০৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ: দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন পরিকল্পনা

  • Sarakhon Report
  • ০৫:২০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • 34

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল রাখতে এবং সংকটাপন্ন ব্যাংকগুলোর অবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খেলাপি ঋণ, অনিয়ম এবং তারল্য সংকটের কারণে এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

প্রধান সমস্যা

খেলাপি ঋণের উচ্চ পরিমাণ

বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ৩.৪৫ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর অতিরিক্ত ঋণ নির্ভরতা

কিছু ব্যাংক তাদের ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি একটি নির্দিষ্ট শিল্পগোষ্ঠীকে দিয়েছে। একইসঙ্গে, ব্যাংকের অন্যান্য আমানতও ওই গোষ্ঠীর সহগোষ্ঠীর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

সম্পদ ও দায়ের ভারসাম্যহীনতা

অনেক ব্যাংকের সম্পদের তুলনায় তাদের দায় অনেক বেশি, ফলে তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে।

নতুন আইন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বৃদ্ধি

বাংলাদেশ সরকার ব্যাংক রেজোলিউশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫ নামের নতুন আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই আইনের প্রধান দিকগুলো:
বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো সময় দুর্বল ব্যাংকের শেয়ারসম্পদ ও দায় স্থানান্তর করতে পারবে।
আমানতের নিরাপত্তা ও ব্যাংকের তারল্য সংকট মোকাবিলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্য কোনো প্রচলিত আইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হলে এই নতুন আইনের বিধানগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ব্রিজ ব্যাংক’ ধারণা

নতুন আইনে ব্রিজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বিপদগ্রস্ত ব্যাংকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে পরিচালনা করতে পারবে। এটি একীভূতকরণ, লিকুইডেশন বা পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ও ঋণ সহায়তা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, এই সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলো নিয়ম না মেনে ঋণ দেওয়ার কারণে তাদের আদায়ের হার অত্যন্ত কম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক বারবার তারল্য সহায়তা দিচ্ছে, যা একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়।

দুর্বল ব্যাংকগুলোর তালিকা (২০২৪ সালের নভেম্বরে চিহ্নিত)

নিম্নোক্ত ব্যাংকগুলোকে দুর্বল হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে:

  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
  • সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
  • ইউনিয়ন ব্যাংক
  • গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
  • ন্যাশনাল ব্যাংক
  • এক্সিম ব্যাংক
  • আইসিবি ইসলামী ব্যাংক
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
  • এনআরবি ব্যাংক
  • পদ্মা ব্যাংক

তবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখাচ্ছে, কারণ তাদের গ্রাহকভিত্তি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।

ব্যর্থতার কারণ

বড় পরিমাণে খেলাপি ঋণ
পর্যাপ্ত তারল্যের অভাব
দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক অনিয়ম
দুর্নীতি ও বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২২৮)

বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ: দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন পরিকল্পনা

০৫:২০:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল রাখতে এবং সংকটাপন্ন ব্যাংকগুলোর অবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খেলাপি ঋণ, অনিয়ম এবং তারল্য সংকটের কারণে এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

প্রধান সমস্যা

খেলাপি ঋণের উচ্চ পরিমাণ

বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ৩.৪৫ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে, যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর অতিরিক্ত ঋণ নির্ভরতা

কিছু ব্যাংক তাদের ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি একটি নির্দিষ্ট শিল্পগোষ্ঠীকে দিয়েছে। একইসঙ্গে, ব্যাংকের অন্যান্য আমানতও ওই গোষ্ঠীর সহগোষ্ঠীর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

সম্পদ ও দায়ের ভারসাম্যহীনতা

অনেক ব্যাংকের সম্পদের তুলনায় তাদের দায় অনেক বেশি, ফলে তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে।

নতুন আইন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বৃদ্ধি

বাংলাদেশ সরকার ব্যাংক রেজোলিউশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫ নামের নতুন আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই আইনের প্রধান দিকগুলো:
বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো সময় দুর্বল ব্যাংকের শেয়ারসম্পদ ও দায় স্থানান্তর করতে পারবে।
আমানতের নিরাপত্তা ও ব্যাংকের তারল্য সংকট মোকাবিলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্য কোনো প্রচলিত আইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হলে এই নতুন আইনের বিধানগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ব্রিজ ব্যাংক’ ধারণা

নতুন আইনে ব্রিজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বিপদগ্রস্ত ব্যাংকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে পরিচালনা করতে পারবে। এটি একীভূতকরণ, লিকুইডেশন বা পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কাজ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ও ঋণ সহায়তা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, এই সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলো নিয়ম না মেনে ঋণ দেওয়ার কারণে তাদের আদায়ের হার অত্যন্ত কম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক বারবার তারল্য সহায়তা দিচ্ছে, যা একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়।

দুর্বল ব্যাংকগুলোর তালিকা (২০২৪ সালের নভেম্বরে চিহ্নিত)

নিম্নোক্ত ব্যাংকগুলোকে দুর্বল হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে:

  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
  • সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
  • ইউনিয়ন ব্যাংক
  • গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
  • ন্যাশনাল ব্যাংক
  • এক্সিম ব্যাংক
  • আইসিবি ইসলামী ব্যাংক
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
  • এনআরবি ব্যাংক
  • পদ্মা ব্যাংক

তবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখাচ্ছে, কারণ তাদের গ্রাহকভিত্তি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।

ব্যর্থতার কারণ

বড় পরিমাণে খেলাপি ঋণ
পর্যাপ্ত তারল্যের অভাব
দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক অনিয়ম
দুর্নীতি ও বাজার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া