অচল সিকি
‘তবু যদি তোমার মতো আবলুস কাঠ হতাম।’ খিলখিল করে হাসতে হাসতে জেবুন্নেসা ওর গায়ের ওপর ভেঙে পড়লো, ‘তোমাকে দেখে অনেক দিন আগের একটা কথা মনে পড়ছে, আমার দাদুর হাতের থেলো হুঁকো-‘
‘সন্দেহ কি! দ্যাখো না বিদঘুটে কালো বলেই রোজ রাত্রে কেমন সহজে অন্ধকারে নিখোঁজ হয়ে যেতে পারি।’
‘আচ্ছা, তোমার এই নোংরা কথা বলার স্বভাব কোনদিনই কি যাবে না ? শুনতে শুনতে যে কান পচে গেল!’
‘কানপচা রোগটা বংশের ধাত!’
‘থাক বাপু, খুব হয়েছে, আমাকে আর বকিয়ো না। বকতে বকতে আমার পেটে ব্যথা ধরে গিয়েছে!’
‘তা তো ধরবেই। তোমাদের ওই রোগটাই তো আমাদের খেলো।’
‘আচ্ছা তুমি কি বলোতো? ভালো কথা কি তোমার ঠোঁটে আসে না। সবকিছুরই একটা সীমা থাকা উচিত, বেশি কোনো কিছুই ভালো নয়।’
‘সেইজন্যেই তো বলি লিপস্টিকের খরচটা একটু কমাও। ওই সব ঘষে ঘষে দিন দিন ঠোঁটের যা ছিরি হচ্ছে তোমার। আর গা-গতর যতো বেশি বাক্সবন্দি করে রাখতে পারো ততোই ভালো, তোমার গায়ের রঙ দিন দিন কি রকম কালো হয়ে যাচ্ছে খেয়াল করেছ তা?’
‘তা নয় গো, আসলে কালো রঙটা খানিকটা ছোঁয়াচে!’
‘একথা তোমার ঐ আশা-ভরসাহীন বান্ধবীদের কাছে খবরদার বোলো না, হিংসে করবে।’
‘বয়ে গেছে হিংসে করতে। আমাদের আখতারীর এই সামনের এপ্রিলে বিয়ে। ভদ্রলোক ফেঞ্চুগঞ্জ ফার্টিলাইজারে হাজার বারোশো টাকার চাকরি করে!’
‘রক্ষে করো, লাখ টাকা দিলেও এই শর্মা ফেঞ্চুগঞ্জে গিয়ে পচে মরবে না!’