০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতে ডিআরসি-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর কংগ্রেসের বহু নেতা ইন্দিরা জি ও জেপি-র সংলাপ চেয়েছিলেন, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল তা হতে দেয়নি হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩২) ট্রাম্পের বিপরীতে, প্রাচীন চীন এর শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর ঐতিহ্য রণক্ষেত্রে (পর্ব-৭৭) সমুদ্রের ওপার থেকে নতুন স্বপ্ন: তাইওয়ান তরুণদের ফুচিয়ানে নতুন জীবনগাঁথা ব্যর্থ কলম্বো, গলের লড়াই -এ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ঘরে জয় কেন ? ‘আকাশ হয়ে যাই’ মিউজিক ভিডিতে প্রশংসিত পূর্ণিমা বৃষ্টি সাউথ চায়নান মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন: ইরান আক্রমনে লাভ ক্ষতি

রিকশার হ্যান্ডেলে বাঁধা জীবন: মজনু মিয়ার দিনরাত্রি (পর্ব-১)

  • Sarakhon Report
  • ০৩:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • 81

সারাক্ষণ রিপোর্ট 

ভোরে ঘুম ভাঙে নাঘুমিয়ে থাকলেও মনে হয় রাস্তায় আছি…”

৪৮ বছর বয়সী মজনু মিয়া। বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে। ঢাকায় এসেছেন ১২ বছর আগে। স্ত্রী-সন্তান গ্রামে, আর তিনি থাকেন মিরপুরের একটি ঘিঞ্জি ভাড়া ঘরে, চারজন রিকশাচালকের সঙ্গে। বিছানার জায়গা ভাগাভাগি করে, সময় ধরে শোয়।

দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। ২০০ টাকা রিকশার মালিককে দিতে হয়বাকি ২০০ টাকা দিয়ে একবেলা ভাত আর একটু ডাল-তরকারি… গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর কিছু থাকে না, বললেন মজনু।

সকাল শুরু হয় কষ্ট দিয়ে

মজনু প্রতিদিন ভোর ৫:৩০ মিনিটে ঘুম থেকে ওঠেন। ছয়টার মধ্যে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রথম ঘণ্টাটা চলে খালি, কারণ যাত্রী তখনও বেরোয় না। সকাল ৭টার পর থেকে শুরু হয় কিছুটা যাত্রী পাওয়া।

আগে মোহাম্মদপুর থিকা গুলশান পর্যন্ত চালাইতাম। এখন রাস্তা বন্ধপুলিশ তো রিকশা দেখলেই হাঁকায়। তাই অলিগলি ঘুইরা চলিকিন্তু ভাড়া পাই কম।

খাওয়ার কষ্টে শরীর দুর্বল

একবেলা ভাত, অন্য বেলা হয়তো শুধু বিস্কুট বা কলা। গোশত মাসে একবার হয় না।

একবেলা পেট ভরলে আল্লাহর রহমত মনে হয়। শরীর আর আগের মতো নাইবুকে ব্যথা হয় মাঝেমধ্যে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা কখনও করাননি। ওষুধ কিনতেও ভয় পান—“ওষুধ কিনলে খাই কি?”

ঋণ আর টানাটানির দিন

মজনুর ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল ফি পাঠাতে মাসে ৪০০ টাকা লাগলেও মাঝে মাঝে দিতে পারেন না। প্রতিবেশীর কাছে ৩ হাজার টাকা ধার আছে, সুদে। দিনে আয় কম, তাই শোধ করার সামর্থ্যও হয় না।

চাইছেলে মানুষ হোকএই জীবন যেন না আসে তার কপালে। কিন্তু আয় না বাড়লে কিভাবে সম্ভব বলেন?”

ছোট্ট একটা স্বপ্ন

মজনুর স্বপ্ন—একটা নিজস্ব রিকশা কিনবেন, যেন ভাড়া না দিতে হয়। আর একদিন পরিবারকে ঢাকায় আনবেন, নিজের ছোট্ট একটা ঘরে।

নিজের রিকশা থাকলে ২০০ টাকা বাঁচত দিনে। বছর গেলে লাখ টাকা হতো। কিন্তু টাকা জমানোর সুযোগ কই?”

