১১:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে সরু চালের দাম বেড়েছে বস্তায় ২০০ টাকা

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • 25

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • দেশে চালের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার প্রধান কারণ বন্যা ও চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত উৎপাদন
  • সরকারি মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে
  • বড় কোম্পানিগুলোর চালের বাজারে প্রবেশের কারণে সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে
  • আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ভালো মানের দেশী সরু চালের কদর বেশি থাকায় দাম এখনো বেশি

দেশে গত এক বছর ধরে চালের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। বন্যার প্রভাব এবং চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত উৎপাদন না হওয়ায় বাজারে চালের সংকট দিন দিন বেড়েছে। সরকার আমদানি বাড়িয়েও বাজার নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আসার পরও, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ৫০ কেজির একটি দেশী সরু চালের বস্তায় ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি মূল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সময়ে আমদানিকৃত চালের দাম সামান্য কমেছে।

আমদানি ও দেশী চালের তুলনা

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা ২৫ কেজির এক বস্তা স্বর্ণা সেদ্ধ চাল ২,৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে একই জাতের দেশী চাল ২,৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

  • আমদানি করা নাজিরশাইল সেদ্ধ চালের দাম মানভেদে প্রতি বস্তা ১,৮০০–১,৯০০ টাকা
  • দেশী নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ২,০০০–২,৫০০ টাকায়

অপরদিকে, আমদানি করা আতপ পাইজাম প্রতি বস্তা ১,৪০০ টাকায় এবং সেদ্ধ কাটারি চাল ১,৯০০–২,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে)। দেশী সেদ্ধ কাটারি চাল ১,৮৫০–১,৯০০ টাকায় এবং দেশী পাইজাম ১,৩২০–১,৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশী চালের স্বাদ ভালো হলেও দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় আমদানিকৃত চালের বিক্রি বাড়ছে। তবু স্বাদ ও স্বল্প সরবরাহের কারণে দেশী চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে দেশী চালের চাহিদা বেশি।

বাজার পরিস্থিতি

নওগাঁর একজন চাল ব্যবসায়ী জানান, দেশে চালের চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ছে, কিন্তু বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদন সে তুলনায় বাড়ছে না। এদিকে বড় কোম্পানিগুলো চালের বাজারে প্রবেশ করায় সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। এতে বাজার বারবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি বাড়ালেও সরু চালের দাম এখনো বেশি থাকে, কারণ ভোক্তারা সাধারণত ভালো মানের সরু চালকেই বেশি গুরুত্ব দেন।

সরকারি মজুদ ও আমদানি উদ্যোগ

ব্যবসায়ীদের ভাষ্যে, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ভালো মানের দেশী সরু চালের কদর এখনো বেশি। ফলে এর দাম উচ্চ স্তরেই রয়ে গেছে। সরকারিভাবে মজুদ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ চলমান। খাদ্য বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্যের মোট মজুদ ছিল ১৫ লাখ ৯ হাজার ৬৪৭ টন। এর মধ্যে চাল ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৮০৪ টন, ধান ১২ হাজার ৫০৬ টন এবং গম ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫৩২ টন।

ভবিষ্যৎ চাহিদা ও সংকট নিরসনের চেষ্টা

চাল সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি মোকাবেলায় সরকার বেসরকারি পর্যায়ে ১৪ লাখ ৮১ হাজার টন চাল আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে। প্রথমে ১০ থেকে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে এই আমদানি কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা থাকলেও, পরে সময়সীমা বাড়ানো হয়। তবু সরু চালের দাম এখনো উঁচু পর্যায়ে রয়েছে।

চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে সরু চালের দাম বেড়েছে বস্তায় ২০০ টাকা

০৩:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • দেশে চালের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার প্রধান কারণ বন্যা ও চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত উৎপাদন
  • সরকারি মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে এবং বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে
  • বড় কোম্পানিগুলোর চালের বাজারে প্রবেশের কারণে সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে
  • আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ভালো মানের দেশী সরু চালের কদর বেশি থাকায় দাম এখনো বেশি

দেশে গত এক বছর ধরে চালের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। বন্যার প্রভাব এবং চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত উৎপাদন না হওয়ায় বাজারে চালের সংকট দিন দিন বেড়েছে। সরকার আমদানি বাড়িয়েও বাজার নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আসার পরও, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ৫০ কেজির একটি দেশী সরু চালের বস্তায় ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি মূল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সময়ে আমদানিকৃত চালের দাম সামান্য কমেছে।

আমদানি ও দেশী চালের তুলনা

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা ২৫ কেজির এক বস্তা স্বর্ণা সেদ্ধ চাল ২,৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে একই জাতের দেশী চাল ২,৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

  • আমদানি করা নাজিরশাইল সেদ্ধ চালের দাম মানভেদে প্রতি বস্তা ১,৮০০–১,৯০০ টাকা
  • দেশী নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ২,০০০–২,৫০০ টাকায়

অপরদিকে, আমদানি করা আতপ পাইজাম প্রতি বস্তা ১,৪০০ টাকায় এবং সেদ্ধ কাটারি চাল ১,৯০০–২,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে)। দেশী সেদ্ধ কাটারি চাল ১,৮৫০–১,৯০০ টাকায় এবং দেশী পাইজাম ১,৩২০–১,৩৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশী চালের স্বাদ ভালো হলেও দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় আমদানিকৃত চালের বিক্রি বাড়ছে। তবু স্বাদ ও স্বল্প সরবরাহের কারণে দেশী চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে দেশী চালের চাহিদা বেশি।

বাজার পরিস্থিতি

নওগাঁর একজন চাল ব্যবসায়ী জানান, দেশে চালের চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ছে, কিন্তু বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে উৎপাদন সে তুলনায় বাড়ছে না। এদিকে বড় কোম্পানিগুলো চালের বাজারে প্রবেশ করায় সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। এতে বাজার বারবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। সরকার বিদেশ থেকে চাল আমদানি বাড়ালেও সরু চালের দাম এখনো বেশি থাকে, কারণ ভোক্তারা সাধারণত ভালো মানের সরু চালকেই বেশি গুরুত্ব দেন।

সরকারি মজুদ ও আমদানি উদ্যোগ

ব্যবসায়ীদের ভাষ্যে, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ভালো মানের দেশী সরু চালের কদর এখনো বেশি। ফলে এর দাম উচ্চ স্তরেই রয়ে গেছে। সরকারিভাবে মজুদ বাড়াতে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ চলমান। খাদ্য বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্যের মোট মজুদ ছিল ১৫ লাখ ৯ হাজার ৬৪৭ টন। এর মধ্যে চাল ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৮০৪ টন, ধান ১২ হাজার ৫০৬ টন এবং গম ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫৩২ টন।

ভবিষ্যৎ চাহিদা ও সংকট নিরসনের চেষ্টা

চাল সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি মোকাবেলায় সরকার বেসরকারি পর্যায়ে ১৪ লাখ ৮১ হাজার টন চাল আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে। প্রথমে ১০ থেকে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে এই আমদানি কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা থাকলেও, পরে সময়সীমা বাড়ানো হয়। তবু সরু চালের দাম এখনো উঁচু পর্যায়ে রয়েছে।