১২:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশায় দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত চার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৭৮) রাশিয়া, চীন ও ইরানের মাঝের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান নরওয়ের বড়দিনে বিতর্কিত খাবার লুটেফিস্কের প্রত্যাবর্তন, ঐতিহ্যেই ফিরছে স্বাদ প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৪৫) নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২)

হৈরব ও ভৈরব

হৈরব হাসে। যোগমায়ার এক চিলতে ছায়ার ছেঁডাপাটিতে একটু এগিয়ে ব’সে বলে, ‘ফোটের বিষে আমার বলে দিশা আছিলো না, যেমুন ভূঁইয়ায় ভূঁইসা থুইছে, অহনে তুই কছকি আরাম, কিনা আরামখান! ক্যান, তুই সেবা করছ নাই, পল্লব দিছ নাই?’

‘দিছিলামনিকি?’ যোগমায়া ভিজে চুলের ডগায় ঝটাৎ ক’রে হাতের একটা কোপ মেরে বললে, ‘তোমার বইনে না দিছিলো?’

‘বইনে দিবো ক্যান-‘ হৈরব বললে, ‘তুই তো আছিলিই!’

যোগমায়া বললে, ‘তোমার বইনমাগীরে ডাইকা না কইরা দেও, হে জানি চাউল না চিবায়, ডাঁসা দিয়া নকশা ছেঁইচা দিমু কয়া রাখলাম, অলক্ষীর ঝাড়, ভাতারখাকি-‘

হৈরব গলা চড়িয়ে বললে, ‘ভালো হইতাছে না দয়া, ভালো হইতাছে না। তর লাইগা আমারে কতোগুলিন কথা শুনাইলো তর বৌঠানে-‘

আড়াল থেকে দয়াও গলা চড়ায়।

‘বৌঠাইনের মনে শান্তি নাই, ঠাইনরে তুমি আবার বিয়া করাও!’

‘রয়, তরে পায়া লই, ভাতারখাকি তর লাগল পায়া লই, যেমুন পোয়াতি হইছে, বাইর করুমনে চাউল চিবানি-‘

যোগমায়া স’রে যেতেই ভৈরব বলে, ‘পিসিরে না করেন তো, কিয়ের এ্যামুন আউখাউ’

হৈরব বিস্মিত হয়ে বললে, ‘না করুম, ক্যান?’

‘আজুইরা বাজাবাজি, হুদাহুদি প্যাচাল-‘

এগুলিরে বাজাবাজি কয় ?’ হৈরব পায়ের আঙুলের গেঁজে ওঠা নখুনির চারপাশে হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ‘তরা যে কি হইলি, বুঝি না তগো। ঘর হইলো গিয়া তর বাগান, বাগানে পাখিরা তো চিকুর পারবই। ভানু হইলে কি হইতো। ভানুর লগে বনাবস্তি আছিলো তগো? কেউরে থুয়া কতা কইছে হ্যায়? বারিখান মাথায় কইরা রাখছে মাইয়ায়। ঢাকের কাচা লয়া তর মায়ে গেছে পিটাইতে, তো হ্যা-ও কুইদা আইছে ছিট লয়া, কইছে খারাইলা ক্যান মনসাকানি, মারবা না? আমিও ঢাকীর মাইয়া, মাইরা দ্যাখো ক্যামনে তোমার পিঠের মদে এই ব্যাতের ছিট দিয়া দশখুশি বাজাই। হাঃ।

তো মাইয়ায় দশখুশিরোই বোল তুলছে মুহে, আর তর মায়ে অক্করে মাত্রা ভাগ কইরা কইরা ঝাঁঝিকাঁসির বারি ফালাইছে, শ্যাষম্যাষ পাও বিছায়া কানবার বইছে’ হৈরব হাহা ক’রে হাসতে থাকে; তার হাসির গায়ে ঝলমল করে পালপার্বণ, ঝাড়লণ্ঠন আর মৃদঙ্গের শব্দ, সন্ধ্যারতি।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ইনকিলাব মঞ্চের ডাকে সারাদেশে দোয়া ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২)

