ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
উল্লিখিত রাত্রিকালীন দেবতা বা প্রধানদের নাম-এর সঙ্গে দিনেরবেলার নাম কিছু মিল আছে। কিন্তু দিনেরবেলার সঙ্গে রাতের দেবতার পার্থক্য হল যে ঈশ্বরের মধ্যে বা ঈশ্বর সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের মধ্যে একরকম ধারণা বা বিশ্বাস কাজ করে। সেক্ষেত্রে দেবতার নাম বা কাজ-এর বিষয়টি প্রধান ভূমিকা পালন করে এবং এর সঙ্গে যুক্ত আছে অন্যান্য কিছু গল্পকথা।
এরকম একটি লোকগল্প হল যে সূর্য অস্ত যাবার সময় পবিত্র মন ও প্রাণ-এর পুরোহিত তারার পর্বত শিখরে আরোহন করেছিলেন। এর নাম হল হুয়াক্সাচিল্লিকাত (Huaxa chillicate)। এখানে একটা আগ্নেয় উৎপাতের উৎস আছে এবং তার মাঝে মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে। মেক্সিকো উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই আগ্নেয় বিস্ফোরণ দেখা যায়।
রাতের প্রহর যত বাড়ে মহামান্য পুরোহিতগণ ততই খুব সন্তপর্ণে স্বর্গের দৃশ্যাবলী দর্শন করেন। দেখার কাজ ততক্ষণ পর্যন্ত চলে যতক্ষণ আলদেবারান (Aldebaran) বা মেরিয়াদেস (Meriades)-এর মত নক্ষত্ররা স্বর্গের কেন্দ্রীয়স্থলে না পৌঁছয় ও এই সঙ্গে তারারা পৃথিবীর অন্তহীন বয়ে চলার ইঙ্গিত না দেখায়। আজতেকদের পৃথিবী, পাহাড়, প্রকৃতি এবং প্রকৃতির নানা উত্থান-পতন সব কিছুর সঙ্গে এক ধরনের লোককথা নির্ভর বিশ্বাস জড়িয়ে আছে।
এই বিশ্বাস, ধর্মীয় চিন্তা এবং লোকাচার-এর অর্থ, যাথার্থতা, প্রয়োজনীয়তা সবকিছুই আজতেকদের নিজস্ব একান্ত মনের ভালবাসা। এই সভ্যতা, বিশ্বাসকে আক্রমণকারী দেশ স্পেনসহ ইউরোপীয় শক্তি নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা করেছে। বলেছে এরা পিছিয়ে পড়া, অনুন্নত সংস্কৃতি ও শিক্ষাসম্পন্ন।
(চলবে)
আজতেক সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৩৭)