সারাক্ষণ রিপোর্ট
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র কখনোই একক কোনো ‘অতিমানব’-এর ওপর নির্ভরশীল নয়। তিনি এখনই নির্বাচন করে সত্যিকারের ক্ষমতা ভাগাভাগি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), আমজনতার দল ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টিসহ অন্যান্য মিত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি উল্লেখ করেন, ষোল বছর ধরে আমরা ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, জনশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভোটাধিকারের পুনরুদ্ধার এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার’ লক্ষ্যে লড়াই করেছি।
তিনি বলেন, প্রায় পঞ্চাশটি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে। তাই তিনি নির্বাচন কমিশনকে একটি স্পষ্ট কর্মপন্থা দ্রুত প্রকাশ করতে বলেছেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আল জাজিরা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মানুষ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে চায়। এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে খসরু বলেন, ওই ‘মানুষ কারা? প্রধান বিরোধীদল হিসেবে বিএনপি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। গণতন্ত্রের সমস্যার সমাধানের জন্য কোনো অতিমানবের অপেক্ষা করার দরকার নেই।’
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধান বিরোধীদল সতর্ক করেছে—ডিসেম্বরে ভোট না হলে ‘প্রচণ্ড জনরোষ ও অস্থিতিশীলতা’ সৃষ্টি হতে পারে। আবার ইউনূস বলেছেন, অতিরিক্ত সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষভাগেই হতে পারে, যদিও তিনি পুনরায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভোট জুন ২০২৬-এর মধ্যে নেয়া হবে।
এ কারণে সরকারের ওপর চাপ তৈরির লক্ষ্যে বিএনপি ইতিমধ্যে জোটভিত্তিক আলোচনা শুরু করেছে। ‘নিউ এজ’ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দলীয় নেতারা কৌশলগত বৈঠক করেছে, সম্মতিমূলক সিদ্ধান্ত নিতে এবং অস্থায়ী সরকারের নির্ধারিত সময়সীমায় ভোট আয়োজনে চাপ বাড়াতে।
এই কর্মসূচী চালু রাখার জন্য বিএনপির যুবদল এগিয়ে এসেছে। ভোটার তালিকা ঠিক রাখতে অস্থায়ী সরকার তাদের সৃষ্ট কমিশনের ওপর নির্ভর করছে।
অন্যদিকে সরকার সমর্থক ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে যে নতুন ফ্রন্ট গঠন করেছে- তারা সতর্ক করেছে, ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন হলে সামাজিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।
বিএনপির যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল ৯ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত দেশের প্রতিটি বিভাগে ‘ন্যায্য রাষ্ট্র গড়তে যুব সমাজের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক সেমিনার ও জনসভার আয়োজন করছে।
নাগরিক সমাজ, বিরোধীদলীয় জোট ও অস্থায়ী সরকার—তিনদিকে যখন ‘স্বাধীন, ন্যায্য ও সময়মতো নির্বাচন’ নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ চলছে, তখন আগামী কয়েক মাস হবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সত্যিকারের পরীক্ষার সময়।
Leave a Reply