০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বৈষম্য দূর করার আহ্বান বিসিআই-এর

  • Sarakhon Report
  • ০৬:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
  • 42

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) শিল্প খাতে কাঁচামাল আমদানিতে বড় ও ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে শুল্কহারে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিসিআই জানায়, বর্তমানে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি প্লাস্টিক তৈরির জন্য কমপ্লিট মোল্ড আমদানি করে, তাহলে তা মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে গণ্য হয় এবং মাত্র ১% আমদানি শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে একই মোল্ড তৈরি করতে কাঁচামাল আমদানির সময় আগাম কর (এটি), অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মিলিয়ে প্রায় ৩০% শুল্ক গুণতে হয়। এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানায় বিসিআই।

এই প্রস্তাবটি গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) তুলে ধরেন।

কোম্পানির করহার হ্রাসের প্রস্তাব

বিসিআই প্রস্তাব করেছে:

  • প্রাইভেট কোম্পানির করহার ২.৫% কমিয়ে ২৫% করা হোক
  • পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির করহার করা হোক ২০%
  • ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করে ৫ লাখ টাকা করা হোক
  • সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর হ্রাস এবং
  • রফতানি আয়ের উৎসে কর ১% থেকে কমিয়ে ০.৫% করা হোক

এছাড়া রফতানি ক্ষেত্রে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতা দূর করারও পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

গ্রস-প্রফিট নির্ধারণে অসঙ্গতির অভিযোগ

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে গ্রস-প্রফিট খাতভিত্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত নয়। ব্যবসায়িক ক্ষতি বা বিক্রি কম হলেও সেটিকে কর নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। ফলে টার্নওভার কর প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।

অন্যান্য দাবিসমূহ

বিসিআই আরও দাবি করেছে:

  • অনুন্নত এলাকায় শিল্প গড়ে তোলার জন্য বিশেষ কর অবকাশ
  • নিম্ন শুল্কহার কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানির সুযোগ

পেপার শিল্পের পক্ষ থেকে প্রস্তাব

বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন:

  • গ্রেসপ্রুফ, গ্লাসিন, থারমাল ও লাইনার পেপার আমদানিতে সর্বোচ্চ হারে কাস্টমস ডিউটি (CD)রেগুলেটরি ডিউটি (RD) এবং ৩০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ
  • ছাপা কাগজ আমদানিতে CD ও RD মওকুফ বাতিল করা
  • রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত কাগজ ও বোর্ড আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা
  • খোলা বাজারে বিক্রি বন্ধে নজরদারি বাড়ানো

নরসিংদী চেম্বারের প্রস্তাব

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রস্তাব করেছে:

  • পাইকারি ব্যবসায়ীদের লেনদেনে ভ্যাট ১.৫% থেকে কমিয়ে ০.৫% করা
  • বিভিন্ন সুতায় করহার কমানো
  • আগাম কর প্রত্যাহার করা

এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য

আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন:

“অব্যাহতি দিলে মিসইউজ হয়। ৫০ বছর পরও পোশাক শিল্পে অব্যাহতি দরকার কেন? কর দিতে হবে সবার। আপনারা তথ্য লুকান, আমরা জোর করে কর বসাই। যদি হিসাব ঠিক থাকে, তাহলে সমস্যা হবে না। ব্যবসা করলে কর দিতেই হবে।”

সারাংশ:

বিসিআই শিল্প উন্নয়নের জন্য শুল্ক ও করনীতি সহজ করার আহ্বান জানালেও এনবিআর কর সংযম ও তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শিল্পের ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশ ও কর নীতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয়।

প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-২২৮)

শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বৈষম্য দূর করার আহ্বান বিসিআই-এর

০৬:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) শিল্প খাতে কাঁচামাল আমদানিতে বড় ও ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে শুল্কহারে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিসিআই জানায়, বর্তমানে বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি প্লাস্টিক তৈরির জন্য কমপ্লিট মোল্ড আমদানি করে, তাহলে তা মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে গণ্য হয় এবং মাত্র ১% আমদানি শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে একই মোল্ড তৈরি করতে কাঁচামাল আমদানির সময় আগাম কর (এটি), অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মিলিয়ে প্রায় ৩০% শুল্ক গুণতে হয়। এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানায় বিসিআই।

এই প্রস্তাবটি গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) তুলে ধরেন।

কোম্পানির করহার হ্রাসের প্রস্তাব

বিসিআই প্রস্তাব করেছে:

  • প্রাইভেট কোম্পানির করহার ২.৫% কমিয়ে ২৫% করা হোক
  • পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির করহার করা হোক ২০%
  • ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করে ৫ লাখ টাকা করা হোক
  • সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর হ্রাস এবং
  • রফতানি আয়ের উৎসে কর ১% থেকে কমিয়ে ০.৫% করা হোক

এছাড়া রফতানি ক্ষেত্রে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতা দূর করারও পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

গ্রস-প্রফিট নির্ধারণে অসঙ্গতির অভিযোগ

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে গ্রস-প্রফিট খাতভিত্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত নয়। ব্যবসায়িক ক্ষতি বা বিক্রি কম হলেও সেটিকে কর নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। ফলে টার্নওভার কর প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে।

অন্যান্য দাবিসমূহ

বিসিআই আরও দাবি করেছে:

  • অনুন্নত এলাকায় শিল্প গড়ে তোলার জন্য বিশেষ কর অবকাশ
  • নিম্ন শুল্কহার কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানির সুযোগ

পেপার শিল্পের পক্ষ থেকে প্রস্তাব

বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন:

  • গ্রেসপ্রুফ, গ্লাসিন, থারমাল ও লাইনার পেপার আমদানিতে সর্বোচ্চ হারে কাস্টমস ডিউটি (CD)রেগুলেটরি ডিউটি (RD) এবং ৩০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ
  • ছাপা কাগজ আমদানিতে CD ও RD মওকুফ বাতিল করা
  • রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত কাগজ ও বোর্ড আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা
  • খোলা বাজারে বিক্রি বন্ধে নজরদারি বাড়ানো

নরসিংদী চেম্বারের প্রস্তাব

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রস্তাব করেছে:

  • পাইকারি ব্যবসায়ীদের লেনদেনে ভ্যাট ১.৫% থেকে কমিয়ে ০.৫% করা
  • বিভিন্ন সুতায় করহার কমানো
  • আগাম কর প্রত্যাহার করা

এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য

আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন:

“অব্যাহতি দিলে মিসইউজ হয়। ৫০ বছর পরও পোশাক শিল্পে অব্যাহতি দরকার কেন? কর দিতে হবে সবার। আপনারা তথ্য লুকান, আমরা জোর করে কর বসাই। যদি হিসাব ঠিক থাকে, তাহলে সমস্যা হবে না। ব্যবসা করলে কর দিতেই হবে।”

সারাংশ:

বিসিআই শিল্প উন্নয়নের জন্য শুল্ক ও করনীতি সহজ করার আহ্বান জানালেও এনবিআর কর সংযম ও তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শিল্পের ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশ ও কর নীতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয়।