০৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার” ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর নতুন বেতন কমিশন গঠন করবে পরবর্তী সরকার: সালেহউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাঁচ মামলায় জামিন প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিতে সহানুভূতির আহ্বান জানালেন জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পারওয়ার

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • 289

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

শেবালভ যদি আমাদের খামুর রোডের দিকে নজর রাখার হুকুম না দিতেন, তাহলে আমরা ওই সময়ে চালা থেকে নেমে পড়তুম। এদিকে অসংলগ্নভাবে এদিক-সেদিক থেকে গুলিচালানোর মাত্রা বাড়তে-বাড়তে ক্রমশ তা নিয়মিত গুলি-বিনিময়ে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর শ্বেতরক্ষীদের রাইফেল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে গুলিচালনাও গেল বন্ধ হয়ে, আর শুরু, হল মেশিনগানের পট-পট-পট-পট আওয়াজ। আর এই গুলিচালনার আড়ালে ওদের সৈন্যদের অসমান সারিগুলো তিরিশ-চল্লিশ পা এগিয়ে এসে ফের শুয়ে পড়ল। এরপর মেশিনগান চুপ করে গেল, আর ফের শুরু হল রাইফেল থেকে গুলি-বিনিময়। এইভাবে ক্রমশ শৃঙ্খলা আর প্রশিক্ষণের চমৎকার নিদর্শন দেখিয়ে একটানা নাছোড়বান্দা ভাবে শ্বেতরক্ষীরা আমাদের কাছে, আরও কাছে এগিয়ে আসতে লাগল।

‘শয়তানগুলো একদম নাছোড়বান্দা,’ চুবুক বিড়বিড় করে বললেন। ‘দাবাবোড়ের ঘটির মতো এগিয়ে আসচে দ্যাখো-না। এদের তো জিখারেভের দলবল বলি ঠেকচে না। জার্মান নয় তো এরা?’

আমি চে’চিয়ে উঠলুম, ‘চুবুক! খামুর রোডের দিকে একবার দেখুন দেখি। ওখানে জঙ্গলের ধার ঘে’ষে কী যেন একটা নড়ছে মনে হচ্ছে না?’

‘কই? কই? কোথায়?

‘না-না, ওদিকে নয়। আরও ডানদিক ঘে’ষে। পুকুরটার ওপাড়ে। হ্যাঁ, ওই-যে, দেখতে পাচ্ছেন?’ চে’চিয়ে বললুম আমি। আর ঠিক সেই সময়, কাচের ওপর এক ঝলক রোদ্দুর এসে পড়লে যেমন হয়, জঙ্গলের ঠিক ধার ঘে’ষে সেইরকম কী-একটা যেন ঝকমক করে উঠল।

আর একটা অদ্ভুত অচেনা শব্দে ভরে উঠল আকাশবাতাস। মরার আগে ঘোড়ার গলায় যেমন ঘড়ঘড়ানি ওঠে, অনেকটা সেইরকম শব্দ। তারপর সেই ঘড়ঘড়ানি ক্রমে পরিণত হল গর্জনে। আর গির্জের ফাটা ঘণ্টার মতো আওয়াজে ভরে উঠল বাতাস। তারপরই কাছাকাছি কিছু একটা ভেঙে পড়ার আওয়াজ পেলুম। এক মুহূর্তের জন্যে মনে হল যেন ঠিক ওইখানেই, আমার ঠিক পাশটাতেই, ধোঁয়া আর কালো গুলোর একটা মেঘের মধ্যে থেকে ঝলসে উঠল বাদামীরঙের বিদ্যুৎ। বাতাস তোলপাড় করে উঠল, আর গরম জলের ঢেউয়ের ধাক্কার মতো সেই ঝাপ্‌টা আমার পিঠে আছড়ে পড়ল যেন। যখন আমি চোখ খুললুম, দেখলুম ধসে-পড়া গোলাবাড়ির শুকনো খড়ের চালাটা সূর্যের আলোয় প্রায়-অদৃশ্য ফ্যাকাশে আগুনের শিখা মেলে দাউদাউ করে জলছে। এরপর দ্বিতীয় গোলাটা এসে পড়ল শাকসব্জির খেতে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৪)

