সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- এনবিআরের মধ্যে একটি গবেষণা ইউনিট স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে
- বাংলাদেশের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য কর সংস্কার অপরিহার্য
- ভ্যাট হার প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি, যা শিল্প ও বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে
- কর ফাঁকি প্রতিরোধ করা গেলে ৫০,০০০ কোটি থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব
বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে উচ্চ করের বোঝার কারণে। দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানির উচ্চপদস্থ নির্বাহীরা মনে করেন, কর হার কমালে ও নীতিতে স্থিতিশীলতা আনলে ব্যবসা প্রসারিত হবে এবং নতুন বিনিয়োগ আসবে।
উচ্চ কর অনেক ক্ষেত্রে কর ফাঁকির প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। তাই, ব্যবসা-বান্ধব কর নীতি গঠনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ব্যবসায়ীদের নিয়মিত সংলাপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কর নীতি সংস্কারের প্রস্তাব
ব্যবসায়িক নেতারা এনবিআরের মধ্যে একটি গবেষণা ইউনিট স্থাপনের সুপারিশ করেছেন, যা বাজারের অবস্থা বিশ্লেষণ করে আরও কার্যকর কর নীতি তৈরি করতে সাহায্য করবে।
তারা আরও পরামর্শ দিয়েছেন যে, কর ব্যবস্থাকে পূর্বানুমানযোগ্য ও সহজ করতে হবে যাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
এনবিআরের প্রতিক্রিয়া ও কর সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান মিডিয়াকে বলেছেন, কর ব্যবস্থার প্রধান সমস্যা হচ্ছে দুর্বল শাসনব্যবস্থা ও জবাবদিহিতার অভাব।
তিনি জানান, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে কর প্রশাসনের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে কর ফাঁকি কমবে এবং কর সংগ্রহ বাড়বে। তার মতে, কর ফাঁকি প্রতিরোধ করা গেলে ৫০,০০০ কোটি থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব।
শিল্প ও ব্যবসায়ীদের মতামত
- মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মন্তব্য– বাংলাদেশের ভ্যাট হার প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি, যা শিল্প ও বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে।
- ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকোর কর্মকর্তার মন্তব্য – তামাক খাত মোট কর রাজস্বের ১২% অবদান রাখে। কিন্তু অতিরিক্ত কর বৃদ্ধির ফলে ৪.৪ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়তে পারে।
কর নীতি সংস্কারের সুপারিশ
- পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের গবেষণা – বাংলাদেশের ৩২.৫% কর্পোরেট কর হার ভারত (২৫%) ও শ্রীলঙ্কার (২৪%) তুলনায় বেশি, যা বিনিয়োগ ও কর অনুগত্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
- গবেষণা প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে:
- কর নীতি সহজীকরণ
- স্বয়ংক্রিয় কর ব্যবস্থা চালু
- কর ফাঁকি কমাতে সমন্বিত কর কোড চালু
উপসংহার
বাংলাদেশের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য কর সংস্কার অপরিহার্য। কর হার যৌক্তিকভাবে কমানো ও কর প্রশাসন ডিজিটালাইজড করা গেলে কর ফাঁকি হ্রাস পাবে এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।