চার্লস হসকিনসন
মার্কো রুবিও মনে করেন যে ১৯৫৬ সালে তার বাবা-মায়ের কিউবা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন করার সিদ্ধান্তের কারণেই তিনি “বিশ্বের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ জাতির নাগরিক হয়ে জন্মগ্রহণ করার সৌভাগ্য” লাভ করেছিলেন। রুবিওর বাবা কাজ করতেন ভোজসভায় বারটেন্ডার হিসেবে, আর তার মা হোটেলে ওয়েটারের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি গৃহিণীর ভূমিকাও পালন করতেন।
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সেনেট রুবিওকে ৯৯-০ ভোটে ঐতিহাসিকভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করে। মিয়ামিতে জন্মগ্রহণ করা রুবিও শপথ গ্রহণ করেন এমন এক পদে, যা থমাস জেফারসন থেকে শুরু করে বহু ঐতিহ্য বহন করে আসছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার হিস্পানিক আমেরিকান সরকারি পদ।
২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি সেনেট ফরেন রিলেশনস কমিটিতে নিজের নিশ্চয়ন শুনানিতে রুবিও বলেন, তিনি আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দেশের মূল জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই,” তিনি বলেন। “বিদেশনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে [প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প] যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তা স্পষ্ট। আমাদের ব্যয় করা প্রতিটি ডলার, অর্থায়ন করা প্রতিটি কর্মসূচি, অনুসরণ করা প্রতিটি নীতি—সবকিছুর সপক্ষে আমাদের এই তিনটি প্রশ্নের জবাব থাকতে হবে: এটি কি আমেরিকাকে নিরাপদ রাখে? এটি কি আমেরিকাকে শক্তিশালী করে? এটি কি আমেরিকাকে আরও সমৃদ্ধ করে?”
২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর নর্থ ক্যারোলিনায় এক নির্বাচনী সমাবেশে, তখনকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প তখনকার সিনেটর মার্কো রুবিওকে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হওয়ার আগে রুবিও তার তৃতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র সেনেটে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১১ সাল থেকে ফ্লোরিডার প্রতিনিধিত্ব করা রুবিও সেনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং সেনেট সিলেক্ট কমিটি অন ইন্টেলিজেন্স-এর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ফ্লোরিডার একজন সিনেটর হিসেবে তিনি বহু দেশে সফর করেছেন এবং অগণিত বিদেশি নেতার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থে।
চীনের বিরুদ্ধে রুবিওর গুরুত্বপূর্ণ দ্বিদলীয় আইনের প্রচেষ্টা রয়েছে, যার মাধ্যমে চীনা সরকারের উইঘুর সম্প্রদায় এবং হংকং-এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি গড়ে তুলতেও তিনি মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন, বিশেষ করে ভেনেজুয়েলার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং কিউবান শাসকগোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারিতে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে।
বহু বছর ধরে রুবিও দ্বিদলীয়ভাবে মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন পুনর্নবায়নের আইনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরে প্রবেশের আগে রুবিও ফ্লোরিডার ওয়েস্ট মিয়ামি সিটির কমিশনার এবং ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রুবিও ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং মিয়ামি স্কুল অব ল থেকে আইনের ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ও তার স্ত্রী জিনেটের চারটি সন্তান রয়েছে।
Leave a Reply