০৯:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার” ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর নতুন বেতন কমিশন গঠন করবে পরবর্তী সরকার: সালেহউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাঁচ মামলায় জামিন প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিতে সহানুভূতির আহ্বান জানালেন জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পারওয়ার

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৫)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • 175

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘এস, নেবে পড়ি,’ চুবুক বললেন। আমার দিকে মুখ ফেরালেন যখন, দেখলুম সে মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। ‘আচ্ছা পাকে পড়া গেচে এবার। আমার ধারণা, ওরা কখনই জিখারেভের দল নয়, নিঘুঘাত জার্মান ওরা। খামুর রোডে ওরা কামান বসিয়েচে।’

ছুটতে-ছুটতে জঙ্গলের ধারে গিয়ে প্রথম যে-লোকটির সঙ্গে আমার দেখা হল, সে লাল ফৌজের বে’টেখাটো এক সিপাহি। লোকে তাকে খট্রাশ বলে ডাকত।

ঘাসের ওপর বসে পড়ে সে তার রক্তে-ভেজা টিউনিকের হাতাটা অস্ট্রিয়ান বেয়োনেট দিয়ে কেটে ফেলছিল। পাশেই শোয়ানো ছিল তার রাইফেলটা। রাইফেলের বলটুটা ছিল খোলা, আর তার তলা থেকে একটা কার্তুজের খোল তখনও বের না-করা অবস্থায় দেখা যাচ্ছিল।

আমাদের প্রশ্নের জবাব না-দিয়েই সে চ্যাঁচাতে লাগল, ‘জার্মান! জার্মান এসে গেচে! কেটে পড়তে হচ্ছে!’

জল তোলার জন্যে তাকে আমার টিনের মগটা দিয়ে দৌড়ে এগিয়ে গেলুম।

সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের সেই প্রথম সত্যিকার যুদ্ধের ঘটনাবলী স্মরণ করতে গিয়ে এখন দেখছি, ঘটনার পারম্পর্যের দিক থেকে বিচারে শেষ যে ঘটনাটি আমি মনে করতে পারছি তা হল, খট্রাশের সেই রক্তে-ভেজা জামার হাতা আর জার্মানদের সম্পর্কে তার কথাগুলো। এরপর খাদের মধ্যে ভাস্কা শর্মাকভ যখন আমার কাছে এসে জল খাওয়ার জন্যে আমার মগটা চাইল সেই মুহত থেকে আবার বাকি সবকিছু আমার পরিষ্কার মনে পড়ে।

এসেই ভাস্কা আমায় জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার হাতে ওটা কী?’

তাকিয়ে যা দেখলুম তাতে লজ্জায় লাল হয়ে উঠলাম। দেখি, আমার বাঁ-হাতে মন্ত বড় একটুকরো ছাইরঙের পাথর শক্ত-করে-ধরা। কী করে যে ওটা আমার হাতে এল তা জানি না।

জিজ্ঞেস করলুম, ‘ভাস্কা, মাথায় তোমার হেলমেট কেন?’

‘একটা জার্মানের মাথা থেকে নিয়েচি। এটু, জল খাওয়াও দেখি।’

‘আমার কাছে তো মগ নেই। আমার মগটা খট্টাশকে দিয়েছি।’

‘খট্রাশরে দিয়েচ?’ ভাস্কা একটা শিস দিল। ‘তাইলে ওটারে তুমি বিদেয় দিয়েচ ভাবতি পার।’

‘তার মানে? আমি তো জল খাওয়ার জন্যে ওকে মগটা দিয়েছি।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৫)

০৮:০০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

‘এস, নেবে পড়ি,’ চুবুক বললেন। আমার দিকে মুখ ফেরালেন যখন, দেখলুম সে মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। ‘আচ্ছা পাকে পড়া গেচে এবার। আমার ধারণা, ওরা কখনই জিখারেভের দল নয়, নিঘুঘাত জার্মান ওরা। খামুর রোডে ওরা কামান বসিয়েচে।’

ছুটতে-ছুটতে জঙ্গলের ধারে গিয়ে প্রথম যে-লোকটির সঙ্গে আমার দেখা হল, সে লাল ফৌজের বে’টেখাটো এক সিপাহি। লোকে তাকে খট্রাশ বলে ডাকত।

ঘাসের ওপর বসে পড়ে সে তার রক্তে-ভেজা টিউনিকের হাতাটা অস্ট্রিয়ান বেয়োনেট দিয়ে কেটে ফেলছিল। পাশেই শোয়ানো ছিল তার রাইফেলটা। রাইফেলের বলটুটা ছিল খোলা, আর তার তলা থেকে একটা কার্তুজের খোল তখনও বের না-করা অবস্থায় দেখা যাচ্ছিল।

আমাদের প্রশ্নের জবাব না-দিয়েই সে চ্যাঁচাতে লাগল, ‘জার্মান! জার্মান এসে গেচে! কেটে পড়তে হচ্ছে!’

জল তোলার জন্যে তাকে আমার টিনের মগটা দিয়ে দৌড়ে এগিয়ে গেলুম।

সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের সেই প্রথম সত্যিকার যুদ্ধের ঘটনাবলী স্মরণ করতে গিয়ে এখন দেখছি, ঘটনার পারম্পর্যের দিক থেকে বিচারে শেষ যে ঘটনাটি আমি মনে করতে পারছি তা হল, খট্রাশের সেই রক্তে-ভেজা জামার হাতা আর জার্মানদের সম্পর্কে তার কথাগুলো। এরপর খাদের মধ্যে ভাস্কা শর্মাকভ যখন আমার কাছে এসে জল খাওয়ার জন্যে আমার মগটা চাইল সেই মুহত থেকে আবার বাকি সবকিছু আমার পরিষ্কার মনে পড়ে।

এসেই ভাস্কা আমায় জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার হাতে ওটা কী?’

তাকিয়ে যা দেখলুম তাতে লজ্জায় লাল হয়ে উঠলাম। দেখি, আমার বাঁ-হাতে মন্ত বড় একটুকরো ছাইরঙের পাথর শক্ত-করে-ধরা। কী করে যে ওটা আমার হাতে এল তা জানি না।

জিজ্ঞেস করলুম, ‘ভাস্কা, মাথায় তোমার হেলমেট কেন?’

‘একটা জার্মানের মাথা থেকে নিয়েচি। এটু, জল খাওয়াও দেখি।’

‘আমার কাছে তো মগ নেই। আমার মগটা খট্টাশকে দিয়েছি।’

‘খট্রাশরে দিয়েচ?’ ভাস্কা একটা শিস দিল। ‘তাইলে ওটারে তুমি বিদেয় দিয়েচ ভাবতি পার।’

‘তার মানে? আমি তো জল খাওয়ার জন্যে ওকে মগটা দিয়েছি।’