সারাক্ষণ রিপোর্ট
আপিল বিভাগের নতুন নির্দেশনা
চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় সংঘটিত জোড়া খুনের মামলায় সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ তিনজনকে আগামী সাত দিনের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ নির্দেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
এর আগে, হাইকোর্ট এই তিনজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষ এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে আত্মসমর্পণের সময়সীমা এক সপ্তাহে নামিয়ে আনে।
ঘটনার বিবরণ: জোড়া খুন ও সংঘর্ষের পেছনের বিরোধ
ঘটনাটি ঘটে ৩০ মার্চ, চট্টগ্রামের বাকলিয়া এক্সেস রোডে। একদল অস্ত্রধারী একটি প্রাইভেটকারকে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেয়। এতে গাড়ির দুই আরোহী নিহত হন।
পুলিশের ধারণা, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন ও ছোট সাজ্জাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব।
নিহতদের একজন বখতিয়ার হোসেন। তার মা ফিরোজা বেগম বাকলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ছোট সাজ্জাদকে। এছাড়াও আসামির তালিকায় রয়েছেন তার স্ত্রী তামান্না শারমিন ও আরও ছয়জন:
- মো. হাছান
- মোবারক হোসেন
- মো. খোরশেদ
- মো. রায়হান
- মো. বোরহান
- ছোট সাজ্জাদ
এদের মধ্যে অধিকাংশ সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
হামলার ভিডিও ও গ্রেপ্তার
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ তিনজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করেছে:
- মো. বেলাল
- মো. মানিক
- সজীব
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ৭টি মোটরসাইকেলে ১৩ জন হামলায় অংশ নেয়। তাদের কাছে ১০টি পিস্তল ও শটগান ছিল।
আগাম জামিন আবেদন ও আদালতের নির্দেশ
হত্যা মামলার পর তামান্না, মোবারক ও বোরহান আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।
৯ এপ্রিল, বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
ছোট সাজ্জাদ: পুরনো অপরাধী
ছোট সাজ্জাদ ইতিপূর্বে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির মতো অভিযোগে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় মোট ১৫টি মামলার আসামি।
১৫ মার্চ রাতে, ঢাকার একটি শপিং সেন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উপসংহার:
এই মামলায় সাম্প্রতিক আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আত্মসমর্পণের সময়সীমা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে। এতে মামলার তদন্ত এবং বিচারিক প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নেয়ার পথ সুগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।