ঢাকায় দুর্গা মন্দির ভাঙার ঘটনায় ভারতের তীব্র নিন্দা
ঢাকার খিলক্ষেতে একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের ঘটনায় ভারত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জৈসওয়াল এ বিষয়ে বলেছেন, “আমরা জানতে পেরেছি, উগ্রপন্থীরা ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ভাঙতে চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরটিকে নিরাপত্তা না দিয়ে বরং এটিকে অবৈধ জমি ব্যবহারের ঘটনা বলে তুলে ধরে ধ্বংস করতে অনুমতি দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “দেবীর মূর্তি স্থানান্তরের আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমরা দুঃখিত যে এ ধরনের ঘটনা বারবার বাংলাদেশে ঘটছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবন, সম্পত্তি ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।”
এই মন্তব্যের পটভূমিতে রয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের আগস্টে মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ক্ষমতায় আসা এবং দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে শীতলতা নেমে আসা।
গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রস্তুতি
১৯৯৬ সালের গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তি আগামী বছর শেষ হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মুখপাত্র জৈসওয়াল বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশ ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী ভাগ করে নেয়, যার মধ্যে গঙ্গাও রয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশন (Joint Rivers Commission) রয়েছে। আমরা রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে আমাদের অবস্থান নির্ধারণ করি। ভারত এমন একটি পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত, যা পারস্পরিকভাবে লাভজনক হতে পারে।”
ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য নিয়ে অসন্তোষ
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের উপর ভারতের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, “এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই ‘ন্যায্যতা, সমতা এবং পারস্পরিক প্রতিদান’-এর ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান না হওয়ায়। ভারত বহুবার গঠনমূলক আলোচনায় এই বিষয়গুলো তুলেছে, এমনকি বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও।”
সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক এবং অন্যান্য ভোক্তা পণ্যের রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে সীমিত করে দেয়। এর আগে, ভারত পাঁচ বছর ধরে তৃতীয় দেশগামী বাংলাদেশি কার্গো তাদের বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করতে দিয়েছিল, যা এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করেছে। এ নিয়ে ভারতের মন্তব্য, “আমরা আমাদের অঞ্চলের এমন সব কূটনৈতিক ঘটনার দিকে সতর্ক নজর রাখি, যা আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তার উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা হয়।”