সারাক্ষণ রিপোর্ট
২০২৪ অর্থবছরে ভারত গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করেছে প্রায় ২১.২ বিলিয়ন ডলার। এই রপ্তানি বৈশ্বিক বাজারে (মূল্য প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার) ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি গাড়ি আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে ভারতের বেশ কয়েকটি বড় গাড়ি ও যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
যেসব ভারতীয় কোম্পানি প্রভাব পড়তে পারে
টাটা মোটরস ও জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার (JLR)
- টাটা মোটরস সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি রপ্তানি না করলেও, তাদের মালিকানাধীন JLR মার্কিন বাজারে বেশ সক্রিয়।
- JLR-এর মোট বিক্রির ২২% আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে (২০২৪ অর্থবছর অনুযায়ী)।
- যেহেতু JLR-এর গাড়িগুলো যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশে তৈরি হয়, তাই এসব গাড়ির ওপর এখন থেকে ২৫% আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
আইশার মোটরস ও রয়্যাল এনফিল্ড
- রয়্যাল এনফিল্ড ব্র্যান্ডের ৬৫০ সিসি মোটরসাইকেল যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয়।
- শুল্ক বৃদ্ধি এই মডেলগুলোর দাম বাড়াতে পারে, ফলে বিক্রি কমে যেতে পারে এবং ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সমবর্ধনা মাদারসন ইন্টারন্যাশনাল
- এই প্রতিষ্ঠান টেসলা, ফোর্ডসহ মার্কিন বড় কোম্পানিকে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে।
- যদিও তাদের অনেক কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেই অবস্থিত, তাই অন্য কোম্পানির তুলনায় এরা কিছুটা সুরক্ষিত অবস্থানে আছে।
সোনা বিএলডব্লিউ (Sona Comstar)
- এই প্রতিষ্ঠান মূলত ডিফারেনশিয়াল গিয়ার ও স্টার্টার মোটর তৈরি করে।
- তাদের আয়ের প্রায় ৬৬% আসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে।
- ঝুঁকি কমাতে তারা চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে সম্প্রসারণ করছে এবং আশা করছে আগামী ৫ বছরে এই বাজার থেকে রাজস্বের অর্ধেকের বেশি অর্জন করবে।
অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি
- আরও কিছু প্রতিষ্ঠান যারা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে সক্রিয়:
- ভারত ফোর্জ
- সানসেরা ইঞ্জিনিয়ারিং
- সুপ্রজিৎ ইঞ্জিনিয়ারিং
- বলকৃষ্ণ ইন্ডাস্ট্রিজ
- এসব কোম্পানিও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিশ্ববাজারে ভারতের অংশগ্রহণ
- ২০২৪ সালে ভারতের মোট গাড়ি যন্ত্রাংশ রপ্তানি: ২১.২ বিলিয়ন ডলার
- এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অংশ ছিল প্রায় ৪.৫%
- ফলে নতুন শুল্ক নীতির কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বাজারে ভারতের অবস্থান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
সারাংশ
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ২৫% গাড়ি আমদানি শুল্ক ভারতের একাধিক গাড়ি ও যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশেষ করে যেসব কোম্পানি মার্কিন বাজারে অধিক নির্ভরশীল বা পণ্য বিদেশে তৈরি করে, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।
তবে যেসব প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করছে বা বাজার বৈচিত্র্য আনছে, তারা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ অবস্থানে থাকবে।