০৮:০০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

শেবালভ যদি আমাদের খামুর রোডের দিকে নজর রাখার হুকুম না দিতেন, তাহলে আমরা ওই সময়ে চালা থেকে নেমে পড়তুম। এদিকে অসংলগ্নভাবে এদিক-সেদিক থেকে গুলিচালানোর মাত্রা বাড়তে-বাড়তে ক্রমশ তা নিয়মিত গুলি-বিনিময়ে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর শ্বেতরক্ষীদের রাইফেল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে গুলিচালনাও গেল বন্ধ হয়ে, আর শুরু, হল মেশিনগানের পট-পট-পট-পট আওয়াজ। আর এই গুলিচালনার আড়ালে ওদের সৈন্যদের অসমান সারিগুলো তিরিশ-চল্লিশ পা এগিয়ে এসে ফের শুয়ে পড়ল। এরপর মেশিনগান চুপ করে গেল, আর ফের শুরু হল রাইফেল থেকে গুলি-বিনিময়। এইভাবে ক্রমশ শৃঙ্খলা আর প্রশিক্ষণের চমৎকার নিদর্শন দেখিয়ে একটানা নাছোড়বান্দা ভাবে শ্বেতরক্ষীরা আমাদের কাছে, আরও কাছে এগিয়ে আসতে লাগল।

‘শয়তানগুলো একদম নাছোড়বান্দা,’ চুবুক বিড়বিড় করে বললেন। ‘দাবাবোড়ের ঘটির মতো এগিয়ে আসচে দ্যাখো-না। এদের তো জিখারেভের দলবল বলি ঠেকচে না। জার্মান নয় তো এরা?’

আমি চে’চিয়ে উঠলুম, ‘চুবুক! খামুর রোডের দিকে একবার দেখুন দেখি। ওখানে জঙ্গলের ধার ঘে’ষে কী যেন একটা নড়ছে মনে হচ্ছে না?’

‘কই? কই? কোথায়?

‘না-না, ওদিকে নয়। আরও ডানদিক ঘে’ষে। পুকুরটার ওপাড়ে। হ্যাঁ, ওই-যে, দেখতে পাচ্ছেন?’ চে’চিয়ে বললুম আমি। আর ঠিক সেই সময়, কাচের ওপর এক ঝলক রোদ্দুর এসে পড়লে যেমন হয়, জঙ্গলের ঠিক ধার ঘে’ষে সেইরকম কী-একটা যেন ঝকমক করে উঠল।

আর একটা অদ্ভুত অচেনা শব্দে ভরে উঠল আকাশবাতাস। মরার আগে ঘোড়ার গলায় যেমন ঘড়ঘড়ানি ওঠে, অনেকটা সেইরকম শব্দ। তারপর সেই ঘড়ঘড়ানি ক্রমে পরিণত হল গর্জনে। আর গির্জের ফাটা ঘণ্টার মতো আওয়াজে ভরে উঠল বাতাস। তারপরই কাছাকাছি কিছু একটা ভেঙে পড়ার আওয়াজ পেলুম। এক মুহূর্তের জন্যে মনে হল যেন ঠিক ওইখানেই, আমার ঠিক পাশটাতেই, ধোঁয়া আর কালো গুলোর একটা মেঘের মধ্যে থেকে ঝলসে উঠল বাদামীরঙের বিদ্যুৎ। বাতাস তোলপাড় করে উঠল, আর গরম জলের ঢেউয়ের ধাক্কার মতো সেই ঝাপ্‌টা আমার পিঠে আছড়ে পড়ল যেন। যখন আমি চোখ খুললুম, দেখলুম ধসে-পড়া গোলাবাড়ির শুকনো খড়ের চালাটা সূর্যের আলোয় প্রায়-অদৃশ্য ফ্যাকাশে আগুনের শিখা মেলে দাউদাউ করে জলছে। এরপর দ্বিতীয় গোলাটা এসে পড়ল শাকসব্জির খেতে।