মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

অনলাইনে জুয়া বন্ধে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫, ৭.৩১ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

অনলাইন জুয়া বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ চেয়ে সরকারের প্রতি নোটিশ

অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট, লিংক, গেটওয়ে ও অ্যাপ্লিকেশন অবিলম্বে বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।

তিনি ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে এই নোটিশ পাঠান। নোটিশে অনলাইন জুয়ার প্রচার-প্রসারে জড়িত তারকা, মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ও তফসিলি ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

কারা পেয়েছেন এই নোটিশ

নোটিশটি ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে—

  • ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব
  • তথ্য ও সম্প্রচার সচিব
  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব

  • আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব
  • বিটিআরসি
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট
  • পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)

নোটিশের মূল অভিযোগ

নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জুয়া বেআইনি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অনলাইন জুয়া দেশে মহামারির রূপ নিয়েছে।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ লাখ মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় শিশু-কিশোররাও এতে জড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে, আর বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশীয় সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় কোটি কোটি টাকা পাচার করছে।

অনলাইন জুয়া বন্ধে ব্যবস্থা নেবে কে? | প্রথম আলো

তারকাদের ভূমিকা ও অর্থ লেনদেনের চ্যানেল

নামকরা তারকা ও মডেলরা টাকার বিনিময়ে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। এমনকি টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়াও এসব প্রচারে যুক্ত। বিভিন্ন অনলাইন অ্যাপস যেমন ওয়ানএক্সবেট-এ মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে লেনদেন হচ্ছে। এতে স্থানীয় মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টরাও যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রচলিত আইন কী বলে

  • ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে জুয়া নিষিদ্ধ।
  • ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ৯২ ধারা
  • দণ্ডবিধির ২৯৪(এ) ও ২৯৪(বি) ধারা
  • সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদ— রাষ্ট্রের দায়িত্ব জুয়া প্রতিরোধ করা।
  • ২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন— নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল ইন্টারনেট নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা।

অনলাইন জুয়ায় 'বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো'

তবে অভিযোগ, এসব আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ না করায় অনলাইন ও টেলিকম সেবা জুয়াসহ নানা বেআইনি কর্মকাণ্ডে ভরে গেছে।

যেসব পদক্ষেপ চাওয়া হয়েছে

নোটিশে সরকারের প্রতি নিচের দাবিগুলো জানানো হয়েছে:

১. সব অনলাইন জুয়া সাইটলিংকগেটওয়ে ও অ্যাপ্লিকেশন অবিলম্বে বন্ধ বা ব্লক করতে হবে।
২. গুগলসহ অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানি যেন এসব জুয়ার বিজ্ঞাপন না দেখায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রচারে জড়িত তারকামোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. ফেসবুকইউটিউবগুগলহোয়াটসঅ্যাপসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জুয়া সংক্রান্ত কনটেন্টে প্রবেশ ঠেকাতে হবে।
৫. একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

রিট মামলা করার হুমকি

সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’ জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করবে বলে নোটিশে সতর্ক করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024