০৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
পটুয়াখালীর গলাচিপায় খাস জমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২৪ রান্নাঘর বাজার: পেঁয়াজের দাম ১১৫, ইলিশ এখনও নাগালের বাইরে ভারত চীন সীমান্তের কাছে নতুন সামরিক ঘাঁটি উদ্বোধন: কৌশলগত সক্ষমতা আরও জোরদার আগে গণভোট, ছাড়া সংসদ নির্বাচনে যাবে না জামায়াত উমর নাবির শেষ দিনের রহস্য: তদন্তে উঠে আসছে নতুন নতুন সূত্র মালয়েশিয়ার পাম অয়েল এত বেশি কেন ব্যবহার হয়? ইসলামাবাদে আত্মঘাতী হামলার পর চরম সতর্কতা—নিরাপত্তা ঘিরে আতঙ্কে নাগরিকরা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না: যুক্তরাজ্যকে জানালেন অধ্যাপক ইউনূস আফগানিস্তানে ভয়াবহ মানবিক সংকট—ক্ষুধা, ঋণ ও সেবাবঞ্চনায় বিপর্যস্ত ৯০% পরিবার পূর্ব আফ্রিকার মানুষের ক্ষমতায়নে  অবদানের জন্য  সুলতানের মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা

বাংলাদেশে ডেঙ্গু সংকট: এক দশকের মৃত্যু পরিসংখ্যান ও বর্তমান পরিস্থিতি

  • Sarakhon Report
  • ০১:০০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • 241

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ডেঙ্গু: বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান হুমকি

গত এক দশকে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালে দেশে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যা মৃত্যুর সংখ্যায় পূর্বের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

২০১৫‑২০২৪: ডেঙ্গুতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান
নিচে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বার্ষিক সংখ্যা তুলে ধরা হলো—
২০১৫: ১১০
২০১৬: ১৪৫
২০১৭: ১৫৮
২০১৮: ১৪৭
২০১৯: ১৬৪
২০২০: ৩
২০২১: ১০৫
২০২২: ২৮১
২০২৩: ১,৭০৫
২০২৪: ১,৩৮৯

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের তথ্য কোভিড‑১৯ মহামারির কারণে সীমিত ছিল।

২০২৩ সালের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব
২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২১,১৭৯ জনে পৌঁছায়, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। মারা যান ১,৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এ বছর DENV‑2 ও DENV‑3 সেরোটাইপের প্রাধান্য থাকায় পূর্ববর্তী সংক্রমণ অভিজ্ঞ রোগীদের মধ্যেও জটিলতা বৃদ্ধি পায়।

২০২৪ সালের পরিস্থিতি
২০২৪ সালে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে ২,৮৯,৭৮৬ জনে দাঁড়ায়। তবে মৃত্যু ১,৩৮৯ জনে পৌঁছায়, যা এখনও উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ এবং মশার কীটনাশক‑প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ
সরকার ইতিমধ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে—
• মশা নিধন কার্যক্রম: শহর ও গ্রামে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে অভিযান।
• সচেতনতা বৃদ্ধি: গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচার।
• চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ: হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ ইউনিট স্থাপন।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণও অত্যন্ত জরুরি।

ভবিষ্যৎ করণীয়
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে—
• উলবাকিয়া প্রযুক্তির ব্যবহার: মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধের একটি সম্ভাবনাময় পদ্ধতি।
• টিকা উন্নয়ন ও প্রয়োগ: কার্যকর ডেঙ্গু টিকা উদ্ভাবন ও দ্রুত প্রয়োগ।
• পরিবেশবান্ধব নগরায়ণ: জলাবদ্ধতা কমাতে ও মশার প্রজননস্থল হ্রাসে পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন।

উপসংহার
বাংলাদেশে ডেঙ্গু একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় সরকার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। সচেতনতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং টিকা উন্নয়নের সমন্বয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

জনপ্রিয় সংবাদ

পটুয়াখালীর গলাচিপায় খাস জমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২৪

বাংলাদেশে ডেঙ্গু সংকট: এক দশকের মৃত্যু পরিসংখ্যান ও বর্তমান পরিস্থিতি

০১:০০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ডেঙ্গু: বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান হুমকি

গত এক দশকে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালে দেশে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব দেখা যায়, যা মৃত্যুর সংখ্যায় পূর্বের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

২০১৫‑২০২৪: ডেঙ্গুতে মৃত্যুর পরিসংখ্যান
নিচে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বার্ষিক সংখ্যা তুলে ধরা হলো—
২০১৫: ১১০
২০১৬: ১৪৫
২০১৭: ১৫৮
২০১৮: ১৪৭
২০১৯: ১৬৪
২০২০: ৩
২০২১: ১০৫
২০২২: ২৮১
২০২৩: ১,৭০৫
২০২৪: ১,৩৮৯

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের তথ্য কোভিড‑১৯ মহামারির কারণে সীমিত ছিল।

২০২৩ সালের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব
২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২১,১৭৯ জনে পৌঁছায়, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। মারা যান ১,৭০৫ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এ বছর DENV‑2 ও DENV‑3 সেরোটাইপের প্রাধান্য থাকায় পূর্ববর্তী সংক্রমণ অভিজ্ঞ রোগীদের মধ্যেও জটিলতা বৃদ্ধি পায়।

২০২৪ সালের পরিস্থিতি
২০২৪ সালে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমে ২,৮৯,৭৮৬ জনে দাঁড়ায়। তবে মৃত্যু ১,৩৮৯ জনে পৌঁছায়, যা এখনও উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ এবং মশার কীটনাশক‑প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ
সরকার ইতিমধ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে—
• মশা নিধন কার্যক্রম: শহর ও গ্রামে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে অভিযান।
• সচেতনতা বৃদ্ধি: গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচার।
• চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ: হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ ইউনিট স্থাপন।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণও অত্যন্ত জরুরি।

ভবিষ্যৎ করণীয়
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে—
• উলবাকিয়া প্রযুক্তির ব্যবহার: মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধের একটি সম্ভাবনাময় পদ্ধতি।
• টিকা উন্নয়ন ও প্রয়োগ: কার্যকর ডেঙ্গু টিকা উদ্ভাবন ও দ্রুত প্রয়োগ।
• পরিবেশবান্ধব নগরায়ণ: জলাবদ্ধতা কমাতে ও মশার প্রজননস্থল হ্রাসে পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন।

উপসংহার
বাংলাদেশে ডেঙ্গু একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় সরকার, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। সচেতনতা বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং টিকা উন্নয়নের সমন্বয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।