সারাক্ষণ ডেস্ক
সমকালের একটি শিরোনাম “নির্বাচন বিলম্বের শঙ্কা বিএনপির”
কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তে না জড়িয়ে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ও আইনি প্রক্রিয়ায় থাকবে বিএনপি। এ জন্য আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে সরাসরি জড়ায়নি দলটি। সরকারের প্রশাসনিক আদেশের পরিবর্তে আইনি প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন ইস্যু সমাধানে আগের অবস্থানে অনড় তারা। এ জন্য আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখার অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে সঠিক বলে জানিয়েছে দলটি। আন্দোলন ও সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বের আশঙ্কা করছেন।
তারা মনে করছেন, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কি নির্বাচনও হবে না; রাষ্ট্রপতি অপসারণ, সংবিধান বাতিলের মতো একের পর এক ইস্যু সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হতে পারে। তবে কোনো কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার প্রক্রিয়ায় সম্মতি জানাবেন না বিএনপি নেতারা।
সারাদেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। কারণ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যেমন আন্দোলন হয়েছে, নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্যও হতে পারে। তাই শিগগির রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে এ রকম বিব্রতকর পরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার করতে কতদিন লাগবে? বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কি নির্বাচনও হবে না? কোনো পক্ষ যদি এমন দাবি তোলে– বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। তাহলে কি সরকার তাও মেনে নেবে? এ অবস্থায় যদি বিএনপি নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামে তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? নির্বাচন নিয়ে সরকার রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে এ নিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়বে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “সংস্কার বাস্তবায়নে দরকার বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি”
নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদের পর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে লিখিত চুক্তি করেছিল রাজনৈতিক দলগুলো, যা তিন জোটের রূপরেখা নামে পরিচিত। কিন্তু ক্ষমতায় সেই চুক্তি মানেনি দলগুলো। জুলাই অভ্যুত্থানের অর্জনও যাতে এভাবে ব্যর্থ না হয়, সে জন্য জুলাই সনদ বা সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি আদায়ের বিষয়টি সামনে আসছে। গতকাল রোববার রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত এক সংলাপেও বিষয়টি উঠে এসেছে।
সংবিধান সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক ওই সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর বাধ্যতামূলক (বাইন্ডিং) প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। অবাধ্যতামূলক (নন-বাইন্ডিং) প্রতিশ্রুতিতে জনগণের আস্থা নেই। তার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, ১৯৯০ সালের লিখিত চুক্তিও রাজনৈতিক দলগুলো মানেনি। তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিদিনই কথা বলছি। কারণ, দেশ রাজনৈতিক দলগুলোই চালাবে। অবাধ্যতামূলক জাতীয় সনদ শেষ পর্যন্ত জনগণের আস্থা অর্জন করবে না। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাবার আহ্বান জানান তিনি।
সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী ও নাগরিক কোয়ালিশনের সহ-আহ্বায়ক শহিদুল আলম। অনুষ্ঠানে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান। এসব প্রস্তাবের বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান। সংলাপে বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এনডিএম সভাপতি ববি হাজ্জাজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনার ক্ষমতা পেল কেন্দ্রীয় ব্যাংক”
অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের কারণে দেশের প্রায় দুই ডজন ব্যাংক এখন রুগ্ণ। এ তালিকায় সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকও রয়েছে। বিগত দেড় দশকে লুণ্ঠিত হওয়া রুগ্ণ ব্যাংকগুলোকে একীভূত কিংবা অধিগ্রহণ করার ক্ষমতা পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত শুক্রবার জারীকৃত ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এ ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।
৯৮টি ধারাবিশিষ্ট এ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো তফসিলি ব্যাংক অকার্যকর হয়ে গেলে বা কার্যকর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা না গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই ব্যাংককে রেজল্যুশন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। রেজল্যুশনের অর্থ হচ্ছে, দেউলিয়াত্বের মুখে পড়া ব্যাংকের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষাই হবে ব্যাংক রেজল্যুশনের প্রধান উদ্দেশ্য।
অকার্যকর ব্যাংককে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নিতে পারবে বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এক বা একাধিক শেয়ার হস্তান্তর আদেশ জারি করবে। তবে শেয়ার গ্রহীতাকে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি হতে হবে। কোনো ব্যাংকের সুবিধাভোগী মালিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যাংকের সম্পদ বা তহবিল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করলে ও প্রতারণামূলকভাবে অন্যের স্বার্থে ব্যবহার করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই ব্যাংককে রেজল্যুশনের আওতায় নিতে পারবে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “নতুন সংবিধান প্রণয়নে ২-৩ বছর লাগতে পারে”
নতুন সংবিধান প্রণয়ন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশে এই প্রক্রিয়ায় ৮ থেকে ৯ বছর সময় লেগেছে, বাংলাদেশেও তাৎক্ষণিক-ভাবে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে ২ থেকে ৩ বছর লাগতে পারে। রোববার রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশনের উদ্যোগে ‘সাংবিধানিক সংস্কারে নাগরিক জোটের ৭ প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, জাতীয় সংসদই সংবিধান প্রণয়ন করে। নতুন সংবিধান তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদই পরিচালক হিসেবে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ৭২ সালের সংবিধান সংশোধন করবে। নতুন গণপরিষদ গঠনের পর তারা কাজ শুরু করলে অন্তত ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগতে পারে। এই সময়ের জন্য কি আমরা ৭২-এর সংবিধান মেনে চলবো, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং কিছু সংস্কার জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করতেই থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ থাকা নিয়ে তিনি বলেন, এটা একটা জনপ্রিয় দাবি। আমারও দাবি। প্রধানমন্ত্রী দুই মেয়াদে বললে তো হবে না, যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ থাকতে হবে। পৃথিবীর আর কোন কোন দেশে এটা আছে, বের করেন। প্রধানমন্ত্রী দুই মেয়াদ কোথাও নাই আসলে। ভারত, যুক্তরাজ্য বলেন- কোথাও নাই। দুই মেয়াদ সমাধান না। সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাটা কমিয়ে নেয়া।
জুলাই সনদ সংবিধানে যুক্ত করার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা ধরেই নিয়েছি, সবাই জুলাই সনদের ওপর অনেক কিছুতে একমত হবেন। হয়তো এমনও হতে পারে জুলাই সনদের মৌলিক কিছু জিনিস রাখা যেতে পারে। উচ্চ কক্ষের ক্ষমতা নিয়ে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে নিয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধান বিচারপতি অসীম ক্ষমতা, তিনি দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি। উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং সংসদের কিছু মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তনের পক্ষে মত দেন আসিফ নজরুল।