সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- আমদানি করা চালের মান ও বাজারে প্রভাব এবং রমজানে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে চালের দাম বেড়েছে
- রমজানে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাচ্ছেন
- ব্যবসায়ীরা আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন, আর সরকার বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে
- দেশে ধানের উচ্চমূল্য, রমজানে চাহিদা বৃদ্ধি, মিলগুলোর উৎপাদন সংকট ও আমদানিকৃত চালের মানজনিত কারণে চালের দাম বেড়েছে
চালের দাম বৃদ্ধির চিত্র
গত বছর রমজানে যশোর ও কুষ্টিয়ার বেশ কয়েকটি মোকামে সরু চালের কেজি ৬২-৬৪ টাকা ছিল। বর্তমানে এই দাম বেড়ে ৮০-৮১ টাকায় পৌঁছেছে, যা প্রতি কেজিতে অন্তত ১৭ টাকা বেশি। একইভাবে মাঝারি ও মোটা চালের দামও বেড়েছে।

রমজানের মধ্যে কয়েক দফায় চালের দাম বাড়ছে। মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২-৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো ধান বাজারে না আসা পর্যন্ত এই দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
চালের দাম বৃদ্ধির কারণ
১. ধানের উচ্চ মূল্য:
- মিল মালিকদের মতে, দেশে আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম কমেনি।
- উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে সরু জাতের ধান মণপ্রতি ২,১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা রেকর্ড মূল্য।
- মোটা ধানের দামও কম নয়—১,৪০০ টাকা মণ।
২. আমদানি করা চালের মান ও বাজারে প্রভাব:
- আমদানি করা সরু চাল বাজারে ৭১ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু মান ভালো নয়।
- কিছু মিল মালিক আমদানিকৃত চালের বস্তা পরিবর্তন করে মিনিকেট নামে বেশি দামে বিক্রি করছেন, ফলে বাজারে মূল্য কমছে না।

৩. রমজানে চাহিদা বৃদ্ধি:
- পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।
- ২৫ কেজির এক বস্তা চালের দাম ৬০ টাকা বেড়েছে, এবং আগের তুলনায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
বাজার পরিস্থিতি ও চালকলগুলোর অবস্থা
- বর্তমানে মাঝারি মানের চাল ৬২-৬৬ টাকা, মোটা চাল ৫৫-৫৮ টাকা, এবং একেবারে মোটা চাল ৫০-৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
- ধানের সংকটের কারণে এসব এলাকায় ৬০% মিল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বৈশাখের আগে আরও ১০-১৫% মিল সাময়িক বন্ধ হতে পারে।
- নতুন বোরো ধান বাজারে এলে মিলগুলো পুনরায় চালু হতে পারে।
দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শ
১. চাল আমদানির পরিমাণ বাড়ানো:

- চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেছেন, দেশের বাজারে ধান ২,১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হওয়ায় চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তাই আমদানির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
২. বাজার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ:
- জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আল ওয়াজিউর রহমান জানিয়েছেন, বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
- অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
- সরকার খোলাবাজারে কম দামে চাল বিক্রির পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
উপসংহার
দেশে ধানের উচ্চমূল্য, রমজানে চাহিদা বৃদ্ধি, মিলগুলোর উৎপাদন সংকট ও আমদানিকৃত চালের মানজনিত কারণে চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন, আর সরকার বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে। তবে নতুন বোরো ধান বাজারে আসার পর পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
Leave a Reply