০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

কাশ্মীরে সক্রিয় প্রধান জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৪৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • 38

বিরোধপূর্ণ কাশ্মীরে প্রধান কোন কোন জঙ্গি গোষ্ঠী সংঘাতে জড়িত? এসব গোষ্ঠীর স্থানীয় প্রভাব কেমন এবং বিশ্বব্যাপী তাদের জিহাদি সংযোগই বা কতটা?

দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)

২০১৯ সালে ভারতের সংবিধানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়। এর পরই গড়ে ওঠে দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট-টিআরএফ। ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে সাম্প্রতিক পহেলগাম হামলার দায় স্বীকার করেছে গ্রুপটি। টিআরএফ নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন দাবি করলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা মনে করে। টিআরএফ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে ভারত।

লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)

পাকিস্তান-ভিত্তিক ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা- এলইটি ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ্য জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় শাসনের অবসান। ২০০২ সালে পাকিস্তান নিষিদ্ধ করলেও সংগঠনটি এখনও সক্রিয়। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলাসহ ভারতে বেশ কয়েকটি হামলায় দায়ী করা হয় এলইটি-কে। এলইটি নানা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা করে এবং যোদ্ধাদের পাকিস্তান সরকারকে লক্ষ্যবস্তু করা থেকে নিষেধ করে।

হিজবুল মুজাহিদীন (এইচএম)

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল মুজাহিদিন- এইচএম একসময় কাশ্মীরের সবচেয়ে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠী ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই গোষ্ঠীর প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে বুরহান ওয়ানি এবং ২০১৭ সালে অর উত্তরসূরি সাবজার আহমেদ ভাটসহ প্রধান কমান্ডারদের মৃত্যুর পর থেকে এর কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে গেছে।

জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম)

একটি হাইজ্যাক করা বিমানের ১৫৫ জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে ভারতীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান উগ্র ইসলামপন্থি মাসুদ আজহার। ২০০০ সালে পাকিস্তান-ভিত্তিক সুন্নি ইসলামপন্থি জেইএম প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তান ছাড়াও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ জইশ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে। এর লক্ষ্য কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করা। এলইটি, তালেবান এবং আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জেইএম-এর।

আল বদর

১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে হিজবুল মুজাহিদিন থেকে বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী হিসেবে গঠিত হয় আল বদর (যার অর্থ ‘পূর্ণিমা’)। এই সংগঠনের অনেক সদস্য আগে আফগান মিলিশিয়া কমান্ডার গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হিজব-ই-ইসলামির সাথে কাজ করেছেন। এই গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক জিহাদি নেটওয়ার্কের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং ভারত-পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষে লিপ্ত বলে জানা গেছে। তবে, এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা কঠিন।

আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ (এজিএইচ)

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ-এজিএইচ কাশ্মীর সংঘাতে আল-কায়েদার প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার একটি শাখা হিসেবে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত। শরিয়া আইনের অধীনে কাশ্মীরে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য এজিএইচ এর। এর প্রতিষ্ঠাতা জাকির মুসা ছিলেন হিজবুল মুজাহিদিনের সাবেক কমান্ডার। আদর্শগত পার্থক্যের কারণে পদত্যাগ করে বিশুদ্ধবাদী জিহাদি গোষ্ঠী হিসেবে এজি.এইচ গড়ে তুলেন।

ডিডাব্লিউ ডটকম

কাশ্মীরে সক্রিয় প্রধান জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো

০৫:৪৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

বিরোধপূর্ণ কাশ্মীরে প্রধান কোন কোন জঙ্গি গোষ্ঠী সংঘাতে জড়িত? এসব গোষ্ঠীর স্থানীয় প্রভাব কেমন এবং বিশ্বব্যাপী তাদের জিহাদি সংযোগই বা কতটা?

দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)

২০১৯ সালে ভারতের সংবিধানে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়। এর পরই গড়ে ওঠে দ্য রেজিসট্যান্স ফ্রন্ট-টিআরএফ। ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে সাম্প্রতিক পহেলগাম হামলার দায় স্বীকার করেছে গ্রুপটি। টিআরএফ নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন দাবি করলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে লস্কর-ই-তৈয়বার শাখা মনে করে। টিআরএফ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে ভারত।

লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)

পাকিস্তান-ভিত্তিক ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা- এলইটি ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ্য জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় শাসনের অবসান। ২০০২ সালে পাকিস্তান নিষিদ্ধ করলেও সংগঠনটি এখনও সক্রিয়। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলাসহ ভারতে বেশ কয়েকটি হামলায় দায়ী করা হয় এলইটি-কে। এলইটি নানা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা করে এবং যোদ্ধাদের পাকিস্তান সরকারকে লক্ষ্যবস্তু করা থেকে নিষেধ করে।

হিজবুল মুজাহিদীন (এইচএম)

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল মুজাহিদিন- এইচএম একসময় কাশ্মীরের সবচেয়ে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠী ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই গোষ্ঠীর প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে বুরহান ওয়ানি এবং ২০১৭ সালে অর উত্তরসূরি সাবজার আহমেদ ভাটসহ প্রধান কমান্ডারদের মৃত্যুর পর থেকে এর কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে গেছে।

জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম)

একটি হাইজ্যাক করা বিমানের ১৫৫ জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে ভারতীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান উগ্র ইসলামপন্থি মাসুদ আজহার। ২০০০ সালে পাকিস্তান-ভিত্তিক সুন্নি ইসলামপন্থি জেইএম প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তান ছাড়াও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ জইশ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে। এর লক্ষ্য কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করা। এলইটি, তালেবান এবং আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জেইএম-এর।

আল বদর

১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে হিজবুল মুজাহিদিন থেকে বিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী হিসেবে গঠিত হয় আল বদর (যার অর্থ ‘পূর্ণিমা’)। এই সংগঠনের অনেক সদস্য আগে আফগান মিলিশিয়া কমান্ডার গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ারের হিজব-ই-ইসলামির সাথে কাজ করেছেন। এই গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক জিহাদি নেটওয়ার্কের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং ভারত-পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষে লিপ্ত বলে জানা গেছে। তবে, এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা কঠিন।

আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ (এজিএইচ)

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত আনসার গাজওয়াত-উল-হিন্দ-এজিএইচ কাশ্মীর সংঘাতে আল-কায়েদার প্রতিনিধিত্ব করে। ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়েদার একটি শাখা হিসেবে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত। শরিয়া আইনের অধীনে কাশ্মীরে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য এজিএইচ এর। এর প্রতিষ্ঠাতা জাকির মুসা ছিলেন হিজবুল মুজাহিদিনের সাবেক কমান্ডার। আদর্শগত পার্থক্যের কারণে পদত্যাগ করে বিশুদ্ধবাদী জিহাদি গোষ্ঠী হিসেবে এজি.এইচ গড়ে তুলেন।

ডিডাব্লিউ ডটকম