১০:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ উত্তর জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা ও রেল চলাচলে বিঘ্ন” জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল আবুল খায়ের গ্রুপ “ওরা করলে, আমরা প্রস্তুত”: পাকিস্তানের পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে রাজনাথ সিংয়ের হুঁশিয়ারি বেঙ্গালুরুর জেলে আইএস জঙ্গি ও সিরিয়াল ধর্ষকের মোবাইল ব্যবহার ফাঁস, তদন্তে নেমেছে কর্ণাটক সরকার পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের অভূতপূর্ব পদোন্নতি — এখন দেশের প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বর্তমানের সব জাতীয় সংকটই সরকারের সাজানো নাটক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের সঙ্গে টাকা ও ট্যারিফ বিরোধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে আদানি পাওয়ার” ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর নতুন বেতন কমিশন গঠন করবে পরবর্তী সরকার: সালেহউদ্দিন আহমেদ

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২)

হৈরব ও ভৈরব

হৈরব হাসে। যোগমায়ার এক চিলতে ছায়ার ছেঁডাপাটিতে একটু এগিয়ে ব’সে বলে, ‘ফোটের বিষে আমার বলে দিশা আছিলো না, যেমুন ভূঁইয়ায় ভূঁইসা থুইছে, অহনে তুই কছকি আরাম, কিনা আরামখান! ক্যান, তুই সেবা করছ নাই, পল্লব দিছ নাই?’

‘দিছিলামনিকি?’ যোগমায়া ভিজে চুলের ডগায় ঝটাৎ ক’রে হাতের একটা কোপ মেরে বললে, ‘তোমার বইনে না দিছিলো?’

‘বইনে দিবো ক্যান-‘ হৈরব বললে, ‘তুই তো আছিলিই!’

যোগমায়া বললে, ‘তোমার বইনমাগীরে ডাইকা না কইরা দেও, হে জানি চাউল না চিবায়, ডাঁসা দিয়া নকশা ছেঁইচা দিমু কয়া রাখলাম, অলক্ষীর ঝাড়, ভাতারখাকি-‘

হৈরব গলা চড়িয়ে বললে, ‘ভালো হইতাছে না দয়া, ভালো হইতাছে না। তর লাইগা আমারে কতোগুলিন কথা শুনাইলো তর বৌঠানে-‘

আড়াল থেকে দয়াও গলা চড়ায়।

‘বৌঠাইনের মনে শান্তি নাই, ঠাইনরে তুমি আবার বিয়া করাও!’

‘রয়, তরে পায়া লই, ভাতারখাকি তর লাগল পায়া লই, যেমুন পোয়াতি হইছে, বাইর করুমনে চাউল চিবানি-‘

যোগমায়া স’রে যেতেই ভৈরব বলে, ‘পিসিরে না করেন তো, কিয়ের এ্যামুন আউখাউ’

হৈরব বিস্মিত হয়ে বললে, ‘না করুম, ক্যান?’

‘আজুইরা বাজাবাজি, হুদাহুদি প্যাচাল-‘

এগুলিরে বাজাবাজি কয় ?’ হৈরব পায়ের আঙুলের গেঁজে ওঠা নখুনির চারপাশে হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ‘তরা যে কি হইলি, বুঝি না তগো। ঘর হইলো গিয়া তর বাগান, বাগানে পাখিরা তো চিকুর পারবই। ভানু হইলে কি হইতো। ভানুর লগে বনাবস্তি আছিলো তগো? কেউরে থুয়া কতা কইছে হ্যায়? বারিখান মাথায় কইরা রাখছে মাইয়ায়। ঢাকের কাচা লয়া তর মায়ে গেছে পিটাইতে, তো হ্যা-ও কুইদা আইছে ছিট লয়া, কইছে খারাইলা ক্যান মনসাকানি, মারবা না? আমিও ঢাকীর মাইয়া, মাইরা দ্যাখো ক্যামনে তোমার পিঠের মদে এই ব্যাতের ছিট দিয়া দশখুশি বাজাই। হাঃ।