জীবন চালানোর নামই যেন রিকশা

মজনু মিয়ার মতো হাজারো রিকশাচালক ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন ঘাম ঝরাচ্ছেন, ভাঙা শরীর নিয়ে রিকশা চালিয়ে চলেছেন, শুধু বাঁচার তাগিদে। উন্নয়নের শহরে তাঁরা যেন হারিয়ে যাওয়া কিছু কণ্ঠ, যাদের কথা শোনার কেউ নেই।

ডেমোক্র্যাটদের নীতির ব্যর্থতা যেভাবে মামদানিকে জয়ী করল

রিকশার হ্যান্ডেলে বাঁধা জীবন: মজনু মিয়ার দিনরাত্রি (পর্ব-১)

০৩:৫৩:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট 

ভোরে ঘুম ভাঙে নাঘুমিয়ে থাকলেও মনে হয় রাস্তায় আছি…”

৪৮ বছর বয়সী মজনু মিয়া। বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে। ঢাকায় এসেছেন ১২ বছর আগে। স্ত্রী-সন্তান গ্রামে, আর তিনি থাকেন মিরপুরের একটি ঘিঞ্জি ভাড়া ঘরে, চারজন রিকশাচালকের সঙ্গে। বিছানার জায়গা ভাগাভাগি করে, সময় ধরে শোয়।

দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। ২০০ টাকা রিকশার মালিককে দিতে হয়বাকি ২০০ টাকা দিয়ে একবেলা ভাত আর একটু ডাল-তরকারি… গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর কিছু থাকে না, বললেন মজনু।

সকাল শুরু হয় কষ্ট দিয়ে

মজনু প্রতিদিন ভোর ৫:৩০ মিনিটে ঘুম থেকে ওঠেন। ছয়টার মধ্যে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রথম ঘণ্টাটা চলে খালি, কারণ যাত্রী তখনও বেরোয় না। সকাল ৭টার পর থেকে শুরু হয় কিছুটা যাত্রী পাওয়া।

আগে মোহাম্মদপুর থিকা গুলশান পর্যন্ত চালাইতাম। এখন রাস্তা বন্ধপুলিশ তো রিকশা দেখলেই হাঁকায়। তাই অলিগলি ঘুইরা চলিকিন্তু ভাড়া পাই কম।

খাওয়ার কষ্টে শরীর দুর্বল

একবেলা ভাত, অন্য বেলা হয়তো শুধু বিস্কুট বা কলা। গোশত মাসে একবার হয় না।

একবেলা পেট ভরলে আল্লাহর রহমত মনে হয়। শরীর আর আগের মতো নাইবুকে ব্যথা হয় মাঝেমধ্যে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা কখনও করাননি। ওষুধ কিনতেও ভয় পান—“ওষুধ কিনলে খাই কি?”

ঋণ আর টানাটানির দিন

মজনুর ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল ফি পাঠাতে মাসে ৪০০ টাকা লাগলেও মাঝে মাঝে দিতে পারেন না। প্রতিবেশীর কাছে ৩ হাজার টাকা ধার আছে, সুদে। দিনে আয় কম, তাই শোধ করার সামর্থ্যও হয় না।

চাইছেলে মানুষ হোকএই জীবন যেন না আসে তার কপালে। কিন্তু আয় না বাড়লে কিভাবে সম্ভব বলেন?”

ছোট্ট একটা স্বপ্ন

মজনুর স্বপ্ন—একটা নিজস্ব রিকশা কিনবেন, যেন ভাড়া না দিতে হয়। আর একদিন পরিবারকে ঢাকায় আনবেন, নিজের ছোট্ট একটা ঘরে।

নিজের রিকশা থাকলে ২০০ টাকা বাঁচত দিনে। বছর গেলে লাখ টাকা হতো। কিন্তু টাকা জমানোর সুযোগ কই?”

জীবন চালানোর নামই যেন রিকশা

মজনু মিয়ার মতো হাজারো রিকশাচালক ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন ঘাম ঝরাচ্ছেন, ভাঙা শরীর নিয়ে রিকশা চালিয়ে চলেছেন, শুধু বাঁচার তাগিদে। উন্নয়নের শহরে তাঁরা যেন হারিয়ে যাওয়া কিছু কণ্ঠ, যাদের কথা শোনার কেউ নেই।