০৬:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে আসিয়ান এখন আর কেবল বৈশ্বিক পুঁজির নীরব গ্রাহক নয় প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-১৯)

নিখুঁত হওয়ার অস্থির চাপ: তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে সহপাঠীদের প্রভাব

  • Sarakhon Report
  • ০৫:০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • 60

সারাক্ষণ ডেস্ক 

বর্তমান ডিজিটাল যুগে তরুণরা এক ধরনের নিখুঁততার অবাস্তব মানদণ্ডের মুখোমুখি হচ্ছে, যার পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহপাঠীদের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা। এই প্রবণতা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলছে—উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ও আত্মবিশ্বাসহীনতার মতো সমস্যার জন্ম দিচ্ছে।

তরুণদের মধ্যে নিখুঁত হওয়ার চাপে বৃদ্ধি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিখুঁত জীবনযাপনের সাজানো উপস্থাপনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তরুণ প্রজন্ম। এই দৃশ্যপট তাদের মনে এক ধরনের অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করে—যেখানে ‘ভালো’ হওয়াটাই যথেষ্ট নয়, বরং ‘সেরা’ না হলে চলেই না। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও খাওয়ার অভ্যাসজনিত সমস্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের তুলনা করার প্রবণতা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: একটি দ্বিমুখী বাস্তবতা

যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একদিকে তরুণদের প্রকাশ ও যোগাযোগের সুযোগ দিচ্ছে, অন্যদিকে তা আবার হীনমন্যতা ও একাকীত্বের উৎস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তরুণ মস্তিষ্ক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, এবং প্রতিনিয়ত ‘নিজেকে অন্যের মতো না পারার’ বোধে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে তাদের আত্মমূল্যায়ন বিকৃত হয়ে পড়ছে।

অসহনীয় মানদণ্ডের মানসিক মূল্য

এই অতিরিক্ত নিখুঁত হওয়ার চাপ তরুণদের মধ্যে ভয়, সংশয় এবং ব্যর্থতার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই নতুন কিছু শিখতে বা চ্যালেঞ্জ নিতে ইতস্তত বোধ করে। মানসিক চাপ মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা বিষাক্ত রূপ নেয়—যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ

এই চাপ মোকাবেলায় কিছু স্কুল ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। লন্ডনের লেডি এলিনর হোলস নামের একটি বালিকা বিদ্যালয় তাদের ছাত্রীদের শেখাচ্ছে যে ‘ভালো হওয়াটাই ভালো’, নিখুঁত হতে হবে না। তাদের এই পাঠ্যসূচিতে শিক্ষার্থীদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ হওয়ার নয়, বরং স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে চলার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সহপাঠীদের চাপে নিখুঁত হওয়ার প্রবণতা কমাতে করণীয়

ডিজিটাল সচেতনতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা দেখা যায়, তা সবসময় বাস্তব নয়—এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা প্রয়োজন।

খোলামেলা আলোচনা: ব্যর্থতা ও হতাশা নিয়ে কথা বলার সুযোগ দিলে তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

ধ্যান কী? — Study Buddhism

মানসিক প্রশান্তি অনুশীলন: যোগব্যায়াম, ধ্যান বা নিঃশ্বাসের ব্যায়ামের মতো অভ্যাস চাপ কমাতে সাহায্য করে।

সহানুভূতিশীল পরিবেশ গঠন: স্কুল ও পরিবার যদি প্রতিযোগিতার বদলে আত্ম-উন্নয়ন ও গ্রহণযোগ্যতার পরিবেশ গড়ে তোলে, তাহলে তরুণদের মধ্যে চাপ কমবে।

সহপাঠী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আসা নিখুঁত হওয়ার চাপ তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যার গভীরতা অনুধাবন করে সমাজের সকল স্তরে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাভাবিক, আত্মবিশ্বাসী ও মানসিকভাবে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।

ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

নিখুঁত হওয়ার অস্থির চাপ: তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে সহপাঠীদের প্রভাব

০৫:০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ ডেস্ক 

বর্তমান ডিজিটাল যুগে তরুণরা এক ধরনের নিখুঁততার অবাস্তব মানদণ্ডের মুখোমুখি হচ্ছে, যার পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহপাঠীদের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা। এই প্রবণতা তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলছে—উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ও আত্মবিশ্বাসহীনতার মতো সমস্যার জন্ম দিচ্ছে।

তরুণদের মধ্যে নিখুঁত হওয়ার চাপে বৃদ্ধি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিখুঁত জীবনযাপনের সাজানো উপস্থাপনায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তরুণ প্রজন্ম। এই দৃশ্যপট তাদের মনে এক ধরনের অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করে—যেখানে ‘ভালো’ হওয়াটাই যথেষ্ট নয়, বরং ‘সেরা’ না হলে চলেই না। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৮ থেকে ২৫ বছর বয়সীদের মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও খাওয়ার অভ্যাসজনিত সমস্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের তুলনা করার প্রবণতা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: একটি দ্বিমুখী বাস্তবতা

যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একদিকে তরুণদের প্রকাশ ও যোগাযোগের সুযোগ দিচ্ছে, অন্যদিকে তা আবার হীনমন্যতা ও একাকীত্বের উৎস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তরুণ মস্তিষ্ক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে, এবং প্রতিনিয়ত ‘নিজেকে অন্যের মতো না পারার’ বোধে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে তাদের আত্মমূল্যায়ন বিকৃত হয়ে পড়ছে।

অসহনীয় মানদণ্ডের মানসিক মূল্য

এই অতিরিক্ত নিখুঁত হওয়ার চাপ তরুণদের মধ্যে ভয়, সংশয় এবং ব্যর্থতার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই নতুন কিছু শিখতে বা চ্যালেঞ্জ নিতে ইতস্তত বোধ করে। মানসিক চাপ মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা বিষাক্ত রূপ নেয়—যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ

এই চাপ মোকাবেলায় কিছু স্কুল ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। লন্ডনের লেডি এলিনর হোলস নামের একটি বালিকা বিদ্যালয় তাদের ছাত্রীদের শেখাচ্ছে যে ‘ভালো হওয়াটাই ভালো’, নিখুঁত হতে হবে না। তাদের এই পাঠ্যসূচিতে শিক্ষার্থীদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ হওয়ার নয়, বরং স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে চলার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সহপাঠীদের চাপে নিখুঁত হওয়ার প্রবণতা কমাতে করণীয়

ডিজিটাল সচেতনতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা দেখা যায়, তা সবসময় বাস্তব নয়—এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা প্রয়োজন।

খোলামেলা আলোচনা: ব্যর্থতা ও হতাশা নিয়ে কথা বলার সুযোগ দিলে তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

ধ্যান কী? — Study Buddhism

মানসিক প্রশান্তি অনুশীলন: যোগব্যায়াম, ধ্যান বা নিঃশ্বাসের ব্যায়ামের মতো অভ্যাস চাপ কমাতে সাহায্য করে।

সহানুভূতিশীল পরিবেশ গঠন: স্কুল ও পরিবার যদি প্রতিযোগিতার বদলে আত্ম-উন্নয়ন ও গ্রহণযোগ্যতার পরিবেশ গড়ে তোলে, তাহলে তরুণদের মধ্যে চাপ কমবে।

সহপাঠী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আসা নিখুঁত হওয়ার চাপ তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যার গভীরতা অনুধাবন করে সমাজের সকল স্তরে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাভাবিক, আত্মবিশ্বাসী ও মানসিকভাবে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।