০৪:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
‘সুইম শেডি’ নাম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এমিনেম দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের উপকূলীয় শহর ওওইতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল শতাধিক ঘর বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুতে এগোচ্ছে জাপান গ্রাহকদের ভোগান্তি কমছে না, এবার রবির বিরুদ্ধে অভিযোগ — জিপি ও বাংলালিংকের আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ইশতেহারে শিশু নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি ভারতের স্পষ্ট বার্তা: যেখানেই হোক, সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানোর পূর্ণ অধিকার আছে ইভি আর স্মার্ট গ্যাজেটের জোরে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা দেখাল শাওমি ভারতের রেড ফোর্ট হামলার উদ্ধার হওয়া ভিডিও: আত্মঘাতী হামলার সাফাই দিচ্ছিলেন উমর উন-নবী ইন্দোনেশিয়ার শিশুদের ভিডিও গেমে জঙ্গি প্রভাব: পুলিশ গাজীপুরে কয়েল কারখানায় ভয়াবহ আগুনঃ আশে পাশের মানুষ সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১০)

একাদশ পরিচ্ছেদ

ওই রাত্রেই, সৈন্যদলের যাত্রা শুরু হবার পর প্রথম পাঁচ মিনিটের বিশ্রামের সময় আমি পালিয়ে গেলুম। সঙ্গে রাখলুম আমার মাওজারটা। আর ক্যাটেনের গাড়িতে একটা বোমা পড়ে থাকতে দেখে সেটাও পকেটে ভরে নিয়েছিলুম।

সারাটা রাত্তির একবারও না-থেমে, বিপজ্জনক রাস্তাগুলো এড়িয়ে যাবার চেষ্টা না-করে, অন্ধ একগুয়ের মতো সোজা উত্তরমুখো ছুটে চললুম আমি। বিপজ্জনক জায়গাগুলো, যেমন ঝোপঝাড়ের অন্ধকার, জনশূন্য পাহাড়ী খাদ, ছোট-ছোট পুল, এইসব এড়িয়ে চলার বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করলুম না। অথচ অন্য যে-কোনো সময়ে

ওই সব জায়গায় শত্রু ওত পেতে আছে সন্দেহ করে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে পথ চলতুম। শেষ কয়েক ঘণ্টার অভিজ্ঞতার চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই তখন আমার কাছে ঠেকছিল না।

হোঁচট খেতে-খেতে এগিয়ে চললুম আমি। কোনো কিছু ভাবা, কিছু মনে করা, কোনো কিছু চাওয়ার চেষ্টা না-করে, কত তাড়াতাড়ি আমার বাহিনীর সঙ্গে মিলতে পারব একমাত্র এই আশা সম্বল করে পথ চলতে লাগলুম।

পরদিন দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত একটা ঝোপঝাড়ে-ঢাকা লুকনো খাদের মধ্যে ক্লোরোফর্ম-করা রুগীর মতো নিঃসাড়ে ঘুমোলুম আমি। রাত্রে ঘুম থেকে উঠে ফের শুরু হল আমার পথচলা। শ্বেতরক্ষীদের সদর দপ্তরে যে-কথাবার্তা আমি শুনেছিলুম তা থেকে আমার বাহিনীকে কোথায় খুঁজতে হবে সে-সম্পর্কে অস্পষ্ট একটা ধারণা জন্মেছিল। জায়গাটা খুব কাছেই কোথাও হবে বলে আমার মনে হল।

কিন্তু আমি পায়ে চলা-পথ আর গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে-ঘুরে বেড়ালুম, তবু কেউ আমার পথ আটকে দাঁড়াল না।

পাখপাখালির অফুরন্ত কিচিরমিচির, ব্যাঙের ডাক আর মশার গুনগুনানিতে রাতের বুক ধুকপুক করতে লাগল। গায়ে-গায়ে লেপটে-থাকা, তারার চুকি-বসানো সেই রাত একটা পোচার অশান্ত চিৎকারে, ঘন, সবুজ পাতার খসখসানিতে আর বুনো অর্কিড আর হোগুলা ফুলের গন্ধে মনে হচ্ছিল যেন জীবন্ত।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

‘সুইম শেডি’ নাম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে এমিনেম

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১১০)

০৮:০০:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

একাদশ পরিচ্ছেদ

ওই রাত্রেই, সৈন্যদলের যাত্রা শুরু হবার পর প্রথম পাঁচ মিনিটের বিশ্রামের সময় আমি পালিয়ে গেলুম। সঙ্গে রাখলুম আমার মাওজারটা। আর ক্যাটেনের গাড়িতে একটা বোমা পড়ে থাকতে দেখে সেটাও পকেটে ভরে নিয়েছিলুম।

সারাটা রাত্তির একবারও না-থেমে, বিপজ্জনক রাস্তাগুলো এড়িয়ে যাবার চেষ্টা না-করে, অন্ধ একগুয়ের মতো সোজা উত্তরমুখো ছুটে চললুম আমি। বিপজ্জনক জায়গাগুলো, যেমন ঝোপঝাড়ের অন্ধকার, জনশূন্য পাহাড়ী খাদ, ছোট-ছোট পুল, এইসব এড়িয়ে চলার বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করলুম না। অথচ অন্য যে-কোনো সময়ে

ওই সব জায়গায় শত্রু ওত পেতে আছে সন্দেহ করে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে পথ চলতুম। শেষ কয়েক ঘণ্টার অভিজ্ঞতার চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই তখন আমার কাছে ঠেকছিল না।

হোঁচট খেতে-খেতে এগিয়ে চললুম আমি। কোনো কিছু ভাবা, কিছু মনে করা, কোনো কিছু চাওয়ার চেষ্টা না-করে, কত তাড়াতাড়ি আমার বাহিনীর সঙ্গে মিলতে পারব একমাত্র এই আশা সম্বল করে পথ চলতে লাগলুম।

পরদিন দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত একটা ঝোপঝাড়ে-ঢাকা লুকনো খাদের মধ্যে ক্লোরোফর্ম-করা রুগীর মতো নিঃসাড়ে ঘুমোলুম আমি। রাত্রে ঘুম থেকে উঠে ফের শুরু হল আমার পথচলা। শ্বেতরক্ষীদের সদর দপ্তরে যে-কথাবার্তা আমি শুনেছিলুম তা থেকে আমার বাহিনীকে কোথায় খুঁজতে হবে সে-সম্পর্কে অস্পষ্ট একটা ধারণা জন্মেছিল। জায়গাটা খুব কাছেই কোথাও হবে বলে আমার মনে হল।

কিন্তু আমি পায়ে চলা-পথ আর গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে-ঘুরে বেড়ালুম, তবু কেউ আমার পথ আটকে দাঁড়াল না।

পাখপাখালির অফুরন্ত কিচিরমিচির, ব্যাঙের ডাক আর মশার গুনগুনানিতে রাতের বুক ধুকপুক করতে লাগল। গায়ে-গায়ে লেপটে-থাকা, তারার চুকি-বসানো সেই রাত একটা পোচার অশান্ত চিৎকারে, ঘন, সবুজ পাতার খসখসানিতে আর বুনো অর্কিড আর হোগুলা ফুলের গন্ধে মনে হচ্ছিল যেন জীবন্ত।