সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- শিক্ষার্থীদের বিদেশে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়
- এনবিআরের ট্যাক্স ইন্টেলিজেন্স ও ইনভেস্টিগেশন ইউনিট প্রায় ৫০,০০০ ফাইল সংগ্রহ করেছে
- এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কীভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্থানান্তরিত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে
- প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যায়।
- এর মধ্যে প্রায় ৬০% শিক্ষার্থী বাংলাদেশে খুলে থাকা স্টুডেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করে।
প্রধান তথ্য ও উদ্বেগ
- একটি তথ্যানুসারে জানা গেছে, এক ব্যক্তি তার ছেলের টিউশন ফি বাবদ বিদেশে ৪০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন।
- তবে এনবিআরের সূত্র মতে, এই রকম বড় পরিমাণ অর্থ একক ব্যক্তির নয়, বরং একাধিক ব্যক্তির মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
- এত বিপুল অর্থ কিভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্থানান্তরিত হয়েছে, তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।
ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক লেনদেন প্রক্রিয়া
- কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া:
- শিক্ষার্থীদের জন্য বিদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে বহু স্তরে যাচাই করতে হয়।
- শিক্ষার্থীদের নাম, ব্যাংক একাউন্ট ও লেনদেনের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয় এবং মাসিক পর্যবেক্ষণ করা হয়।
- ব্যতিক্রম ও অনুমোদন:
- সাধারণত শিক্ষার্থীদের একাউন্ট খুলতে ব্যাংকের অনুমোদন লাগে না।
- তবে, ডিপ্লোমা কোর্স, স্কুল পর্যায়ের প্রশিক্ষণ বা অনলাইন প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন।
বিদেশি খরচের পরিমাণ
- বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক টিউশন ফি সাধারণত ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ মার্কিন ডলার।
- জীবনযাত্রার খরচও এ ধরণের হওয়ায়, মোট খরচ প্রায় ৬০,০০০ মার্কিন ডলারের আশেপাশে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১.৫ থেকে ২ কোটি টাকার মধ্যে হতে পারে।
সন্দেহভাজন লেনদেন ও তদন্ত
- অস্বাভাবিক লেনদেন:
- একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংকের নির্বাহী ৪০০ কোটি টাকার লেনদেনকে “অস্বাভাবিক” বলে মন্তব্য করেছেন।
- তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের অর্থ সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে জমা হয়, তাই কোন ধরনের অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও জড়িত থাকতে হবে।
- তদন্তের অগ্রগতি:
- প্রায় এক মাস আগে এনবিআর দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে চিঠি পাঠিয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে শিক্ষার্থী একাউন্টগুলোর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।
- এনবিআরের ট্যাক্স ইন্টেলিজেন্স ও ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এখন পর্যন্ত ৫টি ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০,০০০ ফাইল সংগ্রহ করেছে।
- এই ফাইলগুলোর মধ্যে আনুমানিক ৫০০টি বড় লেনদেন নিয়ে বিশেষভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
- ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা:
- বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকলে, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই রকম বিশাল অর্থ পাচারের সুযোগ তৈরি করতে পারেন।
- তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের পূর্বের জালিয়াতির উদাহরণও তুলে ধরেন, যেখানে ব্যাক্তিগত স্বার্থে বৈদেশিক মুদ্রার অপ্রচলিত ব্যবহার হয়েছে।
উপসংহার
- বর্তমান সময়ে ৪০০ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদারকি ও তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
- তদন্ত সম্পূর্ণ হলে, পুরো তথ্য ও ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।