সারাক্ষণ রিপোর্ট
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ব্র্যাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে চূড়ান্ত পর্বের জমকালো আসরের মাধ্যমে। এবারের উৎসবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্র্যাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জলঢাকা (নীলফামারী) এবং রানার আপ হয়েছে ব্র্যাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)।
চূড়ান্ত পর্ব ও বিতর্কের বিষয়
- চূড়ান্ত পর্বটি অনুষ্ঠিত হয় সোমবার, ১০ই মার্চ মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে।
- বিতর্কের মূল বিষয় ছিল: “নারীর ক্ষমতায়নে প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের চাইতে নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ”।
- প্রতিযোগীরা তথ্য-উপাত্ত, বাস্তব উদাহরণ এবং যৌক্তিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে প্রতিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে।
- আমন্ত্রিত অতিথি, বিচারক এবং দর্শকরা দলগুলোর প্রাণবন্ত যুক্তি-পাল্টা যুক্তি উপভোগ করেন।
অতিথি ও বিচারকমণ্ডলী
- অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক মৌটুসী কবীর এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান।
- প্রতিযোগিতার সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট বিতার্কিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার।
- বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের সদস্যরা বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।
- সমাপনীতে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেওয়া হয়; পাশাপাশি শ্রেষ্ঠ বক্তাকেও পুরস্কৃত করা হয়।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য
- মৌটুসী কবীর বিতার্কিকদের উদ্দেশে বলেন, “শুধু বিতর্কে সীমাবদ্ধ না থেকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে—বিশেষ করে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং যে কোনো অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে—সোচ্চার হতে হবে।”
- সাফি রহমান খান শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি বিতর্কের মতো কার্যক্রমে অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তিনি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকমণ্ডলীর সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন।”
- ডা. আব্দুন নূর তুষার অংশগ্রহণকারীদের বলেন, “শুধু তথ্য উপস্থাপন না করে, চিন্তাভাবনাকে যুক্তি ও তর্কের মাধ্যমে তুলে ধরার দক্ষতা বাড়াতে হবে।”
অংশগ্রহণ ও আয়োজন
- দেশব্যাপী ১৩টি ব্র্যাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৬১৩ জন শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
- এর মধ্যে ৫৮ শতাংশই ছিলেন মেয়ে শিক্ষার্থী, যা নারী অংশগ্রহণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
- পুরো আয়োজন তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়:
- প্রতিটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক রাউন্ড।
- আন্তঃবিদ্যালয় প্রতিযোগিতা ও জেলাভিত্তিক সেমিফাইনাল।
- কেন্দ্রীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত পর্ব, যেখানে সেরা দুটি দল চূড়ান্ত মঞ্চে মুখোমুখি হয়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী চিন্তাভাবনা ও আত্মপ্রকাশের দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই বিতর্ক উৎসব আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে দেশের আরও বেশি শিক্ষার্থী যুক্তিতর্কের মাধ্যমে নিজেদের সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ পায়।