সত্যেন্দ্রকুমার বসু
এখানে অনেকগুলি স্তূপ ছিল। বুদ্ধ যে-বাড়িতে তাঁর শেষ আহার করেন, সেই কর্মকার চুন্দর বাড়ি, যে শালকুঞ্জে পরিনির্বাণ হয়, সেই স্থানে, যে জায়গায় তাঁহার দেহাবশেষ বিতরিত হয়, সেই সমস্ত জায়গায়ই একটা একটা স্তূপ ছিল। বুদ্ধের মৃত্যুর পর দেবরাজ দানবরাজ আর পৃথিবীয়।
আট জন রাজা বুদ্ধের দেহাবশেষ নিয়ে যান। পরে অশোক সেই আট রাজার নিমিত স্তূপ থেকে দেহাবশেষগুলি বার করে জম্বুদ্বীপের শেষ সীমা পর্যন্ত বিতরণ করে সেইগুলির উপর চুরাশি হাজারটি স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন।
এর পর হিউএনচাঙ বারানসীতে এলেন। তিনি এ নগরীর বহু অধিবাসী, মহাসমৃদ্ধি, পুরাতন সভ্যতা আর বহু হিন্দু মন্দিরের উল্লেখ করেছেন। ‘এইসব মন্দির অনেক তলা উচু, আর এরা বহু ভাস্কর্যে পূর্ণ। মন্দিরের যেসব অংশ কাঠে তৈরি, সেগুলি হরেক রকম চকচকে রঙ করা।
মন্দিরগুলির চারদিকে ফুলবাগান আর পরিষ্কার জলের পুষ্করিণী। এখানে অনেক সাধু-সন্ন্যাসী আছেন। বেশির ভাগই শৈব সন্ন্যাসী, কেউ চুল কেটে ফেলে, কেউ-বা জটাধারী; কেউ কেউ (জৈনরা) নগ্ন। অন্তেরা গায়ে ছাই মাখে বা মোক্ষলাভের জন্তে কঠোর তপস্যা করে।’
কাশীর একটি মন্দিরে হিউএনচাঙ এক শ ফুট উঁচু একটি তামার তৈরি শিবমৃতি দেখেছিলেন। মৃতিটি মহত্বব্যঞ্জক। তিনি বলেন, ‘দেখে মন ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হয়, যেন জীবন্ত মৃতি।’
(চলবে)