সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) ১ এপ্রিল থেকে খাদ্য ভাতা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে
- খাদ্য ও চিকিৎসা সেবার অভাবে সামাজিক ও মানসিক চাপ বাড়বে
- এই সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে শরণার্থীদের জীবনযাত্রায় গুরুতর প্রভাব পরবে, এবং তাদের আর্থ-সামাজিক ও মানসিক চাপের সম্মুখীন হতে হবে
বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ আগামী মাস থেকে অর্ধেক করে কমানো হবে—একটি সিদ্ধান্ত যা এক মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থীর পুষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
খাদ্য সহায়তার হ্রাস: ঘোষণার বিস্তারিত
- পরিকল্পনার সূত্রপাত:
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরবর্তী মাস থেকে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ভাতা অর্ধেক করা হবে। - অফিসিয়াল নির্দেশনা:
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারির নির্বাহী আদেশে USAID-এর তহবিল স্থগিত করে ৯০ দিনের জন্য পুনঃমূল্যায়ন করা হয়। - WFP-এর ঘোষণা:
বিশ্ব খাদ্য প্রোগ্রাম (WFP) জানিয়েছে যে ১লা এপ্রিল থেকে কক্সবাজার ক্যাম্পগুলিতে খাদ্য ভাতা কমে যাবে।
৩. রোহিঙ্গাদের ওপর প্রভাব
- নিয়মিত সহায়তার পরিমাণ হ্রাস:
পূর্বে মাসিক $১২.৫০ থেকে কমে $৬ করা হয়েছে, যা শরণার্থীদের পুষ্টির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। - সামাজিক ও মানসিক চাপ:
খাদ্য সহায়তার হ্রাস পুষ্টিহীনতার সমস্যা এবং জীবিকার নানা অভাবের কারনে শরণার্থীদের মধ্যে সামাজিক ও মানসিক চাপ বাড়াবে। - চিকিৎসা ও অন্যান্য সেবার অভাব:
চিকিৎসা সহায়তাও কমে যাচ্ছে; জরুরি অবস্থার বাইরে ওষুধ প্রদান এখন প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে সীমিত।
পটভূমি ও প্রেক্ষাপট
- শরণার্থীদের আগমন:
আগস্ট ২০১৭ থেকে প্রায় ৭০০,০০০ মুসলিম রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সামরিক অপারেশনের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। - নাগরিকত্ব ও অধিকার হরণ:
মিয়ানমারের বৌদ্ধ প্রধান দেশের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে এই সম্প্রদায়কে বঞ্চিত করা হয়েছে। - সশস্ত্র সংঘর্ষ:
২০২১ সালে সামরিক শাসনের পরে দেশে ব্যাপক গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয় যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। - আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশ দাবি করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে, যেখানে আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সরকারের ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিক্রিয়া
- বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান:
অতিরিক্ত শরণার্থী সহায়তার ওপর তহবিল হ্রাসের কারণে অন্যান্য প্রকল্প স্থগিত হলেও রোহিঙ্গাদের সহায়তার প্রবাহ বজায় থাকবে। - USAID-এর ভূমিকা:
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রধান দাতা হিসেবে কাজ করে, যা ২০২৪ সালে প্রায় $৩০০ মিলিয়ন সহায়তা প্রদান করেছিল। - প্রতিক্রিয়ার প্রভাব:
শরণার্থী সহায়তা কমে যাওয়ার ফলে রোহিঙ্গাদের জীবিকা ও সেবা ব্যবস্থায় নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে।
শরণার্থীদের প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
- আর্থিক অসুবিধা:
৪০ বছর বয়সী মনজুর আহমেদ জানান, কম হওয়া ভাতার কারণে পরিবার চালানোর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। - স্বাস্থ্যসেবার অভাব:
৩২ বছর বয়সী দিলদার বেগম বলেন, হাসপাতালের সাধারণ চিকিৎসা সেবাও এখন সীমিত হয়ে পড়েছে, যা জরুরি অবস্থার বাইরে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।
উপসংহার
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হ্রাসের ফলে কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনযাত্রায় গুরুতর প্রভাব পড়বে। খাদ্য ভাতার কমে যাওয়া, চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য সহায়তার অভাবে শরণার্থীরা আর্থ-সামাজিক ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছেন।