সপ্তম পরিচ্ছেদ
দিন দুই পরে বাচ্চা বেদে একটু ভালো বোধ করতে লাগল। সন্ধেবেলা আমি যখন ওর কাছে গিয়ে বসলুম, দেখলুম একরাশ শুকনো পাতার ওপর শুয়ে তারাভরা কালো আকাশটার দিকে তাকিয়ে ও গুনগুন করে কী একটা সূর ভাঁজছে।
বললুম, ‘বাচ্চা বেদে, আমি তোমার পাশেই একটা আগুনের কুণ্ড জেলে খানিকটা জল গরম করি। তারপর চা খাওয়া যাবে। আমার ফ্লাস্কে খানিকটা দুধ আছে। চা করি, কেমন?’
দৌড়ে গিয়ে খানিকটা জল সংগ্রহ করলুম। তারপর আগুনের দু-পাশে মাটিতে দুটো বেয়োনেট পু’তে তাদের ওপর বন্দুকের নল সাফ করার ডান্ডাটা এমনভাবে আটকে দিলুম যাতে ডান্ডাটা আগুনের কুন্ডের ওপর আড়াআড়িভাবে
কূলে থাকে আর সেই ডাণ্ডার ওপর জল ভরে বসিয়ে দিলুম আমার কানাউ’চু খাওয়ার খালিটা। এরপর জখম-হওয়া ছেলেটার কাছে গিয়ে বসলুম।
জিজ্ঞেস করলুম, ‘বাচ্চা বেদে, কী গান গাইছ তুমি?’
জবাব দিতে একটু দেরি করল ও। তারপর বলল:
‘খুব পুরনো এটা গান করচি গো। গানটা বুলচে, বেদেদের লিজের কোনো দেশ নাই, যে-দেশে তারা ভালো ব্যাভার পায় সেটি তাদের দেশ। গানটা আরও বুলচে: ‘বল্ তো বেদে, কোন দেশে তোরা ভালো ব্যাভার পেয়েছিস?’ তা গানটাই জবাব দিচ্ছে: ‘কত দেশের ইধার-সিধার ছুঁড়ে বেড়ালম। হাঙ্গারিয়ান দেখলম, বুলগেরিয়ান দেখলম, তুর্ক’দের দেশেও গেলম, কিন্তুক এমন দেশটি দেখলম নাই যে-দেশের মানুষ আমার জাতভাইদের সাথে ভালো ব্যাভার করে’।’
আর্কাদি গাইদার 



