তো মাইয়ায় দশখুশিরোই বোল তুলছে মুহে, আর তর মায়ে অক্করে মাত্রা ভাগ কইরা কইরা ঝাঁঝিকাঁসির বারি ফালাইছে, শ্যাষম্যাষ পাও বিছায়া কানবার বইছে’ হৈরব হাহা ক’রে হাসতে থাকে; তার হাসির গায়ে ঝলমল করে পালপার্বণ, ঝাড়লণ্ঠন আর মৃদঙ্গের শব্দ, সন্ধ্যারতি।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

‘আমাদের কণ্ঠ কেউ বন্ধ করতে পারবে না’—মিস ইউনিভার্স মেক্সিকোর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-২)

১২:০০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

হৈরব ও ভৈরব

হৈরব হাসে। যোগমায়ার এক চিলতে ছায়ার ছেঁডাপাটিতে একটু এগিয়ে ব’সে বলে, ‘ফোটের বিষে আমার বলে দিশা আছিলো না, যেমুন ভূঁইয়ায় ভূঁইসা থুইছে, অহনে তুই কছকি আরাম, কিনা আরামখান! ক্যান, তুই সেবা করছ নাই, পল্লব দিছ নাই?’

‘দিছিলামনিকি?’ যোগমায়া ভিজে চুলের ডগায় ঝটাৎ ক’রে হাতের একটা কোপ মেরে বললে, ‘তোমার বইনে না দিছিলো?’

‘বইনে দিবো ক্যান-‘ হৈরব বললে, ‘তুই তো আছিলিই!’

যোগমায়া বললে, ‘তোমার বইনমাগীরে ডাইকা না কইরা দেও, হে জানি চাউল না চিবায়, ডাঁসা দিয়া নকশা ছেঁইচা দিমু কয়া রাখলাম, অলক্ষীর ঝাড়, ভাতারখাকি-‘

হৈরব গলা চড়িয়ে বললে, ‘ভালো হইতাছে না দয়া, ভালো হইতাছে না। তর লাইগা আমারে কতোগুলিন কথা শুনাইলো তর বৌঠানে-‘

আড়াল থেকে দয়াও গলা চড়ায়।

‘বৌঠাইনের মনে শান্তি নাই, ঠাইনরে তুমি আবার বিয়া করাও!’

‘রয়, তরে পায়া লই, ভাতারখাকি তর লাগল পায়া লই, যেমুন পোয়াতি হইছে, বাইর করুমনে চাউল চিবানি-‘

যোগমায়া স’রে যেতেই ভৈরব বলে, ‘পিসিরে না করেন তো, কিয়ের এ্যামুন আউখাউ’

হৈরব বিস্মিত হয়ে বললে, ‘না করুম, ক্যান?’

‘আজুইরা বাজাবাজি, হুদাহুদি প্যাচাল-‘

এগুলিরে বাজাবাজি কয় ?’ হৈরব পায়ের আঙুলের গেঁজে ওঠা নখুনির চারপাশে হাত বোলাতে বোলাতে বলে, ‘তরা যে কি হইলি, বুঝি না তগো। ঘর হইলো গিয়া তর বাগান, বাগানে পাখিরা তো চিকুর পারবই। ভানু হইলে কি হইতো। ভানুর লগে বনাবস্তি আছিলো তগো? কেউরে থুয়া কতা কইছে হ্যায়? বারিখান মাথায় কইরা রাখছে মাইয়ায়। ঢাকের কাচা লয়া তর মায়ে গেছে পিটাইতে, তো হ্যা-ও কুইদা আইছে ছিট লয়া, কইছে খারাইলা ক্যান মনসাকানি, মারবা না? আমিও ঢাকীর মাইয়া, মাইরা দ্যাখো ক্যামনে তোমার পিঠের মদে এই ব্যাতের ছিট দিয়া দশখুশি বাজাই। হাঃ।

তো মাইয়ায় দশখুশিরোই বোল তুলছে মুহে, আর তর মায়ে অক্করে মাত্রা ভাগ কইরা কইরা ঝাঁঝিকাঁসির বারি ফালাইছে, শ্যাষম্যাষ পাও বিছায়া কানবার বইছে’ হৈরব হাহা ক’রে হাসতে থাকে; তার হাসির গায়ে ঝলমল করে পালপার্বণ, ঝাড়লণ্ঠন আর মৃদঙ্গের শব্দ, সন্ধ্যারতি।