১১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে বোমা নিক্ষেপ, নিহত এক পথচারী অসম ভিআইপি সুবিধা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন: নির্বাচন কমিশনকে জানাল জামায়াত বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটিতে টানা তিন দিন বন্ধ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে বড়দিন, উৎসব ঘিরে শুভেচ্ছা ও বাড়তি নিরাপত্তা উপেক্ষিত রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানে বিশ্বব্যাংকের নতুন অর্থায়ন, বাংলাদেশে অনুমোদন ১৫০ কোটি ডলার তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে সরকারের স্বাগত, পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস গাজীপুরে জাসাস নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা টাকা-ডলার বিনিময় হারে বাড়ছে ফাঁক, বৈদেশিক প্রতিযোগিতায় ঝুঁকির সতর্কতা

ভারতের কূটনৈতিক বার্তা: বাংলাদেশে দ্রুত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের উদ্বেগ

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ, বিক্ষোভ এবং অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ভারত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—তারা যেন দ্রুত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে।

সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণের দাবি এই রাজনৈতিক চাপকে আরও তীব্র করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য: জনগণের ইচ্ছাই হোক নির্ধারক

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,

“নির্বাচন নিয়ে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট এবং আমরা ধারাবাহিকভাবে তা তুলে ধরছি। বাংলাদেশের উচিত জনগণের মত ও ম্যান্ডেট নির্ধারণে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করা।”

তিনি আরও বলেন, ভারত চায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক হোক “ইতিবাচক ও গঠনমূলক”, যা দুই দেশের জনগণের স্বার্থে নিবেদিত থাকবে।

ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিস্তার

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশে বিক্ষোভ জোরালো হয়েছে।

বিএনপি ও সেনাবাহিনী– উভয় পক্ষই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। কিন্তু ইউনূস জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন হতে পারে।

ভারতকে ‘বাধা’ হিসেবে উল্লেখ, পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিল দিল্লি

সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মুহাম্মদ ইউনূস ভারতকে বাংলাদেশের জন্য বড় সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল কড়া। রণধীর জয়সওয়াল বলেন,

“সরকার পরিচালনার বিষয় সম্পূর্ণ ঢাকার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ ধরনের মন্তব্য শুধু দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর প্রচেষ্টা।”

তিনি আরও বলেন,

“অভ্যন্তরীণ সংকট অন্যের উপর চাপিয়ে সমাধান সম্ভব নয়।”

সরকারি কর্মচারীদের বিদ্রোহ শাস্তিমূলক অধ্যাদেশ

বাংলাদেশের প্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে, যাতে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে কর্মচারীদের প্রক্রিয়া ছাড়াই বরখাস্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরকারি কর্মচারীরা বিক্ষোভে নামেন এবং তারা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।

শিক্ষকদের ধর্মঘট এনবিআর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক বেতন বৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে গেছেন।

এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির ঘোষণার পর কর বিভাগের কর্মচারীরা তীব্র প্রতিবাদ জানালে, সরকার বাধ্য হয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে।

দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন

ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে উত্তেজনার মধ্যে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে ভারত গমনের পর সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

ভারত পরবর্তীতে অভিযোগ করে, অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর নির্যাতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই অভিযোগ ইউনূস “অতিরঞ্জিত” বলে উড়িয়ে দেন।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

বিআরটিএতে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা ও পাসপোর্ট দপ্তরও শীর্ষে

ভারতের কূটনৈতিক বার্তা: বাংলাদেশে দ্রুত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি

০৪:০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের উদ্বেগ

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ, বিক্ষোভ এবং অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ভারত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—তারা যেন দ্রুত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে।

সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণের দাবি এই রাজনৈতিক চাপকে আরও তীব্র করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য: জনগণের ইচ্ছাই হোক নির্ধারক

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,

“নির্বাচন নিয়ে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট এবং আমরা ধারাবাহিকভাবে তা তুলে ধরছি। বাংলাদেশের উচিত জনগণের মত ও ম্যান্ডেট নির্ধারণে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করা।”

তিনি আরও বলেন, ভারত চায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক হোক “ইতিবাচক ও গঠনমূলক”, যা দুই দেশের জনগণের স্বার্থে নিবেদিত থাকবে।

ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিস্তার

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশে বিক্ষোভ জোরালো হয়েছে।

বিএনপি ও সেনাবাহিনী– উভয় পক্ষই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। কিন্তু ইউনূস জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন হতে পারে।

ভারতকে ‘বাধা’ হিসেবে উল্লেখ, পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিল দিল্লি

সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মুহাম্মদ ইউনূস ভারতকে বাংলাদেশের জন্য বড় সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল কড়া। রণধীর জয়সওয়াল বলেন,

“সরকার পরিচালনার বিষয় সম্পূর্ণ ঢাকার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ ধরনের মন্তব্য শুধু দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর প্রচেষ্টা।”

তিনি আরও বলেন,

“অভ্যন্তরীণ সংকট অন্যের উপর চাপিয়ে সমাধান সম্ভব নয়।”

সরকারি কর্মচারীদের বিদ্রোহ শাস্তিমূলক অধ্যাদেশ

বাংলাদেশের প্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে, যাতে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে কর্মচারীদের প্রক্রিয়া ছাড়াই বরখাস্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরকারি কর্মচারীরা বিক্ষোভে নামেন এবং তারা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।

শিক্ষকদের ধর্মঘট এনবিআর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক বেতন বৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে গেছেন।

এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির ঘোষণার পর কর বিভাগের কর্মচারীরা তীব্র প্রতিবাদ জানালে, সরকার বাধ্য হয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে।

দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন

ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে উত্তেজনার মধ্যে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে ভারত গমনের পর সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

ভারত পরবর্তীতে অভিযোগ করে, অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর নির্যাতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই অভিযোগ ইউনূস “অতিরঞ্জিত” বলে উড়িয়ে দেন।