১২:০০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

হৈরব ও ভৈরব

হৈরব হাসে। যোগমায়ার এক চিলতে ছায়ার ছেঁডাপাটিতে একটু এগিয়ে ব’সে বলে, ‘ফোটের বিষে আমার বলে দিশা আছিলো না, যেমুন ভূঁইয়ায় ভূঁইসা থুইছে, অহনে তুই কছকি আরাম, কিনা আরামখান! ক্যান, তুই সেবা করছ নাই, পল্লব দিছ নাই?’

‘দিছিলামনিকি?’ যোগমায়া ভিজে চুলের ডগায় ঝটাৎ ক’রে হাতের একটা কোপ মেরে বললে, ‘তোমার বইনে না দিছিলো?’

‘বইনে দিবো ক্যান-‘ হৈরব বললে, ‘তুই তো আছিলিই!’

যোগমায়া বললে, ‘তোমার বইনমাগীরে ডাইকা না কইরা দেও, হে জানি চাউল না চিবায়, ডাঁসা দিয়া নকশা ছেঁইচা দিমু কয়া রাখলাম, অলক্ষীর ঝাড়, ভাতারখাকি-‘

হৈরব গলা চড়িয়ে বললে, ‘ভালো হইতাছে না দয়া, ভালো হইতাছে না। তর লাইগা আমারে কতোগুলিন কথা শুনাইলো তর বৌঠানে-‘

আড়াল থেকে দয়াও গলা চড়ায়।

‘বৌঠাইনের মনে শান্তি নাই, ঠাইনরে তুমি আবার বিয়া করাও!’

‘রয়, তরে পায়া লই, ভাতারখাকি তর লাগল পায়া লই, যেমুন পোয়াতি হইছে, বাইর করুমনে চাউল চিবানি-‘

যোগমায়া স’রে যেতেই ভৈরব বলে, ‘পিসিরে না করেন তো, কিয়ের এ্যামুন আউখাউ’

হৈরব বিস্মিত হয়ে বললে, ‘না করুম, ক্যান?’

‘আজুইরা বাজাবাজি, হুদাহুদি প্যাচাল-‘

এগুলিরে বাজাবাজি কয় ?’ হৈরব পায়ের আঙুলের গেঁজে ওঠা নখুনির চারপাশে হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ‘তরা যে কি হইলি, বুঝি না তগো। ঘর হইলো গিয়া তর বাগান, বাগানে পাখিরা তো চিকুর পারবই। ভানু হইলে কি হইতো। ভানুর লগে বনাবস্তি আছিলো তগো? কেউরে থুয়া কতা কইছে হ্যায়? বারিখান মাথায় কইরা রাখছে মাইয়ায়। ঢাকের কাচা লয়া তর মায়ে গেছে পিটাইতে, তো হ্যা-ও কুইদা আইছে ছিট লয়া, কইছে খারাইলা ক্যান মনসাকানি, মারবা না? আমিও ঢাকীর মাইয়া, মাইরা দ্যাখো ক্যামনে তোমার পিঠের মদে এই ব্যাতের ছিট দিয়া দশখুশি বাজাই। হাঃ।

তো মাইয়ায় দশখুশিরোই বোল তুলছে মুহে, আর তর মায়ে অক্করে মাত্রা ভাগ কইরা কইরা ঝাঁঝিকাঁসির বারি ফালাইছে, শ্যাষম্যাষ পাও বিছায়া কানবার বইছে’ হৈরব হাহা ক’রে হাসতে থাকে; তার হাসির গায়ে ঝলমল করে পালপার্বণ, ঝাড়লণ্ঠন আর মৃদঙ্গের শব্দ, সন্ধ্যারতি।