০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ভারত ইন্দাসের পানি বন্ধ করার পরে বিকল্প খুঁজছে পাকিস্তান

  • Sarakhon Report
  • ১২:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
  • 59

( ডন এর সম্পাদকীয়)  

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত মাসে ভারতের পক্ষ থেকে ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা পরবর্তী সম্ভাব্য পানি-সংকট মোকাবেলায় দেশের পানিসংরক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে প্রদেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এটি একটি সদর্থক পদক্ষেপ এবং অতীতে যেসব পানিসংরক্ষণ প্রকল্প ঘিরে প্রাদেশিক পর্যায়ে বিরোধ তৈরি হয়েছেভবিষ্যতে সেগুলো এড়াতে সহায়ক হতে পারে। মঙ্গলবার পেশোয়ারের কোর সদর দপ্তরে এক জিরগায় বক্তৃতাকালে তিনি দায়মের-ভাশা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ দ্রুততর করার নির্দেশও দিয়েছেন।

তবে নতুন পানিসংরক্ষণ প্রকল্পগুলোই কি ইন্দাস জলচুক্তির অধীনে পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত নদীগুলোর প্রবাহ রুদ্ধ করার ভারতের হুমকিঅথবা জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবে নদীতে দেখা দেওয়া পানির ঘাটতির মোক্ষম সমাধানএ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। ভারতের এ ধরনের বেআইনি উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা হলে লড়াইটি চুক্তির আওতাধীন একাধিক বিরোধ-নিষ্পত্তি ফোরামেই চালিয়ে যেতে হবে এবং সেখানেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবেএর মাশুল শেষ পর্যন্ত দিল্লিকেই দিতে হবে।

অনেক বিশেষজ্ঞের মতেনতুন বাঁধ নির্মাণ ক্রমবর্ধমান পানি-সংকট নিরসন করবে নাবিশেষত শুষ্ক ও তুষারহীন দিনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যখন বিদ্যমান বাঁধগুলোই পূর্ণ মাত্রায় পানিতে ভরাট করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বরংতাঁদের ভাষ্যবাঁধ আরও নদীর প্রবাহ কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বাড়াতে পারে। কেউ কেউ আবার যুক্তি দেনএসব প্রকল্প এগিয়ে নিতে প্রভাবশালী লবি সক্রিয় থাকেযাদের আর্থিক সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একইভাবেস্বল্প খরচে প্রচুর সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ আহরণ সম্ভব হলেও ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিলিয়ন ডলার ঢালার পরিকল্পনা কঠিন অর্থসংকটের সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ।

পরিকল্পনা কমিশনও সতর্ক করে বলেছেভ্রান্ত নীতিজলবায়ু প্রভাব ও উচ্চ ইনপুট খরচের কারণে শিল্প ও খাদ্যশস্যদুই ধরনেরই উৎপাদন পতন উদ্বেগজনক।

সর্বোপরিপাকিস্তানের প্রয়োজন হলো অবিরাম প্রবাহমান নদীযাতে শত শত কিলোমিটারব্যাপী সংলগ্ন ভূগর্ভস্থ জলের স্তর পুনরুজ্জীবিত হয় এবং টেকসইসাশ্রয়ী পানি-সংগ্রহ নিশ্চিত হয়অর্থনৈতিক উন্নতিখাদ্য নিরাপত্তা ও নবায়নযোগ্য শক্তির স্বার্থে। বৃহৎ বাঁধ অথবা ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয়অন্যান্য অপরিহার্য সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে ক্ষতিপূরণ না করেই এই লক্ষ্য অর্জন জরুরি।

সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৫

ভারত ইন্দাসের পানি বন্ধ করার পরে বিকল্প খুঁজছে পাকিস্তান

১২:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

( ডন এর সম্পাদকীয়)  

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত মাসে ভারতের পক্ষ থেকে ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণা পরবর্তী সম্ভাব্য পানি-সংকট মোকাবেলায় দেশের পানিসংরক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে প্রদেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এটি একটি সদর্থক পদক্ষেপ এবং অতীতে যেসব পানিসংরক্ষণ প্রকল্প ঘিরে প্রাদেশিক পর্যায়ে বিরোধ তৈরি হয়েছেভবিষ্যতে সেগুলো এড়াতে সহায়ক হতে পারে। মঙ্গলবার পেশোয়ারের কোর সদর দপ্তরে এক জিরগায় বক্তৃতাকালে তিনি দায়মের-ভাশা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ দ্রুততর করার নির্দেশও দিয়েছেন।

তবে নতুন পানিসংরক্ষণ প্রকল্পগুলোই কি ইন্দাস জলচুক্তির অধীনে পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত নদীগুলোর প্রবাহ রুদ্ধ করার ভারতের হুমকিঅথবা জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবে নদীতে দেখা দেওয়া পানির ঘাটতির মোক্ষম সমাধানএ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। ভারতের এ ধরনের বেআইনি উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা হলে লড়াইটি চুক্তির আওতাধীন একাধিক বিরোধ-নিষ্পত্তি ফোরামেই চালিয়ে যেতে হবে এবং সেখানেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবেএর মাশুল শেষ পর্যন্ত দিল্লিকেই দিতে হবে।

অনেক বিশেষজ্ঞের মতেনতুন বাঁধ নির্মাণ ক্রমবর্ধমান পানি-সংকট নিরসন করবে নাবিশেষত শুষ্ক ও তুষারহীন দিনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যখন বিদ্যমান বাঁধগুলোই পূর্ণ মাত্রায় পানিতে ভরাট করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বরংতাঁদের ভাষ্যবাঁধ আরও নদীর প্রবাহ কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বাড়াতে পারে। কেউ কেউ আবার যুক্তি দেনএসব প্রকল্প এগিয়ে নিতে প্রভাবশালী লবি সক্রিয় থাকেযাদের আর্থিক সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একইভাবেস্বল্প খরচে প্রচুর সৌর ও বায়ু-বিদ্যুৎ আহরণ সম্ভব হলেও ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিলিয়ন ডলার ঢালার পরিকল্পনা কঠিন অর্থসংকটের সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ।

পরিকল্পনা কমিশনও সতর্ক করে বলেছেভ্রান্ত নীতিজলবায়ু প্রভাব ও উচ্চ ইনপুট খরচের কারণে শিল্প ও খাদ্যশস্যদুই ধরনেরই উৎপাদন পতন উদ্বেগজনক।

সর্বোপরিপাকিস্তানের প্রয়োজন হলো অবিরাম প্রবাহমান নদীযাতে শত শত কিলোমিটারব্যাপী সংলগ্ন ভূগর্ভস্থ জলের স্তর পুনরুজ্জীবিত হয় এবং টেকসইসাশ্রয়ী পানি-সংগ্রহ নিশ্চিত হয়অর্থনৈতিক উন্নতিখাদ্য নিরাপত্তা ও নবায়নযোগ্য শক্তির স্বার্থে। বৃহৎ বাঁধ অথবা ব্যয়বহুল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয়অন্যান্য অপরিহার্য সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে ক্ষতিপূরণ না করেই এই লক্ষ্য অর্জন জরুরি।

সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২৫