সারাক্ষণ রিপোর্ট
বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ আঞ্চলিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির গতি এবার মন্থর হবে, বিশেষ করে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে। ২০২৫ সালে আফগানিস্তানে প্রবৃদ্ধি ২.২ শতাংশ, পাকিস্তানে ২.৭ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির ফলে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দুর্বল হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ দেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: রাজস্ব বাড়ানোর পরামর্শ
আজ প্রকাশিত “South Asia Development Update: Taxing Times” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মোট প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৫.৮ শতাংশ, যা গত অক্টোবরে পূর্বাভাস দেওয়া ৬.২ শতাংশ থেকে কম। ২০২৬ সালে এই হার কিছুটা বেড়ে ৬.১ শতাংশ হতে পারে।
তবে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে, এই পূর্বাভাস উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ — বৈশ্বিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাগুলো, বিশেষ করে রাজস্ব ঘাটতি, প্রবৃদ্ধির পথে বড় বাধা হতে পারে।
দেশভিত্তিক প্রবৃদ্ধির বিশ্লেষণ
আফগানিস্তান: বিদেশি সহায়তা কমে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশ থেকে কমে ২.২ শতাংশে নেমেছে।
বাংলাদেশ: রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটে প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে ৩.৩ শতাংশে থাকবে। ২০২৬ সালে এটি ৪.৯ শতাংশে উন্নীত হলেও পূর্বাভাসের চেয়ে কম।
পাকিস্তান: দুর্যোগ ও অর্থনৈতিক চাপ সামলে ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি ২.৭ শতাংশ হবে। ২০২৬ সালে এটি ৩.১ শতাংশে পৌঁছাবে।
ভারত: প্রবৃদ্ধি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ৬.৫ শতাংশ, যা ২০২৫–২৬ সালে কিছুটা কমে ৬.৩ শতাংশ হবে।
নেপাল: প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে ৪.৫ শতাংশ, ২০২৬ সালে ৫.২ শতাংশ।
ভুটান: কৃষি খাতে দুর্বলতার কারণে ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি ৬.৬ শতাংশে নামবে, তবে হাইড্রোপাওয়ার নির্মাণে ২০২৬ সালে তা ৭.৬ শতাংশে উঠবে।
মালদ্বীপ: নতুন বিমানবন্দর টার্মিনাল চালু হওয়ায় প্রবৃদ্ধি ৫.৭ শতাংশ হবে, যদিও ঋণ পরিশোধে ঝুঁকি রয়ে গেছে।
শ্রীলঙ্কা: ঋণ পুনর্গঠন ও রপ্তানি চাহিদা বৃদ্ধিতে ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি ৩.৫ শতাংশ হতে পারে, তবে ২০২৬ সালে তা ৩.১ শতাংশে নেমে আসবে।
উপসংহার
বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশের — বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা — জন্য আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কর আদায়ে দুর্বলতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং রাজস্ব ঘাটতি দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি শ্লথ করে তুলছে। এখন সময় কার্যকর কর সংস্কার ও কাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়ার।
Leave a Reply