০৯:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

ইন্টারনেট ব্যয়: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে টিকে থাকার পথে এক বড় বাধা

  • Sarakhon Report
  • ০৭:০০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • 98

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • সীমিত মূলধনের ব্যবসায়ীদের জন্য ইন্টারনেট একটি নিয়মিত খরচ, যা তাদের পরিচালন ব্যয় বাড়ায়
  • অনেক দেশে সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেট সংযোগের অভাব রয়েছে এবং SMEs-দের জন্য ভর্তুকিভিত্তিক কোনো ব্যবস্থা নেই
  • দ্রুত এবং সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা অপরিহার্য, যার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন

উচ্চ ইন্টারনেট খরচ

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা, ডিজিটাল মার্কেটিং, ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম—সব ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট একটি মৌলিক উপাদান। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোসহ অনেক অঞ্চলে ইন্টারনেটের উচ্চ খরচ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (SMEs) জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়িক খরচে ভারী বোঝা

ক্ষুদ্র ব্যবসার মালিকরা সাধারণত সীমিত মূলধন নিয়ে কাজ করেন। সেখানে ইন্টারনেট খরচ একটি নিরবিচারে মাসিক খরচ হিসেবে যুক্ত হয়, যা তাদের অপারেটিং খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ পেতে উচ্চ খরচ গুনতে হয়, বিশেষ করে যারা শহরের বাইরের অঞ্চলে ব্যবসা করছেন।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া

বর্তমানে ব্যবসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ই-কমার্স ও অনলাইন বিজ্ঞাপন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথ বা নির্ভরযোগ্য সংযোগ না থাকলে এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে কার্যকরভাবে প্রতিযোগিতা করা যায় না। এতে বড় ব্যবসাগুলো যেখানে পূর্ণ ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ছোট ব্যবসাগুলো প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছে।

অনলাইন পেমেন্ট এবং গ্রাহক সেবা বাধাগ্রস্ত

ই-কমার্স বা সেবামূলক ব্যবসাগুলোর জন্য অনলাইন পেমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ধীরগতির বা অস্থির ইন্টারনেট সংযোগে লেনদেন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, ফলে গ্রাহকদের মাঝে অনাস্থা তৈরি হয়। একই সঙ্গে, চ্যাটবট বা লাইভ চ্যাটের মতো গ্রাহক সেবা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারেও বিঘ্ন ঘটে।

বিকল্প ব্যবস্থা অনুপস্থিত

অনেক দেশে ইন্টারনেট খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও সাশ্রয়ী মূল্যের বা সাবসিডি-ভিত্তিক সংযোগের সুযোগ নেই। সরকার বা বেসরকারি উদ্যোগে SMEs-দের জন্য ভর্তুকিমূলক ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় সমস্যাটি আরও প্রকট।

নীতিগত সুপারিশ

১. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভর্তুকিমূলক ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করা।
২. শহরের বাইরের অঞ্চলে ফাইবার অপটিক ও মোবাইল ব্রডব্যান্ড অবকাঠামো জোরদার করা।
৩. SME ব্যবসার ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান।
৪. ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই-দের জন্য স্বতন্ত্র কর্পোরেট পরিকল্পনা তৈরি করতে উৎসাহিত করা।

ইন্টারনেট শুধু একটি প্রযুক্তিগত মাধ্যম নয়, বরং আধুনিক ব্যবসার জীবনরেখা। তাই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সফলতা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নির্ভরযোগ্য, দ্রুত ও সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৪২)

ইন্টারনেট ব্যয়: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে টিকে থাকার পথে এক বড় বাধা

০৭:০০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • সীমিত মূলধনের ব্যবসায়ীদের জন্য ইন্টারনেট একটি নিয়মিত খরচ, যা তাদের পরিচালন ব্যয় বাড়ায়
  • অনেক দেশে সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেট সংযোগের অভাব রয়েছে এবং SMEs-দের জন্য ভর্তুকিভিত্তিক কোনো ব্যবস্থা নেই
  • দ্রুত এবং সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা অপরিহার্য, যার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন

উচ্চ ইন্টারনেট খরচ

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা, ডিজিটাল মার্কেটিং, ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম—সব ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট একটি মৌলিক উপাদান। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোসহ অনেক অঞ্চলে ইন্টারনেটের উচ্চ খরচ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (SMEs) জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়িক খরচে ভারী বোঝা

ক্ষুদ্র ব্যবসার মালিকরা সাধারণত সীমিত মূলধন নিয়ে কাজ করেন। সেখানে ইন্টারনেট খরচ একটি নিরবিচারে মাসিক খরচ হিসেবে যুক্ত হয়, যা তাদের অপারেটিং খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন ব্রডব্যান্ড সংযোগ পেতে উচ্চ খরচ গুনতে হয়, বিশেষ করে যারা শহরের বাইরের অঞ্চলে ব্যবসা করছেন।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া

বর্তমানে ব্যবসার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ই-কমার্স ও অনলাইন বিজ্ঞাপন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যান্ডউইথ বা নির্ভরযোগ্য সংযোগ না থাকলে এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে কার্যকরভাবে প্রতিযোগিতা করা যায় না। এতে বড় ব্যবসাগুলো যেখানে পূর্ণ ডিজিটাল সুবিধা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ছোট ব্যবসাগুলো প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছে।

অনলাইন পেমেন্ট এবং গ্রাহক সেবা বাধাগ্রস্ত

ই-কমার্স বা সেবামূলক ব্যবসাগুলোর জন্য অনলাইন পেমেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ধীরগতির বা অস্থির ইন্টারনেট সংযোগে লেনদেন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, ফলে গ্রাহকদের মাঝে অনাস্থা তৈরি হয়। একই সঙ্গে, চ্যাটবট বা লাইভ চ্যাটের মতো গ্রাহক সেবা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারেও বিঘ্ন ঘটে।

বিকল্প ব্যবস্থা অনুপস্থিত

অনেক দেশে ইন্টারনেট খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও সাশ্রয়ী মূল্যের বা সাবসিডি-ভিত্তিক সংযোগের সুযোগ নেই। সরকার বা বেসরকারি উদ্যোগে SMEs-দের জন্য ভর্তুকিমূলক ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় সমস্যাটি আরও প্রকট।

নীতিগত সুপারিশ

১. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভর্তুকিমূলক ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করা।
২. শহরের বাইরের অঞ্চলে ফাইবার অপটিক ও মোবাইল ব্রডব্যান্ড অবকাঠামো জোরদার করা।
৩. SME ব্যবসার ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান।
৪. ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএমই-দের জন্য স্বতন্ত্র কর্পোরেট পরিকল্পনা তৈরি করতে উৎসাহিত করা।

ইন্টারনেট শুধু একটি প্রযুক্তিগত মাধ্যম নয়, বরং আধুনিক ব্যবসার জীবনরেখা। তাই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সফলতা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য নির্ভরযোগ্য, দ্রুত ও সাশ্রয়ী ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।