সারাক্ষণ রিপোর্ট
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে “বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর ক্ষমতায়নঃ টেকসই উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত কর” শিরোনামের আলোচনা সভায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের অবহেলাকে চিহ্নিত করে নতুন পরিবর্তনের দাবি উঠানো হয়। এই কর্মসূচি আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন ও বিডাব্লিউজিইডি এবং সিএসডিএফ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল সারাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে নারীদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রধান বক্তব্য ও দাবিসমূহ
- নারীদের ভূমিকা ও ক্ষতি:
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির প্রায় ৪৬ শতাংশ নারীদের দ্বারা ব্যবহৃত হলেও, আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
- পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নারীদের অবহেলা:
চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সুলতানা পারু বলছেন, নারীরা জ্বালানি খাতের পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন, উৎপাদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বঞ্চিত। জমির মালিকানার সীমাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নারীদের পরামর্শ প্রক্রিয়ায় কেবল ‘সুবিধাভোগী’ হিসেবে বিবেচনা করে, সক্রিয় নীতিনির্ধারক হিসেবে নয়। - স্বাস্থ্যগত প্রভাব ও নিরাপত্তা সমস্যা:
প্রকল্প সমন্বয়কারী শাম্পা কে নাহার জানান, জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে নির্গত বিষাক্ত ধাতুর কারণে নারীরা মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা ও চলাচলের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়াও, নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন বিষয়গুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
আলোচনার অন্যান্য দিক
- আলোচনায় অংশগ্রহণকারী:
আলোচনা সভায় বিভিন্ন প্রখ্যাত সাংবাদিক, নারী নেতা ও সমাজসেবক উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই নারীদের জন্য সহজে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন এবং জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব থেকে নারীদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
- সরকারের প্রতি আহ্বান:
প্রচারাভিযানের কর্মীরা জোর দিয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে উদ্ভূত স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং নারীদের বিশেষ প্রয়োজনগুলোর প্রতি যথাযথ দৃষ্টি দেওয়া হয়।
উপসংহার
আলোচনা সভা স্পষ্ট করে তুলেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীদের সম্পূর্ণ ও সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারী ক্ষমতায়ন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের সকল পর্যায়ে নারীদের যুক্ত করা প্রয়োজন।