রণ জানান, যা সাধারণত কোনো প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদে দেওয়া হয় না। ২০১৯ সালের ট্রাম্পের সফরকে “বড় সাফল্য” হিসেবে গণ্য করে এবার তাকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে।

এভাবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টি ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরোধ ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর সম্মিলিত অবস্থানকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।