০৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার” ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর নতুন বেতন কমিশন গঠন করবে পরবর্তী সরকার: সালেহউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাঁচ মামলায় জামিন প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবিতে সহানুভূতির আহ্বান জানালেন জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পারওয়ার

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৮)

  • Sarakhon Report
  • ০৮:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • 187

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ওই দিনের যুদ্ধে আমাদের বাহিনীর দশজন লোক মারা যায়। আহত হয় চোন্দ জন। তার মধ্যে ছ-জন মারা যায় পরে। যদি আমাদের ডাক্তার আর ওষুধসহ আহতদের চিকিৎসার কোনো উপযুক্ত কেন্দ্র থাকত তাহলে আহতদের মধ্যে অনেকেই প্রাণে বেঁচে যেতে পারত সেদিন।

আহতদের ক্ষতস্থান-চিকিৎসা কেন্দ্রের বদলে আমাদের ছিল এক টুকরো ঘাসে-ঢাকা জমি, আর ডাক্তারের বদলে ছিলেন কালুগিন নামে জার্মান যুদ্ধ-ফেরত চিকিৎসা-কেন্দ্রের একজন আর্দালি। ওষুধ বলতে সবে ধন নীলমণি ছিল আমাদের এক ক্যানেস্তারা-ভরতি টিকচার আয়োডিন। ঝালে-ঝোলে-অম্বলে, অর্থাৎ যে-কোনো রকমের কাটাছে’ড়ায় আয়োডিন ব্যবহারে আমরা ছিলুম অমিতব্যয়ী। এক সময়ে দেখলুম কালুগিন কাঠের তৈরি বড় একটা সুপের চামচ আয়োডিনে কানায় কানায় ভরে লুকোইয়ানভের মস্ত বড় দগদগে ঘাটায় তার সবটুকুই ঢেলে দিলেন।

তারপর লুকোইয়ানভকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, ‘যন্তন্না একটুকু, বাপু, সহ্যি করতেই হবে। আইডিনটা তোমার পক্ষে বড় উদ্‌গারি, কুইলে? এই আইডিনটুক না থাকলে তুমি বাপ, এতক্ষণে পটল তুলতে। হাঁ, এ আমার গিয়ে একদম খাঁটি কথা। তা, এখন তুমি সেরে উঠলেও উঠতি পারবে।’

ওই জায়গাটা ছেড়ে আমাদের তখন উত্তরে যাওয়ার কথা। সেখানে লাল ফৌজের নিয়মিত ইউনিটগুলো সবাই মিলে একটা বেড়াজাল গড়ে তুলেছিল। সেইখানে আমাদের অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার নির্দেশ ছিল। এদিকে আমাদের ঘাটতি পড়ে গিয়েছিল কার্তুজে। কিন্তু এ-সব সত্ত্বেও আহতদের জন্যে জায়গাটা ছেড়ে নড়তে পারছিলুম না। ওদের মধ্যে জনা পাঁচেক আমাদের সঙ্গে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল, কিন্তু তিন জনের অবস্থা ছিল সঙ্গীন, তারা সেরেও উঠছিল না আবার মারাও যাচ্ছিল না। এইরকম খারাপ অবস্থা যাদের ছিল, তাদের মধ্যে একজন হল বাচ্চা বেদে ইয়াঙ্কা। ইয়া‌‌ঙ্কা নেহাতই ভাড়ে ফাড়ে আমাদের মধ্যে এসে উদয় হয়েছিল। ওর সেই উদয় হওয়ার গল্পটা বলি।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ

রণক্ষেত্রে (পর্ব-৫৮)

০৮:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

আর্কাদি গাইদার

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ওই দিনের যুদ্ধে আমাদের বাহিনীর দশজন লোক মারা যায়। আহত হয় চোন্দ জন। তার মধ্যে ছ-জন মারা যায় পরে। যদি আমাদের ডাক্তার আর ওষুধসহ আহতদের চিকিৎসার কোনো উপযুক্ত কেন্দ্র থাকত তাহলে আহতদের মধ্যে অনেকেই প্রাণে বেঁচে যেতে পারত সেদিন।

আহতদের ক্ষতস্থান-চিকিৎসা কেন্দ্রের বদলে আমাদের ছিল এক টুকরো ঘাসে-ঢাকা জমি, আর ডাক্তারের বদলে ছিলেন কালুগিন নামে জার্মান যুদ্ধ-ফেরত চিকিৎসা-কেন্দ্রের একজন আর্দালি। ওষুধ বলতে সবে ধন নীলমণি ছিল আমাদের এক ক্যানেস্তারা-ভরতি টিকচার আয়োডিন। ঝালে-ঝোলে-অম্বলে, অর্থাৎ যে-কোনো রকমের কাটাছে’ড়ায় আয়োডিন ব্যবহারে আমরা ছিলুম অমিতব্যয়ী। এক সময়ে দেখলুম কালুগিন কাঠের তৈরি বড় একটা সুপের চামচ আয়োডিনে কানায় কানায় ভরে লুকোইয়ানভের মস্ত বড় দগদগে ঘাটায় তার সবটুকুই ঢেলে দিলেন।

তারপর লুকোইয়ানভকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, ‘যন্তন্না একটুকু, বাপু, সহ্যি করতেই হবে। আইডিনটা তোমার পক্ষে বড় উদ্‌গারি, কুইলে? এই আইডিনটুক না থাকলে তুমি বাপ, এতক্ষণে পটল তুলতে। হাঁ, এ আমার গিয়ে একদম খাঁটি কথা। তা, এখন তুমি সেরে উঠলেও উঠতি পারবে।’

ওই জায়গাটা ছেড়ে আমাদের তখন উত্তরে যাওয়ার কথা। সেখানে লাল ফৌজের নিয়মিত ইউনিটগুলো সবাই মিলে একটা বেড়াজাল গড়ে তুলেছিল। সেইখানে আমাদের অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার নির্দেশ ছিল। এদিকে আমাদের ঘাটতি পড়ে গিয়েছিল কার্তুজে। কিন্তু এ-সব সত্ত্বেও আহতদের জন্যে জায়গাটা ছেড়ে নড়তে পারছিলুম না। ওদের মধ্যে জনা পাঁচেক আমাদের সঙ্গে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল, কিন্তু তিন জনের অবস্থা ছিল সঙ্গীন, তারা সেরেও উঠছিল না আবার মারাও যাচ্ছিল না। এইরকম খারাপ অবস্থা যাদের ছিল, তাদের মধ্যে একজন হল বাচ্চা বেদে ইয়াঙ্কা। ইয়া‌‌ঙ্কা নেহাতই ভাড়ে ফাড়ে আমাদের মধ্যে এসে উদয় হয়েছিল। ওর সেই উদয় হওয়ার গল্পটা বলি।